জঙ্গি বাড়িটিকে ঘিরে কৌতূহলী মানুষের ভিড়
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১:৫০ অপরাহ্ণ‘আইজ অর্ডারের ফাইল কেবিনেট ডেলিভারি দেয়ার কথা। একটু পরে কাস্টমার মাল ডেলিভারি নিতে আইবো। কিন্তু কনস্টেবল তো দোকান খুলতে দিতাছে না। স্যার, একটু কইয়া দেন। দোকান না খুললে মাল ডেলিভারি দিমু কেমনে। বিল না পাইলে তো দোকানমালিক বেতন বোনাসও দিবো না।’
রোববার সকাল ৯টায় ২০৯/৫, আজিমপুর রোড (বিডিআর ২ নম্বর গেট) পিলখানার কথিত জঙ্গি বাড়িটির সামনে প্রহরারত এক পুলিশ কর্মকর্তার কাছে এভাবেই বাড়ির সামনের দোকানপাট খোলার অনুমতি পেতে অনুনয় বিনয় করছিলেন এক দোকান কর্মচারী।
এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা ওই দোকান কর্মচারীকে বললেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত কোনো দোকান খোলা যাবে না। তল্লাশিসহ প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে দোকান খুলতে দেয়া হবে।’
এ কথা শুনে মন খারাপ করে চলে যাওয়ার সময় ওই দোকানদার এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘দেশটা যে কী অইলো, কে দোষ করে আর কাকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, আজিমপুরের ওই কথিত জঙ্গি আস্তানা ঘিরে কৌতূহলী মানুষের ভিড়। এক সময়ের বিজিবি ২ নম্বর গেট থেকে সোজা মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারে যাওয়ার মাঝামাঝি স্থানে রাস্তার পূর্ব পাশের সরু গলিতে প্রবেশ পথে পশ্চিমমুখি বাড়িটির অবস্থান। বাড়িটি দেখতে অনেকটা বড় লঞ্চের মতো। সামনে কয়েকটি দোকান ও দারুল হুদা ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট নামে একটি মাদ্রাসা রয়েছে।
গলির মুখে পুলিশ সদস্যরা বেঞ্চ পেতে বসে রয়েছেন। গলিতে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। অদূরে পুলিশের একটি বড় ও একটি ছোট ভ্যানগাড়ি রয়েছে। রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় যারাই এ পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন তারা খানিকটা থেমে বাড়িটি দেখছিলেন। কেউ আবার নিশ্চিত হতে পুলিশকে জিজ্ঞাসা করছিলেন।
সালাম নামের স্থানীয় এক যুবক জানান, রাতে গোটা এলাকায় কারফিউর মতো পরিস্থিতি ছিল। চারদিকে অসংখ্য পুলিশ অবস্থান করছিল। বাসা কাছাকাছি হলেও অভিযানের সময় বাসায় প্রবেশ করতে পারেননি। রাত ১১টায় বাসায় প্রবেশ করতে সক্ষম হন।
মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টার সংলগ্ন ছোট একটি হোটেলে চা খেতে খেতে রাস্তার পাশের বাড়িটিতে জঙ্গি থাকতে পারে এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা চলছিল।
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে রাজধানীর আজিমপুরে পুলিশের অভিযানে সন্দেহভাজন এক জঙ্গি নিহত হন। অভিযানে আহত হন আরো তিন নারী ও পুলিশের পাঁচজন সদস্য। ওই বাসায় দুটি মেয়েশিশু এবং একটি ছেলেশিশুও ছিল। মেয়ে দুটির একটির বয়স ছয়-সাত বছর, আরেকটির বছর খানেক। ছেলেটির বয়স ১৩-১৪ বছর। তাদেরকে রাতেই ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ।
এর আগে, গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় একটি বাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাটে অভিযানে কানাডাপ্রবাসী তামিম চৌধুরী ও তার দুই সহযোগী নিহত হন। ২৬ জুলাই কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নয়জন নিহত হন। সেখানে আহত অবস্থায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ১ জুলাই রাতে পাঁচ জঙ্গি গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় হামলা চালায়। তারা দেশি-বিদেশি ২০ নাগরিককে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ওই রাতে অভিযান গিয়ে নিহত হন পুলিশের দুজন কর্মকর্তা।
পরদিন সকালে সেনা অভিযানের মধ্য দিয়ে জঙ্গিদের ১২ ঘণ্টার জিম্মি সংকটের অবসান হয়। অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হন।
জাগো নিউজ
. . . . . . . . .