রাতের ঢাকায় বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যু
সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ মে ২০২৪, ৮:৩১ পূর্বাহ্ণঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রাজধানীতে চলমান বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পৃথক ঘটনায় নারীসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন খিলগাঁও রিয়াজবাগ এলাকার রিকশার গ্যারেজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া রাকিব (২৫), খিলগাঁও সিপাহীবাগে রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া মরিয়ম বেগম (৪৫) ও যাত্রাবাড়ীতে টিনের প্রাচীরে স্পর্শ করে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া লিজা আক্তার (১৬)।
সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে এই পৃথক তিনটি ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রাকিবকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার সহকর্মী খোকন মিয়া জানান, তারা খিলগাঁও রিয়াজবাগ ৬ নম্বর গলিতে একটি রিকশার গ্যারেজে থাকেন। ওই এলাকায় তারা রিকশা চালান। রাতে বৃষ্টির কারণে তাদের রিকশার গ্যারেজটিতে পানি জমে ছিল। সেই পানির মধ্যে রিকশা রেখে এর ব্যাটারি চার্জ করছিল রাকিব। তখন সেই চার্জার খুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। রাকিবের বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায়।
এদিকে, নিহত মরিয়মকে হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রতিবেশী মো. নাহিদ নামে এক যুবক জানান, রাত ৯টার দিকে খিলগাঁও সিপাহীবাগ আইসক্রিম গলির মক্কা টাওয়ারের পাশে একটি রাস্তায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন মরিয়ম নামে ওই নারী। রাস্তাটিতে বৃষ্টির কারণে হাঁটু সমান পানি জমেছিল। তাদের ধারণা, সেখানে বিদ্যুতের কোন তার ছিড়ে পড়েছিল বা বৈদ্যুতিক খুঁটি বিদ্যুতায়িত হয়েছিল। আর সেখান থেকেই ওই নারী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
তিনি জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওই নারীকে পানিতে পড়ে থাকতে দেখে তিনি এবং স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান। ওই একই স্থানে কিছুদিন পরপরই এমন দুর্ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেন তিনি।
নিহত মরিয়মের ছেলের বন্ধু তুহিন জানান, মরিয়মের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলায়। পরিবার নিয়ে থাকেন খিলগাঁও মেরাদিয়া কবরস্থান গলিতে। স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন তিনি। রাতে গার্মেন্টস থেকে বাসায় ফিরেন। এরপর ছেলে ইয়ামিনকে খুঁজতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। এরপরই রাস্তায় এই দুর্ঘটনার শিকার হন।
অপরদিকে, মৃত লিজার পরিবারের বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, লিজার বাবার নাম সিরাজ খান। পরিবারটি থাকে যাত্রাবাড়ীর দরবার শরীফ এলাকায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসার পাশে টিনের প্রাচীর কোনো কারণে স্পর্শ করলে সেখান থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। দেখতে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসে। তবে চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
৩টি মরদেহই ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত বছর ২১ সেপ্টেম্বর মিরপুরের শিয়ালবাড়ির পাশে হাজী রোড এলাকার কর্মাস কলেজ সংলগ্ন সুপার হোস্টেলের সামনে বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
জাতীয়/হা