সিলেটে ছাত্রলীগের আগুনে দগ্ধ ছাত্রাবাস এখন জঙ্গলবাড়ি!
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০১৫, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণসিলেটের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম সিলেট সরকারী কলেজ। ২০১০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি শিবির তাড়ানোর নামে কলেজের একমাত্র ছাত্রাবাসটিতে আগুন দিয়েছিল ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। ওই ঘটনার পর শিবিরের পাশাপাশি আতঙ্কে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রাবাস ছেড়ে যান। এরপর থেকে দগ্ধ ছাত্রাবাসটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছরেও ছাত্রাবাসটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ না নেয়ায় এটি জঙ্গলবাড়িতে পরিণত হয়েছে। ছাত্রাবাস চালু না হওয়ায় দূরের শিক্ষার্থীদের থাকতে হচ্ছে নগরীর বিভিন্ন স্থানে মেস ও বাসা ভাড়া করে।
জানা যায়- সিলেট সরকারী কলেজের তিনতলা ছাত্রাবাসে মোট ৬২টি কক্ষ রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগেই থাকতেন ছাত্র শিবির নেতাকর্মীরা। ছাত্রাবাস থেকে সংগঠনের কার্যক্রম ও পরিচালনা করা হতো। শিবির নেতাকর্মীদের আধিক্যতার কারণে ছাত্রাবাসে কোনঠাসা ছিল ছাত্রলীগ। কয়েকবার ছাত্রাবাস দখলের চেষ্টা চালিয়েও তারা ব্যর্থ হয়।
২০১০ সালের ১৮ ফেব্র“য়ারি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে হামলা চালায় ছাত্রাবাসে। এসময় ছাত্রলীগ ও শিবির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে শিবির নেতাকর্মীরা পিছু হটে ছাত্রাবাস ত্যাগ করেন। এরপর ছাত্রলীগ নেতকর্মীরা শিবির নিয়ন্ত্রিত রুমগুলোতে আসবাবপত্র জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে পুড়ে যায় পুরো ছাত্রাবাস। এরপর থেকে কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসটি সংস্কার করে খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসলেও গত সাড়ে ৫ বছরেও এ দাবি পূরণ হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে- ছাত্রাবাসটির মূল ফটকে বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভবনের দেয়ালে গজিয়েছে লতাপাতা। ঝোপঝাড় ঘিরে রেখেছে ছাত্রাবাসটি। দূর থেকে দেখলে ছাত্রাবাসটি মনে হচ্ছে জঙ্গলবাড়ির মতো।
সিলেট সরকারী কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আবদুল কাদির জানান- ছাত্রাবাসটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের থাকার জায়গা নয়। এর সাথে অনেক শিক্ষার্থীর আবেগ-অনুভূতি জড়িয়ে আছে। এই ছাত্রাবাসে থেকে পড়ালেখা করেছেন এমন অনেকেই আজ দেশের আলোকিত মানুষ। ছাত্রাবাসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় দূরের শিক্ষার্থীরা আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে তিনি অবিলম্বে ছাত্রাবাসটি সংস্কার করে পুণরায় খুলে দেয়ার দাবি জানান।
কলেজের অধ্যক্ষ আশফাক আহমদ শীমা বলেন- কলেজের একমাত্র ছাত্রাবাসটি সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে কয়েকবার চিঠি লিখা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সংস্কার না করে ছাত্রাবাসটি খুলে দেয়াও সম্ভব নয়। কলেজের পক্ষ থেকে ছাত্রাবাসটি সংস্কার করে খুলে দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
. . . . . . . . .