স্ত্রীকে লেখা এরশাদের চিঠি
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জানুয়ারি ২০১৬, ১:১০ অপরাহ্ণচিঠিতে এরশাদ তার অবস্থান পরিস্কার করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কোন সুযোগ নেই বলে স্ত্রী ও দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদকে জানান।
গত রবিবার রংপুরে এরশাদ তাঁর ভাই জি এম কাদেরকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। এর পরের দিন সোমবার গুলশানে এক বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার ঘোষণা দেয় একটি অংশ। এর পরদিন মঙ্গলবার এরশাদ জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব পদ থেকে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে অব্যাহতি দিয়ে রুহুল আমিন হাওলাদারকে আবার দলের নতুন মহাসচিব ঘোষণা দেন। শনিবার রওশন এসব বিষয়ে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি এরশাদের সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।
রওশনের সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে চিঠিতে এরশাদ তাঁর স্ত্রীকে ‘প্রিয় সহকর্মী’ সম্বোধন করে লিখেছেন, ‘আপনি পার্টির একজন শীর্ষ নেতা এবং সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে পার্টির চেয়ারম্যানের কাছে কোনো বিষয়ে আবেদন, নিবেদন কিংবা বিবেচনার আহ্বান জানাতেই পারেন। সেটা আপনার সাংগঠনিক অধিকার। তবে পার্টির স্বার্থে বিবৃতিতে উল্লেখিত আপনার প্রস্তাবটি বিবেচনা করতে পারলাম না বলে দুঃখিত। আশা করি আপনিও পার্টির সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করবেন।’
এরশাদ রওশনকে আশ্বস্ত করে লিখেছেন, ‘আপনি সংসদীয় দলের নেতৃত্বে আছেন, আমি পার্টির নেতৃত্বে আছি। আমাদের উভয়ের মিলিত প্রচেষ্টায় জাতীয় পার্টি আগামী দিনে এগিয়ে যাবে।’
নিজের নেওয়া সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে চিঠিতে এরশাদ লিখেছেন, জি.এম. কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান করার ব্যাপারে আপনারও সম্মতি ছিল। কো-চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির কোনো গঠনতান্ত্রিক পদ নয়। পার্টির চেয়ারম্যান সংগঠনের প্রয়োজনে কোনো পদ সৃষ্টি বা কাউকে কোনো বিশেষ দায়িত্ব দিতে পারেন। গঠনতন্ত্রের ৩৯ ধারা বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মহাসচিব পদে রদবদল প্রসঙ্গে এরশাদ লিখেছেন, ‘জিয়াউদ্দিন বাবলুকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছি। তিনি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে মিডিয়ার কাছে আপনাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন। এটা ছিল দলকে বিভক্ত করার একটি ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। সে কারণে, জনাব বাবলুকে যে ধারা মতে মহাসচিব করা হয়েছিল- সেই ৩৯ ধারাতেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
এরশাদ আরও বলেন, ‘আপনি আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো সম্পর্কে অবগত আছেন যে, সংসদীয় কমিটি দলীয় নীতি-নির্ধারণের কোনো শাখা নয়। একমাত্র প্রেসিডিয়ামেরই পার্টির নীতি-নির্ধারণের এবং কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা অনুমোদনের এখতিয়ার রয়েছে। সুতরাং দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা বাস্তবায়নের ব্যাপারে প্রেসিডিয়াম বাদে অন্য কোনো শাখার মতামত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নেই।’
. . . . . . . . .