চুরির ঘটনা প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে আগেই লিখিত জানিয়েছিলাম ঃ আতিউর
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ মার্চ ২০১৬, ৬:৪৫ অপরাহ্ণ‘দায়বোধ থেকেই পদত্যাগ করেছি’ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য পদত্যাগী গভর্নর ড. আতিউর রহমান। গুলশানের নিজ ভবনে মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলে। অর্থচুরির ঘটনা প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।
আতিউর রহমান জানান, খুব শীঘ্রই প্রিয় পেশা শিক্ষকতায় ফিরবেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আতিউর রহমান বলেন, ‘রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনা অনেক আগেই অর্থমন্ত্রীকে আমি লিখিত জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকেও বিষয়টি অনানুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আজকের এই সংকট থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। সংকট থেকেই সম্ভাবনার তৈরি হয়। আজকের এই সংকট থেকে অনেক সম্ভাবনার পথ খুলে গেছে।’
আতিউর রহমান বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। মন্ত্রী বলেছেন আমি পদত্যাগ করলে নাকি বাংলাদেশ ব্যাংক ভাল চলবে। আমি নিজেও বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাল চাই। তাই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিদায়ী গভর্নর বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতি হবে তারুণ্য নির্ভর। তাই তরুণদের কথা মাথায় এখন থেকে অর্থনীতিক কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আতিউর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তাই তার হাতেই আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। তার নির্দেশনা নিয়ে আমি ব্যাংক চালিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক কোথা থেকে কোথায় এসেছে তা আপনারা সবাই জানেন। প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতা না করলে এটা সম্ভব ছিলো না।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আর যখন আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন রিজার্ভ ছিলো মাত্র ছয় বিলিয়ন ডলার। আমি পুরোপুরি সফল হয়েছি বলবো না, তবে ব্যাংকের নতুন একটি ধারা তৈরি করেছি।’
আতিউর রহমান আরো বলেন, ‘আমি যে দিল্লীতে গিয়েছিলাম সেটাকেই ইস্যু করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। আমি ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির আমন্ত্রণে গিয়েছিলাম। সেখানে আইএমএফের চিফ ছিলেন, তাদের সাথে কথা বলেছি। অনলাইনে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিয়েছি। সেটাকে বড় ঘটনা করার কোনো পটভূমি ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘আমি চাই না, বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ে কোনো বিতর্ক হোক। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নিয়ে সমস্যা হোক। তাই স্বেচ্ছায় মোরাল রেসপনসিবলিটি নিয়ে পদত্যাগ করেছি। আমি চাই এ ঘটনায় দেশে বিদেশে যারা জড়িত তাদের শাস্তি হোক। আমি তিল তিল করে ২৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ জমা করেছি। আর এ অর্থ আমার অবহেলায় চুরি হয়ে যাবে সেটা বিশ্বাস করতেও আমার কষ্ট হয়।’
এর আগে বেলা ১২টায় প্রধানমন্ত্রীর হাতে পদত্যাগ পত্র জমা দেন আতিউর রহমান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা চুরির ঘটনায় পদত্যাগ করেছেন তিনি।
. . . . . . . . .