দুগ্ধস্নানে পবিত্র হয়ে ‘নোংরা রাজনীতিকে’ বিদায়
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ এপ্রিল ২০১৬, ১০:১৮ পূর্বাহ্ণদুধ দিয়ে গোসল করে পবিত্র হয়ে ‘নোংরা রাজনীতি’ থেকে বিদায় নিলেন দুইবারের শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান। এতো সুনাম থাকার পরও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন তিনি। কিন্তু চরম অনিয়ম আর জালিয়াতির মুখে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে হেরে রাগে দুঃখে রাজনীতিই ছেড়ে দিলেন তিনি।
সারা দেশে ভোটের চিত্র প্রায় একই রকম হলেও পরাজিত প্রার্থীদের তেমন একটা প্রতিক্রিয়া চোখে পড়ছে না। কিন্তু দুধ দিয়ে গোলস করে রাজনীতিকে বিদায় জানিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের এই চেয়ারম্যান প্রার্থী। নাম তার মো. রহিজ উদ্দীন আকন্দ।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী নরুল ইসলামের কাছে মাত্র ১৪৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে আর নির্বাচন না করারও ঘোষণা দিয়েছেন সদ্য বহিষ্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এই সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছর ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। দায়িত্ব পালনকালে দুই দুইবার উপজেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। গত নির্বাচনে জনপ্রিয়তা থাকার পরও আমাকে দলীয় মনোনয়ন না দিলে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চাই কিন্তু এবারও আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে ঠিকাদার নুরুল ইসলামকে দেয়া হয়।’
এই চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, ‘ইউনিয়নবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের চাপে এবারের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীকে অংশ নিতে হয়। আমি পাঁচ হাজার ৩৯ ভোট পেলেও দেখানো হয়েছে চার হাজার ৮৯০ ভোট। ব্যবধানটা অনেক বেশি হলে মেনে নিতাম আমি অযোগ্য। কিন্তু সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজয় মেনে নিতে পারছি না। আমাকে পরাজিত করানো হয়েছে। তাই আমি ক্ষোভে দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি থেকে চিরবিদায় ও ভবিষ্যতে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছি।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের জন্য অনেক শ্রম দিয়েছি। তারপরও দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। কিন্তু তাতেও আমার কোনো দুঃখ নেই। জনগণ আমাকে ভোট দিয়েছে। যে দলের জন্য এতো শ্রম দিয়েছি সেই দল থেকে কি পেলাম?’
তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর রাজনীতি করবো না। তাই দুধ দিয়ে গোসল করে পবিত্র হলাম। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বো। আর যতটুকু পারি জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবো।’
এদিকে, ভূঞাপুর উপজেলার সর্বত্রই রহিজ উদ্দীনের দুধ দিয়ে গোসল করে পবিত্র হওয়ার ঘটনা নিয়ে চলছে আলোচনা। উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, এটি সাময়িক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তবে রহিজ উদ্দীনের অনুসারীরা বলছেন, তিনি এক কথার মানুষ। আর সাধারণ মানুষ মনে করছেন, রাজনীতির শেষ বলে কিছু নেই।
বাংলামেইল
. . . . . . . . .