আনসার আল ইসলামের পরবর্তী টার্গেট কে?

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ নভেম্বর ২০১৫, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ণএকই দিনে ৪ লেখক-প্রকাশক-ব্লগারের ওপর হামলা ও একজনকে হত্যার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় নিজেদের আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ দাবি করে তাদের পরবর্তী ‘টার্গেট’ কারা হবে তারও একটি তালিকা দিয়েছে ‘আনসার আল ইসলাম’ নামে এক জঙ্গি সংগঠন।
শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর ফায়সাল আরেফিন দীপনহত্যা এবং লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বরে প্রকাশনের আহমেদুর রশীদ টুটুল, রণদীপম বসু ও তারেক রহিমের ওপর জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করেছে তারা।
শনিবার রাত ৯টা ৩৬ মিনিটে মুফতি আব্দুল্লাহ আশরাফের নামে গণমাধ্যমে তিনটি বিবৃতি পাঠানো হয়। প্রথম বিবৃতিতে প্রকাশকদের হত্যা ও হামলার দায় স্বীকার, দ্বিতীয় বিবৃতিতে তাদের ‘অপরাধ’ ও তৃতীয় বিবৃতিতে আনসার আল ইসলামের পরবর্তী ‘টার্গেট’ কারা হবেন সে তালিকা দেওয়া হয়।
‘কে হবে আমাদের পরবর্তী টার্গেট’ এ শিরোনামের তৃতীয় বিবৃতিতে আট ধরনের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পরবর্তী সময়ে ‘টার্গেট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে আনসার আল ইসলাম।
বিবৃতিতে বলা হয়— আল্লাহ, রাসুল ও ইসলামকে হেয়কারী ও কটূক্তিকারী ব্যক্তি, কটূক্তিকারীদের বুদ্ধি-পরামর্শ ও অর্থ দিয়ে সাহায্যকারী ও রক্ষাকারী ব্যক্তি, ইসলামী শরীয়তের নিয়ম-কানুনে বাধা প্রদানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের ‘টার্গেট’।
বিবৃতিতে কারও নাম উল্লেখ না করে আনসার আল ইসলাম বলেছে, তাদের ‘টার্গেট’ হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা; কোনো এলাকার মেয়র, মোড়ল ও মাতব্বর; কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান; কোনো বিচারক, আইনজীবী ও চিকিৎসক; কোনো গল্পকার, ঔপন্যাসিক, কবি, বুদ্ধিজীবী, কোনো পত্রিকার সাংবাদিক ও সম্পাদক; নাট্যকার, প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পী ইত্যাদি।
বিবৃতিতে বলেছে, যারা নিজেদের বক্তৃতা বা বিবৃতির মাধ্যমে ইসলামি শরিয়তের বিরোধিতা করছে, ইসলামি শরীয়তকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে, যারা এই মুসলিম সমাজে বিভিন্ন প্রকার নগ্নতা-বেহায়াপনার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, যারা এদেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি-অর্থনীতিতে থেকে ইসলামি শরিয়তের ‘অবশিষ্টাংশটুকুও’ ছেটে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত এবং যারা ইসলামের আলোকে নিভিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত—তারাও তাদের পরবর্তী ‘টার্গেট’।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যারাই লেখনী, কথা ও কাজের মাধ্যমে আল্লাহ, রাসুল ও দ্বীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে— এমন সব ‘মুরতাদ’ ও ‘ইসলামের শত্রু’ই তাদের টার্গেট হবে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, কোনও সাধারণ মুসলমান তাদের টার্গেট নয়। কোনও সাধারণ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কিংবা আল্লাহর দ্বীনের সঙ্গে শত্রুতা করছে না তারাও তাদের টার্গেট নয়।
উল্লেখ্য্য, শনিবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর লালমাটিয়ার সি ব্লকে বইয়ের প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের কার্যালয় এবং শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের জাগৃতির অফিসে দুই প্রকাশকসহ চারজনের ওপর হামলা হয়। হামলায় জাগৃতির প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন নিহত হন।
টুটুল ও দীপন দুজনই বিজ্ঞান লেখক, গবেষক, ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশক।
. . . . . . . . .