১০ হাজার টাকার জন্যই মাকে হত্যা!
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১১:২৩ পূর্বাহ্ণদুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের ধাপহাট এলাকার রোকেয়া বেওয়ার বয়স হয়েছে। বড় ছেলে ইউনুসের সঙ্গে তার বনিবনা ছিল না। সম্পত্তির অংশ ছেলেকে দেননি। এর জের ধরে মায়ের ওপর ভীষণ ক্ষেপে ছিলেন ইউনুস। এক সময় পরিকল্পনা করেন মাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়ে সব সম্পত্তি হাতিয়ে নিবেন তিনি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ জানুয়ারি রাত ১টার দিকে মায়ের শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন ইউনুস। এ সময় মা রোকেয়া বেওয়াকে লোভ দেখান, এই রাতেই পাশের নিমতলা মাজারে যেতে হবে। তোমার কাছে যে টাকা গচ্ছিত আছে তা ওই মাজারে নিয়ে যেতে পারলে দ্বিগুণ হবে।
ছেলের এমন কথা শুনে মা রোকেয়া চলে যান মাজারে। সেখানে গিয়েই ঘাতক রূপে আবির্ভূত হন ছেলে ইউনুস। আশেপাশ থেকে আরও তিন খুনি বের হয়। রোকেয়া বেওয়াকে তারা পাশের একটি সরিষা ক্ষেতের মেশিন ঘরে নিয়ে যান। সেখান থেকে তার কাছে থাকা বেশকিছু টাকা ছিনিয়ে নেন। এরপর ঘাড় মটকিয়ে মাকে নির্মমভাবে খুন করেন ইউনুস।
হত্যাকাণ্ডের দু’দিন পর ১৭ জানুয়ারি সরিষা ক্ষেত থেকে রোকেয়া বেওয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গত ১৮ জানুয়ারি নিহতের ছোট ছেলে ইয়াকুব বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় পুলিশ। কি কারণে এবং কে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এমন প্রশ্ন ভাবিয়ে তোলে পুলিশকে। তবে মায়ের জানাজায় অংশ না নেয়ায় সন্দেহের দৃষ্টি চলে যায় ইউনুসের দিকে। এই সন্দেহ থেকেই গ্রেপ্তার করলে মাকে হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং সহযোগীদের নাম প্রকাশ করেন তিনি।
সোমবার দুপুরে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন ইউনুস। হত্যার মিশনে নেতৃত্ব দেয়ায় ১০ হাজার টাকা ভাগও পেয়েছেন বলে আদালতকে জানান তিনি। পরে তার জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
এ ব্যাপারে বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গাজিউর রহমান বাংলামেইলকে জানান, প্রথম দিকে এ হত্যার কোনো ক্লু পাচ্ছিলেন না তারা। খুনিকে সনাক্ত করা দুরূহ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু মায়ের জানাজায় অংশ না নেয়ায় ইউনুসকে পুলিশের সন্দেহ হয়। এই সন্দেহ থেকেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলে হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসে।
এএসপি জানান, হত্যার সময় মায়ের কাছে থাকা টাকার মধ্যে নিজের ভাগ হিসেবে ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন ইউনুস। এ ঘটনায় ইউনুস ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
. . . . . . . . .