বানিয়াচঙ্গে জোড়া লাগানো শিশুর চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে মা-বাবা
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ অক্টোবর ২০১৬, ১১:২৯ অপরাহ্ণহবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচঙ্গ উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. জলিল মিয়া।
গত ১১ অক্টোবর তার স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগমের প্রসবব্যথা শুরু হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হবিগঞ্জ শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুরে তার গর্ভে বুক জোড়া লাগানো অবস্থায় দুই শিশুর জন্ম হয়। দুটি সন্তানের মাথা দুটি, হাত ও পা ৪টি। কিন্তু পেট ও বুক জোড়া লাগানো।
এমন অবস্থা দেখে জমজ সন্তানের জন্মের আনন্দের চেয়ে তাদের আলাদা করার চিন্তাই বড় হয়ে দাঁড়ায় মা-বাবাসহ স্বজনদের কাছে। কিন্তু দারিদ্র্যতার কারণে চিকিৎসা করাতে পারছেন না তারা। অর্থাভাবে বিনা-চিকিৎসায়ই বেড়ে উঠছে টিয়া-ময়না। এ অবস্থায় সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন স্বজনরা। বর্তমানে এ শিশু দু’টি নিউ লাইফ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
জমজ শিশুর পিতা আব্দুল জলিল জানান- জন্ম নেয়ার পরপরই নবজাতক দু’টিকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. কায়সার রহমানকে দেখিয়েছেন। তিনি শিশুদের ঢাকা পিজি হাসপাতালে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু উন্নত চিকিৎসা করতে গেলে যে টাকা প্রয়োজন তা আমার পক্ষে জোগার করা সম্ভব নয়। আমি আমার সন্তানকে বাঁচাতে চাই। এ জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
জমজ শিশুদের মা জ্যোৎস্না বেগম জানান- শত কষ্টের মধ্যে সন্তান জন্মের পর যে আনন্দ পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছি তাদের দুর্দশা দেখে। তিনি সন্তানদের বাঁচানোর জন্য সমাজের সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
সূত্র জানায়- নিউ লাইফ কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও পেডিয়াট্রিক সার্জন ডা. এম.এ মুমিন রাসেল শিশুদের দেখে গেছেন।
নিউ লাইফ কেয়ার হাসপাতাল চেয়ারম্যান এহতেশামুল হক শামীম জানান- তারা যতটুকু পারছেন সাধ্যমতো করছেন। কিন্তু শিশুদের আলাদা করতে প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা।
ডা. নূসরাত আরা জানান- গর্ভে জাইগোটের বিভাজনের সময়ের উপর নির্ভর করে জোড়া লাগানো জমজ শিশুর জন্ম হয়ে থাকে। তবে দ্রুত উন্নত চিকিৎসা পেলে শিশুদের আলাদা করা সম্ভব।
প্যাডিয়াট্রিক সার্জারি ডা. এম.এ মুমিন রাসেল জানান- উন্নত পরীক্ষা করতে হবে। তাদের শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ (অর্গান) যদি আলাদা থাকে, তবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুটিকে আলাদা করা সম্ভব হবে। এ ধরনের অস্ত্রোপচার অনেক ব্যয়বহুল। শিশুদের পরিবারের সাথে কথা বলে জানতে পারি তারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। এ ক্ষেত্রে শিশুদেরকে সরকারিভাবে ঢাকা শিশু হাসপাতাল অথবা পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের ব্যবস্থা করাতে হবে। এ ধরনের জোড়া শিশুর চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক সময় বিভিন্ন দাতা সংস্থাও সহযোগিতা করে থাকে। জমজ শিশুদের বাঁচানোর জন্য সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসবে বলে আমরা মনে করি।
. . . . . . . . .