সিলেটে পৌর নির্বাচনে মাঠ ছাড়বেন না আ.লীগের বিদ্রোহীরা!
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ ডিসেম্বর ২০১৫, ১০:১৪ পূর্বাহ্ণনির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশব্যাপী পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তন্মধ্যে সিলেট জেলার ৩টি পৌরসভাও রয়েছে। এ তিন পৌরসভা হচ্ছে জকিগঞ্জ, কানাইঘাট ও গোলাপগঞ্জ। এবার মেয়র পদে দলীয়ভাবে মনোনয়নের সুযোগ থাকায় এসব পৌরসভার জন্য ইতোমধ্যেই প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। তবে আসন্ন নির্বাচনে দলটির জন্য বিপদের পদধ্বনি যেন ঘনিয়ে আসছে। কেননা, দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও এসব পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী কিন্তু মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হওয়া নেতারা মাঠ ছাড়ছেন না! স্বতন্ত্র থেকেই নির্বাচনে লড়বেন এসব বিদ্রোহী নেতারা।
আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার সিলেটের ৩ পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করতে একটি টিম গঠন করা হয়। ওই টিম নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহবান করে। ওই আবেদনপত্রে ‘দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তাকে মেনে নেব’ এটা লিখে দেয়ার নির্দেশনা ছিল। এজন্য সিলেটের ৩ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই আবেদন করেননি। তাদের ভয় ছিল, ওই কথা লিখে দিলে পরে স্বতন্ত্র থেকে আর নির্বাচন করতে পারবেন না।
জানা যায়, সিলেটের জকিগঞ্জে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান। মনোনয়ন পেতে আবেদন করেছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক নাসিম আহমদ, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শহীদ আহমদ। কিন্তু তারা মনোনয়ন পাননি। অন্যদিকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও ওই নির্দেশনার কারণে আবেদন করেননি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমদ। তার মতোই আরো কয়েকজন আ.লীগ নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও তারা আবেদন করেননি। তবে নির্বাচনী মাঠ ছাড়বেন না তারা। স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবেন, এমনটাই তাদের মনোভাব।
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমদ বলেন, কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে, তা জেলা নেতারা আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন। এজন্য আবেদন করিনি। তবে মনোনয়নপত্র কিনেছি। দলের দুঃসময়ে ছিলাম, জেল খেটেছি, আগামীতেও থাকবো।
এদিকে কানাইঘাট পৌরসভায় আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন কানাইঘাটের সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক লুৎফুর রহমান। তবে এ পৌরসভা থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও ওই নির্দেশনার কারণে আবেদন করেননি আ.লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন আল মিজান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম ও আহবায়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন। বিশ্বস্থ সূত্রের খবর, তারাও নির্বাচনী মাঠ ছাড়ছেন না।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় আ.লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন। আবেদন করেও মনোনয়ন পাননি উপজেলা আ.লীগের প্রচার সম্পাদক ও বতর্মান মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু। এ পৌরসভায় সাবেক পৌর প্রশাসক ও প্রবীণ আ.লীগ নেতা সিরাজুল জব্বার চৌধুরী, যুক্তরাজ্য যুবলীগ’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেলসহ আরো দু-তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে কেউই আবেদন করেননি। কিন্তু তাদের কেউই নির্বাচনী মাঠ ছাড়ছেন না বলে অন্ধের মহলের খবর। এমনকি জাকারিয়া আহমদ পাপলুও স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জাকারিয়া আহমদ পাপলু বলেন, কথা ছিল জেলা নেতারা তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা কেন্দ্রে পাঠাবেন। কিন্তু তা হয়নি। আমি বর্তমান মেয়র। দলের জন্য ১/১১ এ জেল খেটেছি। স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হয়ে প্রমাণ করবো এবার দল থেকে মনোয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তি জনবিচ্ছিন্ন।
. . . . . . . . .