রাজনীতিতে ফিরছেন না সোহেল তাজ
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জানুয়ারি ২০১৬, ৯:১২ অপরাহ্ণরাজনীতিতে ফেরার খবর নাকচ করে দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের সুযোগ্য পুত্র তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটানো সোহেল তাজ এ কথা জানান।
বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম আমার আবার রাজনীতিতে ফেরার বিষয়ে যে সংবাদ প্রচার করছে তা একেবারেই মিথ্যা।’
‘তাজউদ্দিন আহমেদ ও সাইয়েদা জোহরা তাজউদ্দিন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’-এর যাত্রা শুরুর জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন বলে জানান সোহেল তাজ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে এই মহৎ উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ এবং পথপ্রদর্শন আমাদের এই ফাউন্ডেশনের জন্য অমূল্য নির্দশন হিসেবে কাজ করবে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র জনগণের পথপ্রদর্শক নন, বরং তিনি বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের আদর্শ ও নীতির একজন প্রধান রক্ষক। তাই আমরা এই মহৎ কাজে তার সহযোগিতা এবং আশীর্বাদ কামনা করব এটাই তো স্বাভাবিক।’
ওই স্ট্যাটাসে তাজউদ্দিন আহমেদ ও সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অনেক সেবামূলক কাজ করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সোহেল তাজ।
তিনি বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আমার বাবার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করা অর্থাৎ দেশের জন্য এত বড় স্বার্থ ত্যাগের যে আদর্শ সেই আদর্শে বিশ্বাসী ছিলাম, আছি এবং থাকব।’
স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান সোহেল তাজ। বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতি, আমার পরিবার এবং এই ফাউন্ডেশনের জন্য যে ভালোবাসা, উদারতা এবং আমার প্রতি যে সমর্থন প্রদর্শন করেছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে গণভবনে যান সোহেল তাজ। দীর্ঘ দিন পর তাজকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে বুকে জড়িয়ে ধরেন মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই বোন সিমিন হোসেন রিমি ও মাহজাবিন আহমেদ মিমিও সোহেলের সঙ্গে ছিলেন।
পরে শেখ হাসিনার সঙ্গে সোহেল তাজের আবেগঘন সাক্ষাতের ছবি ফেসবুকে দেন মিমি। ‘ব্রাদার অ্যান্ড সিস্টার রিইউনিয়ন!!!’ শিরোনামে প্রথম দফায় গণভবনে সাক্ষাতের চারটি ছবি দেন তিনি, যাতে দীর্ঘ দিন পর সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী ও সোহেল তাজের আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ার বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। পরে গণভবনের আরও কয়েকটি ছবি ফেসবুকে দেন মিমি।
ওই সাক্ষাতের কয়েকটি ছবি ওই দিন রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর খবর ছড়ায় রাজনীতিতে ফিরছেন সোহেল তাজ। কিন্তু আজ (সোমবার) তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন।
প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ চারদলীয় জোট সরকার আমলে রাজপথে আন্দোলনে সক্রিয় থেকে অনেকের নজর কাড়েন।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সোহেল তাজ বিপুলভাবে বিজয় অর্জন করেন। সেসময় গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসন থেকে তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় সোহেল তাজকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করা হয়। এর পাঁচ মাসের মাথায় ২০০৯ সালেই তিনি পদত্যাগ করেন। ওই বছর ৩১ মে তিনি পদত্যাগ করে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন। কিন্তু তখন তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিন বছর পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি চিঠি দেন তিনি। পাশাপাশি তিনি পদত্যাগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারিরও আবেদন জানান। সেই সময় থেকে তার ব্যক্তিগত হিসাবে পাঠানো বেতন-ভাতার যাবতীয় অর্থ ফেরত নেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয় ওই চিঠিতে। এরপর ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিলে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন সোহেল তাজ। তার সংসদীয় এলাকা গাজীপুরের কাপাসিয়ার সংসদ সদস্য এখন তার বোন সিমিন হোসেন রিমি।
. . . . . . . . .