সিলেটে বেপরোয়া ছাত্রলীগ, আতঙ্কিত নগরবাসী
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ অক্টোবর ২০১৫, ৯:২১ পূর্বাহ্ণসিলেটে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে ছাত্রলীগ। রাজনীতির চেয়ে নিজেদের মধ্যে হানাহানিতে বেশি ব্যস্ত সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আধিপত্য বিস্তার ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে গত প্রায় দুইমাস ধরে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ঘটছে রক্তপাত। ছাত্রলীগের বেপরোয়াভাব, সংঘর্ষ ও অস্ত্রের ব্যবহার সিলেট নগরবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। অভ্যন্তরিণ দ্বন্দ্বে সর্বশেষ হামলার শিকার হয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম. রায়হান চৌধুরী। গত রবিবার রাতে টিলাগড়ে ক্যাডারদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন তিনি।
গত শনিবার রাতে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শাখার কমিটি ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক এম. রায়হান চৌধুরী। এই কমিটি মেনে নিতে পারেনি ছাত্রলীগ টিলাগড় গ্র“পের একাংশের নেতাকর্মীরা। এর জের ধরে রবিবার রাতে টিলাগড় পয়েন্টে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সমর্থকরা রায়হানের উপর হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হন রায়হান।
রায়হানের উপর হামলার খবর পেয়ে তার সমর্থকরা টিলাগড় পয়েন্টে আসলে কামরুল সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন আহত হন। পুলিশ গুলি ছুঁড়ে ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করে। সংঘর্ষ চলাকালে টুটুল নামের এক ছাত্রলীগকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। সংঘর্ষের সময় টিলাগড় পয়েন্টে অন্তত ৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার টিলাগড়ের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
এদিকে, সোমবার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সিলেটের বিয়ানীবাজার কলেজে ছাত্রলীগের মুলধারা ও পাভেল গ্র“পের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।
এর আগে কোরবানির পশুর অবৈধ হাটের কমিশনের টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে উপশহরে ছাত্রলীগের জাকারিয়া মাহমুদ ও শামীম ইকবাল গ্র“পের নেতাকর্মীদের মাঝে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গত শনিবার ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মদন মোহন কলেজে নিজ দলের ক্যাডারদের হামলায় ছুরিকাহত হন রুমেল আহমদ নামের এক কর্মী।
গত মাসের শেষের দিকে আধিপত্য নিয়ে নগরীর খাসদবীরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ৫নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি মোহন মিয়াসহ অন্তত ৫ জন আহত হন। গত সপ্তাহে ওসমানী হাসপাতালে নিজ দলের ক্যাডারদের হামলায় ছাত্রলীগের দুইনেতা ছুরিকাহত হন।
গত আগস্টে মদন মোহন কলেজে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান আবদুল আলী নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী।
ছাত্রলীগের হানাহানি প্রসঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম তুষার বলেন- সংগঠনের নাম ব্যবহার করে যারা অপকর্ম করছেন তাদের দায় ছাত্রলীগ নেবে না। এদের ব্যাপারে কেন্দ্রকে অবগত করা হচ্ছে। কেন্দ্রের পরামর্শে এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরীয়ার আলম সামাদ বলেন, টিলাগড়সহ অন্যান্য স্থানে যারা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন তাদেরকে চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে। এদেরকে চিহ্নিত করে কেন্দ্রের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ছাত্রলীগে কোন সন্ত্রাসীর ঠাঁই হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
. . . . . . . . .