কথা রাখলেন ড. মোমেন
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জুন ২০১৬, ২:১৪ অপরাহ্ণডেস্ক রিপোর্ট: সিলেটের শিল্প কারখানায় ও বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংযোগ চালু করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। ‘যেমন কথা, তেমন কাজ‘। কথামতো মাত্র তিনদিন পরেই প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্ঠা ড. তৌফিক-ই-এলাহীর দ্বারস্থ হলেন ড. মোমেন।
সিলেটের কৃতি সন্তান জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ মিশনের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. একে আবদুল মোমেন। তিনি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল আবদুল মুহিত এমপি‘র কনিষ্ঠ ভাই। সূত্রমতে, গ্যাস নিয়ে তিনি বড়ভাই আবুল মাল মুহিতের সাথেও কথা বলবেন।
প্রায় ৮ মাস ধরে সিলেটে নতুন আবাসিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় ক্ষোভে ফুঁসছিলো সিলেটবাসী। বিবৃতি, মানববন্ধন, স্মারকলিপি, সভা ও সেমিনার করে সেই ক্ষোভের জানান দিচ্ছিলো।
সর্বশেষ ১৮ জুন এক অনুষ্ঠানে ড. মোমেনকে পেয়ে নিজেদের সুখ-দুঃখের কথা জানান তারা। বিষয়টি বিস্তারিত জেনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন বলে জানান ড. মোমেন। কথা রাখলেন তিনি।
২২ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি উপদেষ্ঠা সিলেটের কৃতি সন্তান ড. তৌফিক-ই-এলাহীকে একটি চিঠি লিখেন তিনি। চিঠিতে ড. মোমেন সিলেটের আবাসিক এলাকায় বর্ধিত গ্যাস সংযোগ দেওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।
জানা গেছে, চিঠিতে ডা. মোমেন ১৮ জুন সিলেট নগরীর মেন্দিবাগস্থ জালালাবাদ গ্যাস অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় তার উপস্থিতি ও সিলেটবাসীর দাবির প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ওইদিন জালালাবাদ গ্যাস এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন রেজি নম্বর চট্ট ২৫২০ (সিবিএ) ‘বর্ষপূর্তি স্মারক ২০১৬’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
চিঠিতে তিনি লিখেন, সিলেটবাসী প্রথম ও দ্বিতীয় তলার পর বর্ধিত গ্যাস অর্থাৎ, ৩য় ও ৪র্থ তলায় গ্যাস সংযোগ নেই এমন বর্ধিত সংযোগ প্রদানের দাবি জানাচ্ছেন।
তিনি জ্বালানি উপদেষ্ঠাকে আরো জানান, দেশের এক মাত্র জালালাবাদ গ্যাস টিএন্ডডি সিস্টেম লিমিটেড সরকারকে রাজস্ব দিচ্ছে। এখানে সিস্টেম লস নেই; চুরিও হচ্ছে না। সিলেটের গ্যাস দিয়ে দেশের অনেক অঞ্চলে গ্যাসের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। যারা ইতোমধ্যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করেছেন এবং ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছেন তাদের গ্যাস সংযোগ দেয়া দরকার।
অন্যথায়, রাজধানির মতো সিলেটেও অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও গ্যাস চুরি বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। উল্লেখ্য, সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী শুধু রাজধানিতে ১লাখ অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে।
এছাড়া বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজারে শেভরনের একটি গ্যাস কূপ আছে। যে কূপ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব। ওই গ্যাসের প্রেসার কম, ওই গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যাওয়া সম্ভব নয়। মৌলভীবাজারের ওই গ্যাস ক্ষেত্র থেকে তিন কিলোমিটার লাইন সংযোগ দিলে এটি সিলেটের গ্যাসের সাথে সংযুক্ত হবে। এই গ্যাস জালালাবাদ গ্যাসকে আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্যাসের যে সমস্যা আছে সেটির সমাধান হতে পারে বলে মনে করেন ড. মোমেন।
তীব্র গ্যাস সংকট সামাল দিতে ২০০৯ সালের ১ অক্টোবর সারা দেশে শিল্প ও বাণিজ্যিক সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে সিলেট অঞ্চলে তখন পর্যন্ত চালু ছিলো গ্যাস সংযোগ। এরফলে সিলেটের দিকে ঝুঁকতে থাকে বড় বড় শিল্পগ্রুপ।
বিশেষত হবিগঞ্জের বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রের আশপাশের এলাকায় গত ৩ থেকে ৪ বছরে গড়ে ওঠে শতাধিক শিল্প কারখানা। স্কয়ার, আকিজ, প্রাণ, আরএকেসহ দেশের শীর্ষ বেশকিছু শিল্প উদ্যোক্তা গ্রুপ সিলেট অঞ্চলে বিনিয়োগ করে।
সিলেট জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সফিউশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের কর্মকর্তারা জানান, প্রথম দিকে নতুন গড়ে ওঠা এসব শিল্প প্রতিষ্ঠান আবেদন করলে সিলেট থেকেই যাছাই বাছাই করে সংযোগ প্রদান করা হতো। ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে ২৬ টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হয়।
তবে গত বছর থেকে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আচমকা বন্ধ করে দেওয়া হয় সংযোগ। ফলে বিপাকে পড়েছেন শিল্প উদ্যোক্তারা। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেও গ্যাস সংযোগের অভাবে তা চালু করতে পারছেন না। . . . . . . . . .