‘তুই কয়টা গুলি করতে পারিস, আর আমি কয়টা পারি দেখবি’
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ এপ্রিল ২০১৬, ২:১০ অপরাহ্ণ“তুই কেন আমাকে নিরাপত্তা দিতে আসছিস? আমি কি তোর কাছে নিরাপত্তা চাইছি। তুই কি আমার নিরাপত্তা দিবি? তুই কয়টা গুলি করতে পারিস, আর আমি কয়টা গুলি করতে পারি তুই দেখবি?”
শনিবার ভোররাতে সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এক পুলিশ সসদ্যকে এভাবে শাসিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এছাড়াও উপমন্ত্রী জয় কর্তৃক সে পুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগেও জিডিও হয়েছে।
এক যুগ্ম সচিবের কক্ষে ভাংচুর চালানোর পাঁচ মাসের মাথায় এবার ঢাকার আশুলিয়া থানার এক উপপরিদর্শককে (এসআই) গালাগালি ও মারধরের শিকার হয়েছেন অভিযোগ তুলে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ‘ভুক্তভোগী’ এসআই মলয় কুমার সাহা।
জিডিতে বলা হয়, সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসার পথে শুক্রবার গভীর রাত আনুমানিক ২টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় ডিসি নার্সারির সামনের সড়কের সড়কদ্বীপের ওপর উঠে পড়ে উপমন্ত্রী জয়কে বহন করা তার ব্যক্তিগত গাড়ি।
এ সময় ওই এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আশুলিয়া থানার এসআই মলয় কুমার সাহা এগিয়ে গেলে তাকে উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন উপমন্ত্রী।
ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় সাবেক ফুটবলার জয় ওই এসআইকে বলেন, “তুই কেন আমাকে নিরাপত্তা দিতে আসছিস? আমি কি তোর কাছে নিরাপত্তা চাইছি। তুই কি আমার নিরাপত্তা দিবি? তুই কয়টা গুলি করতে পারিস, আর আমি কয়টা গুলি করতে পারি তুই দেখবি?”
তারপরও এসআই মলয় পুলিশ সদস্য হিসেবে তার দায়িত্ব পালনের কথা জানালে উপমন্ত্রী জয় উত্তেজিত হয়ে তাকে ‘আমি তোর চাকরি খেয়ে ফেলব’ বলে হুমকি দেন।
জিডিতে আরও বলা হয়, এরপর জয় দুর্ঘটনাস্থল থেকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী দূরপাল্লার খালেক এন্টারপ্রাইজের একটি বাসে উঠে পড়েন। গালিগালাজ সহ্য করেও চাকরি বাঁচাতে ও উপমন্ত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে এসআই মলয় বাসে উঠতে গেলে জয় তাকে বাসের মধ্যেই মারধর করেন।
এরপর উপমন্ত্রী গাবতলী পৌঁছে বাস থেমে নেমে একটি সিএনজি নিয়ে মিরপুর মাজার রোডের দিকে রওয়ানা দেওয়ার পর এসআই মলয় আশুলিয়া থানায় ফিরে আসেন।
এ ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে শনিবার বিকালে এসআই মলয় থানায় ওই জিডি করলেও পুলিশ সারাদিন ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ঘটনাটি ফাঁস হয়ে গেলেও আশুলিয়া থানার কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হয়নি।
এর আগে গত ১ নভেম্বর উপমন্ত্রী জয় জাতীয় যুব দিবসের এক অনুষ্ঠানের ব্যানারে অতিথি হিসেবে নিজের নাম লেখা নেই দেখে সচিবালয়ে গিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের কক্ষে ভাংচুর চালান বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নিয়ে পরদিন জয়ের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘নালিশ’ দেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। পরে ক্ষমাপ্রার্থনা করে সে যাত্রায় বেঁচে যান ফুটবলার জীবনে মাঠে পিস্তল নিয়ে ঢুকে পড়া সাবেক ফুটবলার ও বর্তমান এ উপমন্ত্রী।
. . . . . . . . .