ছাত্রলীগের সভাপতি জানেন না মিছিলের খবর
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ অক্টোবর ২০১৫, ১০:০৬ অপরাহ্ণজাতিসংঘ থেকে “চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ” পদক প্রাপ্তির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মাঠিতে প্রথম সিলেটে আসেন । তার আগমনের দিন এ পদক প্রাপ্তির জন্য শুভেচ্ছা বা স্বাগত জানিয়ে মহানগর ছাত্রলীগ কোন মিছিল করেনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার মহানগরীতে হঠাৎ করে মহানগর ছাত্রলীগের নামে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল দেয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ও অন্য কয়েকজন নেতা এ মিছিলের পরোক্ষ আয়োজক ছিলেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। প্রাধনমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে মূল সংগঠন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আসন্ন দূর্গা পূজার পর বড় কর্মসূচির পরিকল্পনা ছিল। এ পরিকল্পনাকে পাশ কাটিয়ে একজন নেতার প্ররোচনায় হঠাৎ করে মহানগর ছাত্রলীগের নামে একাংশের মিছিলে নতুন করে সিলেট আওয়ামী লীগে দ্বন্ধ দেখা দিচ্ছে।
আর এই দ্বন্ধের মূলে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। তিনি ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে এককভাবে নানা কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম তুষার ও সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাশ অনিককে নিয়ে নগরীতে একটি শোডাউনও দিয়েছেন। তবে ছাত্রলীগের শোডাউনের কথা জানেনা সিলেট আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা। এতে সিলেট আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নতুন মেরুকরণের সৃস্টি হচ্ছে দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র মতে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার “চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ” পদক পাওয়া গৌরব অর্জন করেছেন। দেশে ফেরার পথে প্রধানমন্ত্রী সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে শুভেচ্ছা জানান। তবে এ উপলক্ষ্যে আলাদা কোন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। সরতীয় দূর্গা পুজার পরে দলীয়ভাবে অনুষ্ঠান করার করা কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী।
সূত্র মতে, বৃহস্পতিবার কাউকে না বলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ আহমদের নির্দেশনায় মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম তুষার ও সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাশ অনিকের নেতৃত্বে নগরীতে একটি মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়েছেন আসাদ উদ্দিন আহমদ। তবে ওই অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা আসেননি।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল বাসিত রুম্মান জানান, আজ আমাদের কোন কর্মসূচি ছিল না। তবে শুনেছি ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী নগরীতে মিছিল দিয়েছেন। এমন অগুছালো মিছিলের খবর কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে।
শুধু ছাত্রলীগ সভাপতি রুম্মানই নয়, আজকের আনন্দ মিছিলের কথা জানেন না সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
এ ব্যাপারে সিলেট মাহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ তাদের কর্মসূচি বাস্তাবায়ন করে। তবে তাদের অনুষ্ঠানে সব সময়ই তিনি অংশ গ্রহণ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কখনো কোন ধরনের গ্রুপিং রাজনীতি করিনি। করবো না। কারণ আমি বঙ্গবন্ধুর আর্দশের রাজনীতি করে আসছি। বাকি জীবনও এভাবে কাজ করে যাব।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আজ ছাত্রলীগের কোন কর্মসূচি ছিলো কিনা তা আমার জানা নেই। প্রধামন্ত্রীর “চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ” পদক সম্পর্কে তিনি বলেন, পদক পেয়ে প্রধানমন্ত্রী সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে ১ ঘন্টা যাত্রা বিরতী করেছিলেন। তখন আমরা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। তবে দুর্গা পূজার পরে দলীয় ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ ওই নেতা।
সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘ পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার “চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ” পদকে ভূষিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আনন্দ মিছিলের পিছনে রয়েছে আসাদ উদ্দিনের নতুন কিছু পরিকল্পনা। এর মধ্যে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি সম্ভাব্য পার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তাই তিনি আগে থেকে নিজের বলয় তৈরীর জন্য ছাত্রলীগের একটি অংশকে ব্যবহার শুরু করেছেন।
তবে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিনের ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
. . . . . . . . .