রোববার থেকে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা, চ্যালেঞ্জ প্রশ্নফাঁস
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০১৫, ৯:২২ অপরাহ্ণরোববার থেকে শুরু হচ্ছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা। এ বছরের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৩৩ জন। এর মধ্যে জেএসসি পরীক্ষায় ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ৪৪৭ ও জেডিসিতে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪৮৬ জন অংশ নেবে। আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এ পরীক্ষা।
২০১৪ সালে এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২০ লাখ ৯০ হাজার ৬৯২ পরীক্ষার্থী। সেই হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে দুই লাখ ৩৫ হাজার ২৪১ জন। এবার দুই হাজার ৬২৭ কেন্দ্রে ২৮ হাজার ৬৩২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেবে। গত বছর এক হাজার ৮০৩ কেন্দ্রে ১৮ হাজার ৮১৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষা দিয়েছিল। বিদেশের আটটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৮৫।
এবারের পরীক্ষায় জীবন ও কর্মমুখী শিক্ষা নামে নতুন বিষয়ে পরীক্ষা হচ্ছে। এই পরীক্ষায় এমসিকিউ প্রশ্ন উত্তরপত্রের মধ্যেই থাকবে। তাতে কেবল টিকচিহ্ন দিতে হবে। শ্রবণপ্রতিবন্ধীসহ অন্য প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা এবারও অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে। এছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পলসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই তারা শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে।
প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রালপলসি) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক, অভিভাবক বা সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকছে। এ পরীক্ষায় বহু নির্বাচনী ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে দু’টি বিভাগ থাকলেও দু’টি অংশ মিলে ৩৩ পেলেই পাস বলে গণ্য হবে, অর্থাৎ এসএসসির মতো দু’টি অংশে আলাদা আলাদা পাসের প্রয়োজন থাকছে। এছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণী রয়েছে এমন ৫০০ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবার জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
চ্যালেঞ্জের নাম- প্রশ্নফাঁস
অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষার মতো রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাতেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বড় চ্যালেঞ্জ। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গত বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রশ্নফাঁস রোধে ইতোমধ্যে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারসহ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু হয়েছে। পরীক্ষার সময়ও এটা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া পরীক্ষার হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ছাড়া বাকিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রশ্নফাঁস করা আর তার গুজব ছড়ানো সমান অপরাধ। তাই যারা গুজব ছড়াবে তাদেরও সমান শাস্তি দেয়া হবে। সবাইকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। প্রশ্নফাঁসের আইন আরও কড়াকড়িভাবে প্রয়োগের চেষ্টা করা হবে। মোবাইল কোর্টকে ব্যবহার করা যায় কি না দেখবো। কেন না, মোবাইল কোর্ট তাৎক্ষণিক দুই বছরের জেল দিতে পারে।’
শিক্ষকরা পরীক্ষার হল থেকে এমসিকিউ প্রশ্নফাঁস করেন, এ বিষয়ে উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা খুবই অন্যায়। এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছি। ভিজিলেন্স টিমকে বলে দিয়েছি, এ ধরনের কার্যকলাপে জড়িতদের ধরা হবে।’ তিনি পরীক্ষা নিয়ে দুর্নীতি বন্ধে ভবিষ্যতে পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতি সংস্কারের উদ্যোগের কথা জানান।
জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার রুটিন
জেএসসি
১ নভেম্বর বাংলা প্রথমপত্র, ২ নভেম্বর বাংলা দ্বিতীয়পত্র, ৩ নভেম্বর ইংরেজি প্রথমপত্র, ৪ নভেম্বর ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র, ৫ নভেম্বর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ৮ নভেম্বর গণিত/সাধারণ গণিত বিষয়ের পরীক্ষা হবে। ৯ নভেম্বর হবে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, বৌদ্ধধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, খ্রিষ্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা। ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ১২ নভেম্বর শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, ১৫ নভেম্বর বিজ্ঞান, ১৬ নভেম্বর কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। আর ১৭ নভেম্বর কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ বিজ্ঞান, আরবি, সংষ্কৃত, পালি এবং ১৮ নভেম্বর হবে চারু ও কারুকলা বিষয়ের পরীক্ষা।
জেডিসি
মাদরাসা শিক্ষার্থীদের জেডিসিতে ১ নভেম্বর কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ, ২ নভেম্বর আকাইদ ও ফিকহ, ৩ নভেম্বর বাংলা প্রথমপত্র, ৪ নভেম্বর বাংলা দ্বিতীয়পত্র, ৫ নভেম্বর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা হবে। ৮ নভেম্বর ইংরেজি প্রথমপত্র, ৯ নভেম্বর ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র, ১১ নভেম্বর আরবি প্রথমপত্র, ১২ নভেম্বর আরবি দ্বিতীয়পত্র, ১৪ নভেম্বর গণিত, ১৫ নভেম্বর কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। ১৬ নভেম্বর সামাজিক বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ১৭ নভেম্বর সাধারণ বিজ্ঞান (শুধু অনিয়মিত), বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি (শুধু অনিয়মিত) এবং ১৮ নভেম্বর কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য অর্থনীতি (শুধু অনিয়মিত) এবং গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
. . . . . . . . .