ছাত্রলীগের সংঘর্ষকালে ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রীদের মহতি কাজ
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ নভেম্বর ২০১৫, ১০:০৯ অপরাহ্ণসোমবার বেলাল ১১টা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষে আতঙ্কে ছুটছে শিক্ষার্থীরা। তারা কেউ ভর্তিচ্ছু কেউ কেউ আবার অভিভাবক। চোখে-মুখে ছিল আতঙ্কের চাপ। চেয়েছিলেন তারা নিরাপদ আশ্রয়, কারণ তাদের কানে আসছিল গুলির শব্দ আর চোখের সামনে অস্ত্রের ঝনঝনানি। তাদের নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পুলিশের। কিন্তু পুলিশ ব্যস্ত ছিল সংঘর্ষ থামাতেই। এখন তাদের নিরাপত্তা দেবে কে?
তখন নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পাশে এসে দাঁড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ থেকে ১২ জনের একদল ছাত্রী। সবাইকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে যায় তারা। আর সে কারণেই তেমন দুর্ঘটনা ঘটেনি সংঘর্ষকালে।
তাদের এমন কর্মকাণ্ডে প্রশংসা করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। যেখানে সবাই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে যে যার মতো ছুটছে সেখানে এমন একটি কাজে সবাই তো খুশি হবেই। তাছাড়া মেয়েদের এমন সাহসী উদ্যোগ তো এখন প্রায় বিরল।
কুমিল্লা থেকে আসা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান নীলার বাবা মো. কামাল উদ্দিন বাংলামেইলকে বলেন, ‘সকালে ‘জি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলে দেখি সবাই এদিক-সেদিক ছুটছে। খবর পেলাম সংঘর্ষ হচ্ছে, তাই সবাই ছুটছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে এলে দেখি কতগুলো শিক্ষার্থী কিরিচ নিয়ে ছুটছে, তা দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এর মধ্যে কয়েকজন মেয়ে এসে আমাদেরকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেলো।’
তিনি বলেন, ‘তারা যদি এগিয়ে না আসতো আমরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যেতাম। আর তখন কি হতো তা আল্লাহই জানেন।’
এমন মহতি কাজ যারা করেছেন তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাবরিনা চৌধুরী, মনোবিজ্ঞান বিভাগের সুমনা, লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাসনোভা বিনতেসহ আরো কয়েকজন।
লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বিভাগের শিক্ষার্থী সাবরিনা চৌধুরী বাংলামেইলকে বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমাদেরকে কেউ কেউ ফোন করে বাড়িতে চলে যেতে বলছিল কিন্তু আমরা যাইনি। ভর্তিচ্ছুরা আতঙ্কে দিগবেদিগ ছুটছে দেখে আমি কয়েকজনকে ফোন করে আসতে বলি। তারা এলে সবাই মিলে মোটামুটি যাদেরকে পেরেছি তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছি।’
প্রসঙ্গত, সোমবার বেলা ১১টার দিকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভ্যর্থনা জানাতে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিসহ ছয়জন আহত হয়।
. . . . . . . . .