দোয়ারাবাজারে চেলা নদী ভাঙনে হুমকিতে সড়ক ও শিক্ষা প্রতিষ্টান
সোহেল মিয়া,দোয়ারাবাজার(সুনামগঞ্জ)
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ মে ২০২৩, ১:১৫ পূর্বাহ্ণপ্রতিনিয়তই নদীর তীর ভাঙছে। যে কারণেই অনেকেই বসতভিটা হারিয়েছেন। ভাঙন কবলিত এলাকার কেউ খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছেন। আবার কেউবা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করছেন। নদীর তীরবর্তী যারা বর্তমানে বসবাস করছেন তাদের রাত কাটে আতংকে।
বলছিলাম- সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার চেলা নদী ভাঙনের কথা। নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় ওইসব এলাকার সড়ক ব্যবহারকারী ২০টি গ্রামের অন্তত লাখো মানুষ যাতায়াতে গভীর উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় রয়েছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চেলানদীর তীরবর্তী প্রায় বসবাসরত পাথর শ্রমিক লোকজনের বাড়ি-ঘর ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে নদী ভাঙনে ঘর হারিয়ে এখন নিম্ম আয়ের পরিবার গুলো খোলা আকাশের নীচে ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
নদী তীরবর্তী ওই এলাকায় বসবাস করেন বসতভিটা হারা দিনমজুর শাহজাহান মিয়া। তিনি বলেন, আমি নিম্ম আয়ের একজন দিনমজুর মানুষ। আমার ঘর-বাড়ী সবই ছিল; কিন্তু রাক্ষুসে এই নদী বসতভিটা নিয়ে গেছে। আমার মতো অনেকেই নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। নদী ভাঙন রক্ষায় কোন উদ্যোগ নেই। যে কারণে ভাঙনের পরিধি দিন দিন বাড়ছে।
স্থানীয় একাধিক লোকজনের সাথে কথা কলে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ -দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের চাইরগাঁও বাজার সড়কের মুখ হতে শারপিন নগর পর্যন্ত আধা পাকা সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই অসংখ্য লোকজন চলাচল করেন। এই অন্য সড়কের সাথে যুক্ত হয়ে উপজেলা সদর, জেলা ও বিভাগের সাথে সহজ সড়ক যোগাযেগ সৃষ্টি করেছে। চাইরগাঁও বাজার,নাছিমপুর বাজার ও সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চেলা নদী। শুল্ক সৌসুমে নদীটি কিছুটা শান্ত থাকলেও বর্ষায় এটি ভয়াবহ রুপ ধারন করায় নদী ভাঙনের মুখে পড়ে বসতভিটা, ফসলী জমি, গাছপালা নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে ভয়াবহ এই নদী ভাঙনের কারণে গত কয়েক বছরে শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ী ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এরই মধ্যে চাইরগাও -রহিমের পাড়া ও সারপিন নগর সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার পাকা সড়ক হারিয়ে যায়। বর্তমানে আরও এক কিলোমিটার সড়ক হুমকির মুখে রয়েছে। এলাকাবাসী নদী ভাঙন রক্ষায় সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে বসতভিটা হারা পাথর শ্রমিক পরিবারগুলো কয়েকজন ধর্নাঢ্য ব্যক্তির সহযোগিতায় গ্রামের ঝুপড়িঘর বেধে বসবাস করে আসছে।সরকারী সাহায্য বঞ্চিত পাথর শ্রমিক ওই পরিবার গুললোর বসবাসের জন্য সামান্য ভুমি ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়নি কেউ। এসব অসহায় পরিবারের লোকজনদের রক্ষায় সরকারী সহায়তার মাধ্যমে পূর্ণবাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। বর্তমানে নদী ভাঙনে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,দু’টি বাজারও আশপাশের কয়েকটি গ্রাম মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মতক্কিন আলী মাষ্টার বলেন, নদী ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে চাইরগাঁও বাজার ও একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্টান। মাদ্রাসা ও বাজারের পাশের সড়কটি বিপদজনক অবস্থায়, এরপরও মানুষজন চলাচল করছে।
নরসিংপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদ বলেন, নদী ভাঙনে ভিটামাটি হারিয়ে অনেকেই এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন।কয়েকবার নদীর তীরে এলাকাবাসীর উদ্যোগে স্থানীয় লোকজন সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি নদী তীরবর্তী এলাকার বসতবাড়ী, গ্রামীন সড়ক, শিক্ষা-প্রতিষ্টান, বাজার হাট রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
সুনামগঞ্জের সাব-ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার শমসের আলী জানান, নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত কাজ করছে সরকার।আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্যের সা চেলানদী ভাঙ্গন নিয়ে আলোচনা করব।
সারাদেশসংবাদ/হান্নান