প্রযুক্তি যার হৃদয়ে গাঁথা
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ মে ২০২১, ৪:৩৫ অপরাহ্ণঅমিতাভ চক্রবর্ত্তী রনি
প্রযুক্তি যার হৃদয়ে গাঁথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর দৌহিত্র, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র সুযোগ্য সন্তান ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সমগ্র বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রযুক্তিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত করছেন ।
ইতিমধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ১২ বছর আগের প্রযুক্তি নিয়ে স্বপ্ন ও পরিকল্পনার সুফল বর্তমানে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ব্যাপক হারে পাচ্ছে। গ্রাম থেকে শহর সব জায়গায় প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। সমগ্র বিশ্বকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে।
প্রতিটা অফিস-আদালত,ব্যবসা-বাণিজ্য,খেলাধুলা, যোগাযোগ, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, চাকুরি, অনলাইন মার্কেটিং,গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল, ব্যাংকিং, বিকাশ, নগদ, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদ সহ সকল জায়গায় ইন্টারনেটের রাজত্ব। সোস্যাল মিডিয়া ও মিডিয়ায় এর ব্যবহারের পরিধি উল্লেখযোগ্য। ফেইসবুকিং, টুইটার, ইস্টগ্রাম ভাইভার, ইমু, ইউটিউব সহ অনেক কিছুই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বড় ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে মানুষ প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া এক মুহূর্তও চলতে পারে না।
ঘুম থেকে ওঠার পর ঘুমানোর আগ পর্যন্ত প্রযুক্তির সাথেই সকলের বসবাস। ১২ বছরের ব্যবধানে প্রযুক্তির ব্যবহার কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বাংলাদেশের সামগ্রিক ও টেকসই উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা হলেন টেকসই উন্নয়ন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ এবং পদ্মা সেতুর মত মেঘা প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা আর সজীব ওয়াজেদ জয় হলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপকার।
তিনি একজন খ্যাতনামা পরমাণুবিজ্ঞানী ড.এম এ ওয়াজেদ মিয়া এর সুযোগ্য পুত্র। বাবার মত তাঁরও বিজ্ঞানের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ রয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এ্যট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করেন। পরবর্তীতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক-প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
বর্তমানে তিনি স্হায়ীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বসবাস করছেন। বিদেশে থাকলেও প্রিয় মাতৃভূমির প্রতি রয়েছে তাঁর অফুরন্ত ভালবাসা ও দেশপ্রেম। দেশকে প্রযুক্তি খাতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নানা ও মায়ের স্বপ্ন, সমৃদ্ধ ও সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য তরুণ সমাজকে অনুপ্রাণিত করছেন। তাঁর হাত ধরেই তরুণ সমাজ আজ প্রযুক্তির ছোঁয়া পাচ্ছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও নেতৃত্ব দিচ্ছে।
নতুন নতুন অ্যাপস তৈরি করে বিশ্বকে অবাক করে দিচ্ছে। ২০১৯ সালে কিশোর সাইবার অ্যাপস তৈরি করে সাদাত রহমান আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরষ্কার অর্জন করেছিল। সে জন্য সজীব ওয়াজেদ জয় সহ আইসিটি বিভাগের পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা ছিল। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশ ই-নথি যুগে প্রবেশ করেছে। ই-পাসপোর্টের প্রক্রিয়া ৫৫ টি জেলায় শুরু হয়েছে। স্মার্ট কার্ডের বিতরণ চলমান। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ২০১৮ সালের ১২মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশেও বাংলাদেশের নাম লেখা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও বিভিন্ন দেশ এই স্যাটেলাইটের সুবিধা নিচ্ছে। দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের জন্যও প্রক্রিয়া চলছে। সবই যেন বদলে যাওয়া এক বাংলাদেশের রুপকথার গল্প। যার নেতৃত্বে রয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়। প্রযুক্তি যেন তাঁর শয়নে স্বপনে ও হৃদয়ে গাঁথা। তিনি পেপারলেস বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন এবং এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
গত ১২ ডিসেম্বর ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০২০’উপলক্ষে ‘এমব্রেসিং ডিজিটাল টেকনোলজিস ইন নিউ নরমাল’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মূল নেতা হবে বাংলাদেশ।
সে সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। কোনো সন্দেহ নেই, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য বাংলাদেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স), ব্লক চেইন, আইওটি, ন্যানো টেকনোলজি, বায়ো টেকনোলজি, রোবোটিকস, মাইক্রোপ্রসেসর ডিজাইন, সফটওয়্যার ডিজাইনের মতো বিষয়ে নজর রাখছে।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু অন্যের প্রযুক্তি গ্রহণ করা নয়, আমরা এখন প্রযুক্তির পরবর্তী প্রজন্মের নেতা হতে চাই।’ সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ অনলাইন নিরাপত্তা ও ডেটা নিরাপত্তার দিকে নজর রাখবে।’ করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এ সময় প্রযুক্তিই মূল ভূমিকা পালন করেছে।’
‘তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা হচ্ছে। অন্যান্য খাতের মতো তথ্যপ্রযুক্তিও বাংলাদেশ রপ্তানি করছে। এ খাতও এখন দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে।’ এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে কাজ করে যাচ্ছে। প্রযুক্তিকে আরো বেশি প্রসারিত করার জন্য সরকার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব সারা বাংলাদেশের স্কুল-কলেজে স্থাপন করে দিচ্ছে। যাতে ছাত্রছাত্রীরা আইটি বিষয়ে পারদর্শী হয়ে উঠতে পারে।
প্রত্যেক ক্লাসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শেখ কামাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট নামে আরও একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলা। প্রশাসনিক কার্যক্রমে আইসিটি খাতের বিশাল অবদান রয়েছে। আইসিটিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বাহিনী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। ৯৯৯ নাম্বারে কল করে মানুষ বিভিন্ন আইনী সুবিধা পাচ্ছে।
৩৩৩ নাম্বারে কল দিয়ে ভোক্তা অধিকার ও বিভিন্ন গুজব বিষয়ে আইনের সুবিধা পাচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতেও প্রযুক্তির সুবিধা ভোগ করছে। ডক্টর অ্যাপস এ কল দিয়ে ২৪ ঘন্টা চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছে। প্রাকৃতিক বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রযুক্তির সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরে পূর্বের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশ এখন প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠছে। কৃষকরা জমিতে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন সমস্যা- সমাধানের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রকল্পেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রজাতি সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। সব জায়গায়ই যেন প্রযুক্তির উপস্থিতি।
সজীব ওয়াজেদ জয় এর প্রযুক্তি নিয়ে মহা পরিকল্পনা ও ভাবনা বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশে বেকারত্ব মোচনে অভাবনীয় সাফল্য এনে দিয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের বেকার ছেলে মেয়েরা পর্যন্ত অনেক অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছে। অনলাইন মার্কেটিং এর মাধ্যমে নিজেদের পন্য নিজেরাই বেচাকেনা করছে।
ঘরে বসে অর্ডার করেই পন্য পেয়ে যাচ্ছে। এতে করে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং এখন বেকারসহ অনেকের জন্য অর্থ উপার্জনের বিশাল হাতিয়ার। ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। আগামীতে ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর স্বর্গরাজ্য। শুধু ফ্রিল্যান্সিং নয় ওভার ও পাঠাও রাইড শেয়ারিং অ্যাপস ব্যবহার করে বেকার ও চাকুরীজীবীরা পর্যন্ত এক্সট্রা উপার্জন করছে। ফলে মানুষ অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি হিসেবে রুপান্তর হচ্ছে।
সজীব ওয়াজেদ জয় এর লক্ষ্যই হচ্ছে, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তরুণদের জন্য আত্ম- কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা এবং দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তৈরি করা। যাতে করে আমাদের তরুণরা সমগ্র বিশ্বে প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিতে পারে। যে বিষয় মানুষের হৃদয়ে গাঁথা থাকে তাকে কোনো ভাবেই দমানো যায় না। ঠিক তেমনিভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের হৃদয়েও প্রযুক্তি গাঁথা আছে। তাই কার সাধ্য আছে তাকে আটকানোর। সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দিবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার বক্তব্য দিয়ে লেখা শেষ করব। তিনি ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল ওয়েবিনার অনুষ্ঠানে বলেন, “আমাদের সরকারের, আমাদের নেতৃত্বের, আমাদের দেশের মানুষের একটি আত্নবিশ্বাস আছে, যে কোন ধরণের চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবেলা করতে পারব। যারা আমদেরকে মনে করে আমরা একটি দরিদ্র দেশ, আমরা কিন্তু একটা দরিদ্র দেশ না।
আমরা যখন কোন জিনিস বাস্তবায়ন করতে চাই, আমরা সেটা করে ফেলি। আমরা নিজেরাই পারি, নিজেদের মেধায় পারি, নিজেদের পরিশ্রমে পারি, আমাদের কারো কাছে হাত পেতে থাকতে হয় না। এই যে ডিজটাল বাংলাদেশ, এটা কিন্তু বাস্তবায়ন করা হয় সম্পূর্ণ আমাদের পরিকল্পনায়।“ সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে, প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র টেকসই উন্নয়নের বাংলাদেশ হবে। প্রত্যাশা সকলের। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
অমিতাভ চক্রবর্ত্তী রনি লেখক ও কলামিস্ট