বসন্তের হিমেল হাওয়ায় আম মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ
মইনুল হাসান আবির:
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ মার্চ ২০২৪, ৭:০৫ অপরাহ্ণশীতকালের শেষে মাঘের হিমেল হাওয়ায় সবুজ পাতার ফাঁকে দোল খায় আমের মুকুল। আর পূবালী হাওয়ার দাপট বাড়তে থাকা মানেইতো শীতের বিদায়, বসন্তের আগমন। গাছে গাছে আমের ফুটেছে মুকুল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে মৌ মৌ গন্ধ। প্রায় সব আম গাছেই মুকুলের দেখা মিলছে। মুকুলের ভারে নুয়ে পরার উপক্রম প্রতিটি গাছ। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বারোমাসি ও দেশি জাতের আম গাছে এই মুকুল দেখা দেয়। সারি বদ্ধ গাছে আমের মুকুল যেন শোভা ছরাচ্ছে নিজেস্ব মহিমায়। বাতাশে মিশে গেছে মিষ্টি গন্ধ, যে গন্ধ মানুষের মন মাদকতা এনে দেয়। জানান দেয় বসন্তের হিমেল হাওয়া।
পাগল করা বসন্তে। বনে বনে, মনে মনে রং ছড়াতে শুরু করেছে হৃদয় উচাটন করা এ ফাগুন। এমন আবহে অজান্তেই হৃদয়ের গহীনে বেজে ওঠে কবি গুরুর গান। ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান-তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান-আমার আপনহারা প্রাণ, আমার বাঁধন-ছেঁড়া প্রাণ।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বসন্তের আগমনকে ঘিরে লিখেছিলেন, ‘এলো বনান্তে পাগল বসন্ত/বনে বনে মনে মনে রং সে ছড়ায় রে, চঞ্চল তরুণ দুরন্ত।
সিলেটের কয়েকটি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।
গ্রাম-শহর ও এলাকা জুড়ে শীতের তীব্রতা বিরাজ করলেও আগাম জাতের সব আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। পৌষের মাঝামাঝিতেই গাছে মুকুল আসার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। মাঘের শুরুতেই মুকুল বের হয়েছে এ কারণে আম গাছের সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারাদেশে রয়েছে অনেক জাতের আম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ফজলি, গোপালভোগ, মোহনভোগ, ন্যাংড়া, ক্ষিরসাপাত, হিমসাগর, কৃষাণভোগ, মলিস্নকা, লক্ষণা, আম্রপলি, দুধসর, দুধকলম, বিন্দাবনী, আরজান, রাণী পসন, মিশ্রীদানা, সিঁন্দুরী, আশ্বিনাসহ নানা প্রকার গুটি আম। ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় অবধি বারোমাসি বা লোকাল জাতের আম গাছে মুকুল আসা দেখা যায়। ফেব্রুয়ারি মাসেই মূলত আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা ও ঘন কুয়াশার কারণে গাছের মুকুল নষ্ট হতে পারে। আশা করা যায়, আবহাওয়া অনুকুল থাকলে সারাদেশে আমের বাম্পার ফলন হবে। ঘন কুয়াশার কবলে না পড়লে, এসব মুকুলে ভালো আম হবে। তবে মাঘের শেষ দিকে যেসব গাছে মুকুল আসে, তাতে আরও বেশি ফলন হয় বলে আশা করা যায়।
মুক্তচিন্তা/আবির