বেগম জিয়া দেশে ফিরলেই বিএনপিতে চমক!
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ নভেম্বর ২০১৫, ৯:০৭ অপরাহ্ণবিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফিরে আসার পর বিএনপিসহ এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। চমক থাকবে র্শীষ নেতৃত্বেও। র্শীষ পর্যায়ে দলের নীতির্নিধারনী ফোরামসহ জাতীয় নিবার্হী কমিটির সকল পর্যায়ে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি মহাসচিবের পদটি ভারমুক্ত করে পুর্ণাঙ্গ করা হবে। আসবে নতুন মুখ। এছাড়া দলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি গবেষণা সেল খোলা হবে। যা দলের ‘থিংক-ট্যাংক’ এর কাজ করবে। এই সেলে দলীয় ঘরানা সম্ভাব্য বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন সেক্টরের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা কাজ করবেন। পরিবর্তন আনা হবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং গুলশানে চেয়ারপারসন রাজনৈতিক কার্যালয়ের কাঠামোতে। দলটির সিনিয়র একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য মিলেছে।
জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লে জে (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, চেয়ারপারসন দেশে ফেরারপর দলের দুই র্শীষ নেতার মধ্যকার আলোচনার বিষয়টি আমরা জানতে পারবো। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, দল পুনর্গঠন তো করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। ইতিমধ্যে সারাদেশে বিএনপির পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলেছে। দলের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব আনতে হবে। সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেতৃত্বকে ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই। তাই তিনি দেশে ফিরে এসে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, স্ট্যান্ডিং কমিটি, উপদেষ্টাম-লীর সদস্য এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে এমন বেশ কিছু সদস্য আছেন, যারা বছরের পর বছর দলীয় কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। তাদের রেখে আগামী দিনে সক্রিয় রাজনীতিতে কোনো কাজ হবে বলে আমি মনে করি না। দেশে ফেরার পর এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
দলের সূত্র জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরকে পারিবারিক সফর বলা হলেও রাজনৈতিকভাবে এটাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দলীয় বিষয়ে করণীয় নিধার্রণে ইতিমধ্যে মা ও ছেলের মধ্যে একান্তে আলোচনা হয়েছে। অনেক গুরত্বপুর্ণ সিদ্ধান্তও সেখানে নেওয়া হয়েছে। যা আগামী দিনে দলকে নতুন প্লাটফর্মে দাড় করতে সাহায্য করবে। নতুন ফর্মেটে বিএনপিকে যে গোছানো হবে তার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া নিজেই।
সম্প্রতি লন্ডন প্রবাসী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই দেশে থাকার কারণে আমার অনেক বিষয়ে জানার সুযোগ হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা হয়েছে। কারণ এরআগে আমার কোনো দেশে এতোদিন ধরে থাকার সুযোগ হয়নি। তিনি বলেন, দলের প্রতি নিবেদিত, দলের সঙ্গে বেইমানি করেনি, করবে না, তাদেরই এবার আমরা বিভিন্ন জায়গায় নেব। তাদের সম্মানিত করতে চাই।
জিয়া পরিবার ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকাকালিন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা একেবারেই কম। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা এখন চলমান। সরকার যে মা ও ছেলেকে কোনো ছাড় দেবে না এটা ভেবে নিয়ে সামনে দিকে এগুচ্ছে বিএনপি। এজন্য বেগম খালেদা জিয়ার শারিরীক মানষিক ও দলীয় ভাবে সহযোগিতা দিতে তার পুত্রবধু ডা. জোবায়েদা রহমানকে রাজনীতিতে সক্রিয় করা হবে। আগামী জাতীয় কাউন্সিলে কিংবা তার আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে দায়িত্ব দেওয়া হবে তাকে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে চেয়াপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম বলেন, আমিও বিষয়টি শুনেছি। তবে ডা. জোবায়েদা রহমান রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন কিনা তা সুনির্দিষ্টভাবে আমি বলতে পারছিন না। তবে তিনি যদি রাজনীতিতে আসে তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তার মতো ক্লীন ইমেজের একজন মানুষ দলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যদি এমনটা হয় তাহলে আমরা তাকে স্বাগত জানাবো।
এদিকে লন্ডনে মা ছেলের মধ্যে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সেখানে সর্বাগ্রে স্থান পেয়েছে দলপুর্নগঠনের বিষয়টি। দুই নেতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপেক্ষাকৃত তরুণদের আনা হবে গুরুত্বপূর্ণ পদে। ফলে বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পর ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটিতে নয়টি পদেই নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে স্থায়ী কমিটির পাঁচ নেতা। আর সরিয়ে দেওয়া হতে পারে আরও চারজনকে। এছাড়া চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল বিলুপ্ত করে স্থায়ী কমিটির সমমর্যাদায় ৩০ সদস্যের নতুন দলের উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হবে। পরিবর্তন আসবে যুবদলসহ অঙ্গসংগঠনগুলোর কমিটিতে।
লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির একজন নীতিনির্ধারক বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া তার বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দল পুনর্গঠন নিয়ে কথা বলেছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আবারো কিভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায় তা নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সেখানে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে শুরু করে প্রতিটি স্তরে পরিবর্তনের কথা বলেছেন তারেক রহমান।আমাদের সময়.কম
. . . . . . . . .