ছাত্রলীগের মিছিলের পর সিলেটের সাবেক এমপি- মেয়রসহ আ.লীগের তিন নেতার বাসায় হামলা- ভাঙচুর

সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১:২৬ অপরাহ্ণকেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মৌলভীবাজার-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও এডভোকেট শাহজাহান চৌধুরীর বাসায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নগরে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ব্যানারে ঝটিকা মিছিলের পর বিকালে এসব হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন। তাদের জিম্মি করে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।
পাশাপাশি শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়’ এবং সুবিদবাজার কলাপাড়া এলাকায় অবস্থিত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট দায়রা জজ আদালতের এপিপি এডভোকেট শাহজাহান চৌধুরীর বাসায় হামলা চালানো হয়। সন্ধ্যা ৭টায় শফিউল আলমের বাসায় হামলার সময় তার মা ও বোন বাসায় ছিলেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসার প্রায় সব কক্ষের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবের কাচ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। অনেক আসবাবপত্র ওলটপালট অবস্থায় পড়ে আছে। আলমারি, চেয়ার-টেবিল, ফ্রিজ, এসিও, সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে নগরের ধোপাদিঘীরপাড় এলাকায় ১৫-২০ জনের একটি দল ছাত্রলীগের ব্যানারে মিছিল বের করেন। ব্যানারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের ছবি ছিল এবং তার নামে স্লোগান দিতেও শোনা যায়। পরে এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ভিডিওটি আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজেও আপলোড করা হয়েছে। ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের খোঁজে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিতে থাকেন। বিকাল ও সন্ধ্যায় সাবেক এমপি, মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
তবে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, ‘আমি শ্রীমঙ্গল ছিলাম। একটু আগে ফিরেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। ছাত্রলীগ এমন ঘটনা ঘটিয়ে ছাত্রদলের ওপর দোষ চাপিয়েছে, এমন নজিরও আছে। তবে বিএনপি কোনো হিংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। যদি এমন হামলা ভাঙচুর হয়, এটা সমর্থনযোগ্য নয়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ওই তিন নেতার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, আনোয়ারুজ্জামান ৫ আগস্টের পরপর লন্ডন চলে যান। অন্যদিকে শফিউল আলম চৌধুরী ভারতের কলকাতায় রয়েছেন। এ ছাড়া শাহজাহান চৌধুরীও লন্ডনে রয়েছেন।
যোগাযোগ করলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। কে বা কারা এটা করেছে, তা জানার চেষ্টা করছি।’
সিলেটসংবাদ/হা