ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর আইনগত ভিত্তি নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪:৪২ অপরাহ্ণ
ব্যবসায়ীরা যে প্রক্রিয়ায় ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন এর আইনগত কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকার কিছুই জানতো না। আমরা আধা ঘণ্টা আগে এটা জেনেছি। কোম্পানিগুলো সামগ্রিকভাবে একত্রিত হয়ে এ কাজটি (ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানো) করেছে। সামগ্রিক একত্রিতভাবে করা এই কাজটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।’
এখন আপনারা কী করবেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আলোচনা করে কর্মপদ্ধতি ঠিক করব। এটার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।’
উপদেষ্টা বলেন, মঙ্গলবার আমরা ক্রয় কমিটিতে টিসিবির জন্য তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছি। সয়াবিন তেল ৫০ লাখ লিটার, রাইস ব্রান তেল এক কোটি লিটার। ওনারা (ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী) আজকে যে দামে বাজারে বিক্রি করছেন, সেটা থেকে প্রায় ২০ টাকা কমে আমাদের তেল দিয়েছেন। তাই বাজারে ২০ টাকা বেশি দামে তেল দেওয়ার কোন যৌক্তিক কারণ তো আমি খুঁজে পাচ্ছি না। গতকালকেই আমরা তাদের কাছ থেকে কিনেছি।’
তাহলে কি ব্যবসায়ীদের ওপর আপনাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ আছে কি নেই সেটা আমাদের পদক্ষেপের মাধ্যমেই জানতে পারবেন, নিশ্চয়ই আছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘একটু ব্যবসায়ীদের এ প্রশ্ন করেন। আমরা পদক্ষেপগুলো নেব, আলোচনায় বসেছি। এটাতো মার্কেটে গিয়ে তলোয়ার নিয়ে যুদ্ধ করার জিনিস না।’
যদি আইন লঙ্ঘন করে থাকে, তবে আপনারা দৃশ্যমান কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন কি না- এ বিষয়ে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘নিশ্চয়ই নেব। কেন নেব না? আইনগতভাবে যে ব্যবস্থাগুলো আছে সবগুলোই নেব।’
তাহলে কি সরকার থেকে ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষমতাধর হয়ে গেল—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনার এ ধরনের উত্তেজক ও ধারণা প্রসূত প্রশ্নের তো জবাব নেই।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি তেলের দাম বাড়ানোর যৌক্তিক কোনো কারণ থাকে, আমরা আনন্দের সঙ্গে আলোচনা করব। আমরা তো সরবরাহ ব্যবস্থা গতিশীল রাখতে চাই। সরবরাহ ব্যবস্থা আমরা বিঘ্নিত করতে চাই না।’
ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের অ্যাসোসিয়েশন থেকে বলেছে, দাম বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রণালয় কিংবা ট্যারিফ কমিশনের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘এটা তো তাদের বক্তব্য। তাদের ওই কথা তো আমরা একনলেজ করি না।’
রমজানের প্রস্তুতির বিষয় জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, সবকিছুরই ভালো প্রস্তুতি রয়েছে। যেখানে যেখানে রাজস্বের ব্যাপারে কর্মকাণ্ড করতে হবে, সরবরাহের ব্যাপারেও। আমরা দেখেছি আমদানি পর্যায়ের যে পরিমাণ ঋণপত্র খোলার প্রয়োজন, গতবার যা খোলা হয়েছে, সেটা থেকেও বেশি দেখতে পাচ্ছি। তাই সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখছেন চিনির দাম কমছে। ইনশাআল্লাহ ছোলার দাম কমবে। ডালের দাম কমেছে, ডিমের দাম কমেছে, আরও অন্যান্য কিছু জিনিসের দাম কমেছে। আমরা জিনিসটা বুঝবো, বুঝে যৌক্তিক যে সমাধান সেটাতেই যাবো। অযৌক্তিক কোনো সমাধান আমরা মানবো না।’




