একাধিক মহাসচিব, দৌড়ে এগিয়ে দু’জন
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১১:০৮ পূর্বাহ্ণবিএনপির আসন্ন কাউন্সিল নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব নিকাশ। শুধু নেতৃত্বেই পরিবর্তন নয়, দলের গঠনতন্ত্রে সংশোধনী এনে সময়পোযোগী করতেও রয়েছে বিভিন্ন প্রস্তাব। দেশি বিদেশি রাজনৈতিক দলের কাঠামোগুলো আলোচনায় উদাহরণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে।
পরিবর্তীত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দলে দুই বা ততোধিক মহাসচিব রাখা নিয়ে নেতাকর্মীরা চিন্তাভাবনা করছে। ভারতের কংগ্রেস পার্টিতে পাঁচজন মহাসচিব রয়েছে। বিএনপির ক্ষেত্রে অন্তত দুই জন মহাসচিব রাখার মৌখিক প্রস্তাব ইতিমধ্যেই এক জ্যেষ্ঠ নেতা দলীয় প্রধানের কাছে রেখেছেন।
মহাসচিব নির্বাচনে যে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে তা হলো, তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে চেইন অব কমান্ড ধরে রাখতে পারবে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। আবার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দলের মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করার যোগ্যতা রাখবেন তিনি।
দলকে আরো গতিশীল করতে এই দায়িত্বগুলো যথাযথ পালন করা দরকার। দায়িত্বগুলো পালন একজনের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। কমপক্ষে দু’জন দরকার। পদাধিকার বলে দু’জনই দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য হবেন।
নেতকার্মীদের আলোচনায় মহাসচিব হিসেবে দু’জনের নাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে : এম তরিকুল ইসলাম এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তরিকুল ইসলাম দলের প্রবীণ নেতা। ১৯৮৭ সালে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। দলের সর্বস্তরে তার সাংগঠনিক প্রভাব রয়েছে।
অন্যদিকে রাজনীতিতে কোকিল কণ্ঠ হিসেবে পরিচিত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মিষ্টি কথায় রয়েছে জাদুকরি প্রভাব। এছাড়া তৃণমূলে দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার।
মহাসচিব পদ ঘিরে দলের মধ্যে নানা পন্থিও তৈরি হয়েছে। তরিকুলের অনুসারীদের প্রত্যাশা, দলকে গতিশীল করতে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান তরিকুল ইসলামকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন।
অপরদিকে, মির্জা ফখরুল ইসলামকে ভারমুক্ত করা হলে তার অনুসারীরাও চাঙা হবে। বিভিন্ন সময় তাকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করার দাবি উঠলেও বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তা আর জোরালো হয়ে ওঠেনি।
দলের দুঃসময়ের কাণ্ডারি খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন মহাসচিবের দায়িত্ব পালনকালে মারা যান। এরপর থেকেই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে একটা ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সাবেক এই চেয়ারম্যান।
নেতাকর্মীদের মধ্যে এইসব নিয়ে জোর আলোচনা চললেও কেন্দ্রীয় নেতারা মুখ খুলছেন। এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না এমন বলে অনেকে এড়িয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে বর্তমানে আলোচনায় থাকা স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলামেইলকে বলেন, ‘এ নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। এরকম কোনো আলোচনা শুনিনি।’
তবে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান বলেন, কাউন্সিলকে সামনে রেখে দলের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ আসতেই পারে। সব পরামর্শ যাচাই-বাচাই করে কাউন্সিলের দিনে কাউন্সিলরদের মতামত শুনে মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নেতা নির্বাচন করা হবে। দলকে শক্তিশালী করার জন্য ইতিবাচক কাজের জন্য গঠতন্ত্র সংশোধন করা যেতেই পারে।
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শামসুজ্জামান দুদু মনে করেন, প্রয়োজন হলে দলে একাধিক মহাসচিব থাকতেই পারে।
এদিকে ফখরুল ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম ছাড়াও মহাসচিব পদে অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির খসরু মাহামুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের নাম আলোচনায় রয়েছে।
. . . . . . . . .