সাকার ফাঁসি বহালে বিএনপি নেতাদের ‘মন খারাপ’

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ নভেম্বর ২০১৫, ৮:৪৫ পূর্বাহ্ণমৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মানবতা বিরোধী অপরাধী বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আবেদনের রায় খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সঙ্গে জামায়েতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদের আবেদনও খারিজ করে দেয়া হয়। আর এরই মাধ্যমে প্রায় শেষ হলো শীর্ষ দুই যুদ্ধাপরাধীর মামলার আইনি লড়াই। বাকি শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা। প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা চাওয়ার পর আবেদন নাকচ হলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।
তবে মানবতা বিরোধী অপরাধে বিশেষ করে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সম্পৃক্ত কিনা এ নিয়ে বিএনপিতে অস্পষ্টতা রয়েছে। এ নিয়ে আইনজীবীরাও দলীয় হাইকমান্ডকে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি। ফলে সাকাকে বহিষ্কার করার ব্যাপারে এক ধরনের সংশয় রয়েছে। দলের মধ্যে একটি অংশ রয়েছে যারা চায় আলোচনা সমালোচনা যাই হোক না কেন বিচার বাস্তবায়ন হলে একটা সমাধানে পৌঁছা যাবে। আর যদি বিনাদোষে শাস্তি পেতে হয় তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
এদিকে বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ৮-এর বলে দণ্ডিত ব্যক্তি, দেউলিয়া, উম্মাদ বলে প্রমাণিত ব্যক্তি, সমাজে দুর্নীতিপরায়ন বা কুখ্যাত বলে পরিচিত কোনো কেউ দলটির জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জাতীয় স্থায়ী কমিটি বা যে কোনো পর্যায়ের নির্বাহী কমিটির সদস্য কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী পদের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
তাই সাকার রিভিউ রায় নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হবে না বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে দলের কয়েকজন নেতা বাংলামেইলের কাছে সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহাবুবুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘না, না আমার কোনো বক্তব্য নেই। আমি মনে করি নিশ্চয়ই বিএনপি এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করে বক্তব্য দিবে। আমার বক্তব্য আর কিছু নেই। থ্যাংক ইউ।’
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ‘আমি এখনও দলের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়নি। তাদের সঙ্গে না বসে এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলতে পারবো না।’ তিনিও থ্যাংক ইউ জানিয়ে মন্তব্য শেষ করেন।
তবে দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘এখানে প্রতিক্রিয়া জানানোর কী আছে? রায়তো একের পর এক হচ্ছে। আমাদের যে কথা আমরা তা অনেক আগেই বলেছি। এখন আমাদের জোটের নেতা দলের নেতা ন্যাচারালি আমাদের একটু মন খারাপ লাগবেই। মানবতা বিরোধী যদি কোনো অন্যায় খুঁজে পান তাহলে সেই বিচারটা স্বচ্ছ হতে হবে। আমাদের কথাতো একটাই। সেখানে স্বাভাবিকভাবে যে কোনো মৃত্যুদণ্ডে মানুষের খারাপ লাগে। যে কোনো মানুষই হোক না কেন, সেখানে আমি আমরা কি বলতে পারি বলেন?’
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আহমেদ আযম খান বাংলামেইলকে বলেন, ‘এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এ নিয়ে দলের মুখপাত্র বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কথা বলবেন।’
যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আমি এ মামলার আইনজীবী নই। খন্দকার মাহাবুব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’
দলের যুগ্ম-মহাসচিব হিসেবে তার মন্তব্য চাইলে তিনি উপদেষ্টা খন্দকার মাহাবুব হোসেন এবং জয়নুল আবেদিন এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
তবে সাকার আইনজীবী হিসেবে খন্দকার মাহাবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আসামিদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে হেরে গেছি। এখন সরকার ইচ্ছে করলে আসামিদের দণ্ড মুওকুফ করতে পারে। আবার আসামিরা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইলে রাষ্ট্রপতি তাদের ক্ষমা করতে পারেন।’
. . . . . . . . .