দোয়ারাবাজারে লাম্পি স্কিন রোগে মারা যাচ্ছে গরু, কোরবানি নিয়ে শংষ্কায় খামারীরা

সোহেল মিয়া,দোয়ারাবাজার(সুনামগঞ্জ)
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জুন ২০২৩, ১১:১৪ পূর্বাহ্ণসুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে এই রোগে আক্রান্ত প্রায় শতাধিক গরু ইতিমধ্যে মারা গেছে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে বলা হচ্ছে, আক্রান্ত গরুর চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন নেই। তাই আক্রান্ত হওয়ার আগেই নিজ উদ্যোগে বেসরকারি কোম্পানির ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নে গিয়ে জানা গেছে পালকাপন গ্রামের কৃষক ফজলু মিয়া’র একটি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তার পরের দিন পাশবর্তী পাইকপাড়া গ্রামের মহিউদ্দিন ও মালেক মিয়া দু’জনের দুটি ষাঁড় গরু মারা যায়।
এর আগে ২০ জুন বাংলাবাজার ইউনিয়নের কলাউড়া গ্রামের কাজী ইউসুফ’র একটি গাভী গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাংলাবাজার ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
নরসিংপুর ইউনয়নে গিয়ে জানা যায়,ইউনিয়নের চাইরগাঁও গ্রামের জামাল হোসেন’র একটি গাভী মারা গেছে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে। সুনাইত্যা গ্রামের মশ্রব আলী’র ১লক্ষ ১০ হাজার টাকা দামের একটি ষাঁড় গরু,চাইরগাঁও গ্রামের ফকির মিয়া’র ৫০ টাকা দামের একটি গাভী,দ্বীনেরটুক গ্রামের আশ্রাফ আলী’র একটা বখনা গরুসহ নরসিংপুর ইউনিয়নের প্রায় ১’শতাধিক গরু লাম্পি স্কিন রোগে মারা যায়।
ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রায় দুই মাস আগে গরুর শরীরে এই লাম্পি স্কিন রোগের দেখা মেলে। এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে গুটি বের হয়ে শরীর ফুলে যায়, পচন ধরে ও রক্ত বের হয়। গরুর শরীরে জ্বর থাকে। গরু খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না নিলে গরু মারা যায়। বর্তমানে রোগটি উপজেলার প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
নরসিংপুর ইউনিয়নের বিরেন্দ্রনগর গ্রামের খামারী কামাল মিয়া জানান, খামারের চারটি গরু আক্রান্ত হলে একটি মারা যায় ও চিকিৎসায় তিনটি সুস্থ হয়েছে, বাকি গরুর চিকিৎসা চলছে। এ ছাড়া ইউপি সদস্য ইশ্রাঈল আলী’র একটি, মুনসুর আলীর একটি ও কৃষাণী আম্বিয়া খাতুনের একটি গরুর চিকিৎসা চলছে। তাঁরা বলেন, এই লাম্পি স্কিন রোগ যাতে আর না ছড়ায়, সে জন্য দ্রুত আক্রান্ত এলাকার গবাদিপশুকে সরকারিভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা দরকার।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আঃ জহিরুল ইসলাম সিলেটের কন্ঠকে বলেন, লাম্পি স্কিন রোগটি মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। সরকারিভাবে এই রোগের পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন নেই। যতটুকু আছে আমার তা দিয়ে সহযোগিতা করছি,পরামর্শ দিচ্ছি। এই রোগে আক্রান্ত গবাদিপশুকে আলাদা করে মশারির ভেতরে রাখতে হবে। তা ছাড়া আক্রান্ত হওয়ার আগেই নিজ উদ্যোগে বেসরকারি কোম্পানির ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে এই রোগ প্রতিহত করা সম্ভব।
সারাদেশসংবাদ/হান্নান