কোনো পদে নেই, তবু বহিস্কার
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ অক্টোবর ২০১৫, ১০:০৫ অপরাহ্ণনিজস্ব প্রতিবেদক::
ঘটনা-১.
গত বছরের ২১ নভেম্বর শাহজালাল বিশ্ববিদালয়ের দু’পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারান সুমন চন্দ্র দাশ নামে বহিরাগত এক ছাত্রলীগ কর্মী। তবে সুমনের কোনো দলীয় পদ না থাকায় তখন তাকে নিজেদের কর্মী বলে স্বীকারই করেনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
ঘটনা-২.
গত ১২ আগস্ট নগরীর মদন মোহন কলেজে ছুরিকাঘাতে খুন হন আব্দুল আলী নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী। প্রতিপক্ষের ছাত্রলীগ কর্মীরাই তাকে হত্যা করে। সে সময় অনেক গণমাধ্যমে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মকান্ডে আলীর অংশগ্রহণ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে ছবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে যথারীতি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আব্দুল আলী দলীয় কোনো পদে নেই। ছাত্রলীগের সাথে তার সম্পৃক্ততাও নেই।
ঘটনা-৩.
গত ১৮ অক্টোবর নগরীর টিলাগড়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরীর উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে গত ২০ অক্টোবর ৩ জনকে দলকে বহিস্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
বহিস্কৃতরা হলেন- জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচ এম কামরুল ইসলাম, সঞ্জয় চৌধুরী ও মিঠু তালুকদার। এদের মধ্যে মিঠু জেলা ছাত্রলীগের আগের কমিটিতে যুগ্ন-সাধারণ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তবে বর্তমানে দলের কোনো কমিটিরই সদস্য নন তিনি। কোন পদ-পদবিও নেই তাঁর। ফলে মিঠুর বহিস্কার নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বিশেষত অন্তর্কলহে মারা যাওয়া কর্মীদের পদপদবি না থাকায় দলীয় কর্মী বলেই স্বীকার না করা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ পদপদবিহীন নেতাকেও বহিস্কার করায় এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা বিপদ দেখলে অনেক সক্রিয় কর্মীকেও স্বীকৃতি দিতে চান না। এমনকি মরলেও স্বীকার করেন না। আবার শাস্তি প্রদানের সময় পদপদবির ধার ধারেন না।
এ ব্যপারে বহিস্কৃত নেতা মিঠু তালুকদার বলেন, আমি বর্তমানে ছাত্রলীগের কোন কমিটিতেই নেই। যেহেতু আমি বর্তমানে কেনো কমিটিতে নেই সেহেতু আমাকে কেন ও কিভাবে বহিস্কার করা করা হল তা আমার বোধগম্য নয়।
বহিস্কারের বিষয়ে জানতে তিনি জেলা ছাত্রলীগের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানান মিঠু।
জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের উপর হামলা প্রসঙ্গে মিঠু বলেন, আমি এলাকার পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। ঘটনার দিন আমি পূজার কাজে ব্যাস্ত ছিলাম। সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থলেই ছিলাম না। ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরীকে ছোট ভাই সম্বোধন করে মিঠু বলেন, সে আমার ছোট ভাই। কোন ভাবেই তাঁর উপর আমি হামলা করতে পারি না।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরী বলেন, ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে মিঠুকে বহিস্কার করা হয়েছে।
হামলার ব্যাপারে রায়হান বলেন, তাকে হত্যার উদ্দেশেই মিঠুসহ বহিষ্কৃত তিন নেতার নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর রাতে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শাখার কমিটি ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক এম. রায়হান চৌধুরী।
এই কমিটির গঠনে ক্ষুব্দ হন ছাত্রলীগ টিলাগড় গ্রুপের একাংশের নেতাকর্মীরা। কমিটির গঠনের পর থেকে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে টিলাগড় এলাকায়। এর জের ধরে রবিবার রাতে টিলাগড় পয়েন্টে রায়হানের উপর হামলা চালানো হয়।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। . . . . . . . . .