মৌসুমেও পেঁয়াজের দামে আগুন, সবজিতে অস্বস্তি
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ
বাজারে নতুন পেঁয়াজের পাশাপাশি পুরনো পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক। কিছুদিন পর নতুন পেঁয়াজের সরবরাহও বাড়বে। তা সত্ত্বে¡ও দেশি পেঁয়াজের কেজি ১২০ টাকার আশপাশেই বিক্রি হচ্ছে। যা কিনে খেতে কষ্ট হচ্ছে নিম্ন ও খেটে খাওয়া মানুষের। চাপে রয়েছেন মধ্যবিত্ত ভোক্তারাও। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।
পেঁয়াজের বাজারে এমন অস্থিরতা সামাল দিতে সরকার পণ্যটি আমদানির হুশিয়ারি দিলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ দোকানে দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও কোনো কোনো দোকানে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে।
খোদ ব্যবসায়ীরাই বলছেন, বছরের এমন সময় অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম অতিরিক্ত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এর পেছনে মধ্যস্বত্বভোগীরাই দায়ী। তারা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে কেনা পেঁয়াজ মজুদ করে এখন বেশি দাম বাড়িয়ে বাজারে ছাড়ছেন। পাইকারি বাজারে দাম বেশি থাকায় খুচরা বিক্রেতাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।? ক্রেতাদের অভিযোগ, নজরদারির অভাবে বাজারে নৈরাজ্য চলছে। এতে কৃষক এবং ভোক্তা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। লাভাবান হচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
কদমতলীর সাদ্দাম মার্কেটের একজন ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী ফারিহা আফরীন বলেন, রান্নায় পেঁয়াজ একটি দরকারি পণ্য। অথচ প্রতিবছরই পণ্যটি নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করেন। এবারও তাই হচ্ছে। মাঝে শুনলাম পাইকারিতে দাম ওঠানামা করেছে। অথচ বাজারে সেই ১৫০-১২০ টাকা দর ধরে রেখেছে খুচরা বিক্রেতারা। এতেই বোঝা যায়, বাজারে কোনো নজরদারি নেই। যে যেভাবে পারছে সুযোগ নিয়ে ভোক্তাদের লুটে নিচ্ছে।
কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্যামবাজারের একজন পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, বছরের এমন সময় পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে বাড়ার পর তা কমতে সময় লাগে। মূলত নতুন পেঁয়াজ পুরোদমে না ওঠা পর্যন্ত দাম কমে না। নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে আরও পনেরো-বিশ দিন বাকি। পাশাপাশি বিদেশি পেঁয়াজ আমদানিও কম। সব মিলিয়ে বাজার চড়া। এদিকে শীতের মৌসুমের সবজি
ওঠার পরও তরিতরকারির দাম সেভাবে কমছে না। বাজার ভরা ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, বেগুন, লাউ, মুলাসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি। অথচ দাম শুনেই অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে ভোক্তাদের।
বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লাউয়ের পিস ৬০-৮০ টাকা। বেগুনের কেজি এখনও ১২০ টাকা। প্রতি কেজি শিম এখনও ১০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে। একই দাম বরবটিরও। ঢ্যাঁড়সসহ কয়েক পদের দাম ৮০ টাকা। এ ছাড়া পটোল, লতি, ঝিঙাসহ অন্যান্য সবজির কেজি ৭০ টাকা। নতুন মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৮০ টাকা। মুলার কেজিও ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর কেজি এখনও ১২০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ বাজারের ক্রেতা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, শীতের সবজি কোথায় কম দামে পাওয়ার কথা, সেখানে এখনও ৭০-৮০ টাকার নিচে কিছুই মিলছে না। দুই কেজি সবজি কিনতেই তো পকেটে টান পরে যাচ্ছে। উচ্চমূল্যের বাজারে তরিতরকারি কিনতে যদি পকেটে টান পড়ে তা হলে অন্য সব পণ্যের খরচ কিভাবে সামাল দেব। টিকে থাকাই তো কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বাজারে সবজির খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজারেই দাম চড়া। তা ছাড়া ভালো মানের সবজি আনতে গেলে দামও বেশি পড়ে। তাই খুচরাতেও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। তবে, তারা আশা প্রকাশ করেন, ডিসেম্বরে শীত বাড়লে সবজির সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দামও কমে আসবে।




