সোহেলকে খুঁজে পায় না ‘ম্যানেজ’ পুলিশ!
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ নভেম্বর ২০১৫, ১০:২৮ পূর্বাহ্ণমতিঝিলের ঘরোয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের কিশোর কর্মচারী রিয়াদ হোসেনকে গুলি করে হত্যার বিষয়ে ‘নিশ্চিত’ হতেই অনেক সময় ব্যয় করে ফেলে পুলিশ। ততক্ষণে পরিস্থিতি প্রতিকূল বুঝে পালিয়ে যান হোটেল মালিক আরিফুর রহমান সোহেল। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রথমে ছিনতাইয়ের গল্প ও পরে গুলি করে হত্যার অভিযোগ পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিষয়টি স্পষ্টভাবে ‘বুঝতে বুঝতে’ই বুধবার ভোর হয়ে যায়। তখন থেকেই সোহেলকে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হয়। এদিকে নিহতের স্বজনদের সন্দেহ, প্রভাবশালী সোহেল টাকার বিনিময়ে পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করেছেন। তাই পুলিশ তাকেবাঁচানোর চেষ্টা করছে। তবে পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুলিশের ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার নুরুল আমিন বলেন, সোহেলকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে পুলিশের ওপর কোনো চাপ বা বাধা নেই। অভিযুক্ত ব্যক্তি যতই প্রভাবশালী হোক, আইনের দৃষ্টিতে সে অপরাধী। তাকে গ্রেফতার পুলিশ আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
রাজধানীর ওয়ারীর স্বামীবাগ এলাকার নির্মাণাধীন বাসায় মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘরোয়া হোটেলের কর্মচারী রিয়াদকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে ছিনতাইকারীদের গুলিতে নিহত হওয়ার গল্প ফাঁদেন সোহেল। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রিপন হোসেন বাদী হয়ে সোহেল, জসীম ও খবিরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। এর মধ্যে জসীমকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পাঁচ প্রত্যক্ষদর্শী সোহেলকে দায়ী করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
ওয়ারী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আলীম হোসেন শিকদার বলেন, মঙ্গলবার রাতে স্বামীবাগ এলাকায় টহলরত পুলিশের দল একটি গুলির শব্দ পায়। ঘটনাস্থলে গেলে সংশ্লিষ্টরা গুলির বিষয়টি অস্বীকার করেন। তখন কেউ আহত-নিহত হয়েছে বলেও জানা যায়নি। অন্যদিকে রিয়াদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মতিঝিলে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার কথা বলা হয়। পরে তার স্বজনরা স্বামীবাগে হত্যার অভিযোগ করেন। মতিঝিল থানা থেকে এ ব্যাপারে খবর আসে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হতে কিছু সময় চলে যায়। ভোর ৬টার দিকে পুলিশ সোহেলকে গ্রেফতারের চেষ্টা শুরু করে। তার শান্তিনগরের বাসাসহ সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। তবে ততক্ষণে তিনি পালিয়ে যান। তার সন্ধানে অভিযান অব্যাহত আছে। তিনি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে ঘটনার পর চার দিনেও অভিযুক্ত সোহেলকে গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিহতের স্বজনরা। নিহতের ভাই রিপন হোসেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থেকে ফোনে সমকালকে বলেন, চার দিনেও সোহেল গ্রেফতার না হওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। সোহেল টাকা দিয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করেছেন বলেও সন্দেহ করছেন তারা।
রিপন জানান, সোহেলের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি কোনো টাকা চান না। ‘খুনি’ সোহেলের ফাঁসি চান।
এর আগে হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের খালাতো ভাই মাইনুদ্দিন বলেন, ঘটনার রাতে তিনিই প্রথম পুলিশকে প্রকৃত ঘটনা জানান। তবে পুলিশ প্রথমে তাতে আমল দেয়নি। উল্টো তাকেও থানায় আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এর আগে সোহেল তাকে ফোন করে ছিনতাইয়ের মিথ্যা গল্প পুলিশকে বলার পরামর্শ দেন। তবে তিনি হোটেল মালিকের কথায় কান দেননি। . . . . . . . . .