কিলিং মিশনে অংশ নেয় ছাত্রলীগের পাঁচ ক্যাডার!
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ অক্টোবর ২০১৫, ৮:৪৩ পূর্বাহ্ণমদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের ‘কর্মী’ আলী হায়দার তালুকদার ওরফে আবদুল আলী হত্যা মিশনে অংশ নেয় ছাত্রলীগের পাঁচ ক্যাডার। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে আলীকে তারা। দিন-দুপুরে ক্যাম্পাসে শ’শ শিক্ষার্থী- শিক্ষকের সামনে এ নির্মম, নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিরব দর্শকের মতো ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন।
তবে, একজন শিক্ষক প্রতিবাদি হয়ে উঠেন। তিনি আবদুল আলীকে বাঁচানোর শেষ চেষ্ঠা করেন। এসময় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা তাকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে আলীকে আরও হিংস্রভাবে কোপাতে থাকে। একপর্যায়ে ক্যাডারারা একই গ্রুপের ছাত্রলীগের সিনিয়রদের সঙ্গে প্রধান ফটক দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে চলে যায়।
নৃশংস এমন খুনের বর্ণনা দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শিক্ষার্থী। তবে, পরবর্তী পরিণতির আশঙ্কায় তারা তাদের নামা প্রকাশ না করার অনরোধ জানিয়েছেন।
হত্যারকাণ্ডের শিকার হওয়া আলী ও হত্যায় জড়িতরা ছাত্রলীগের বিধান গ্রুপের নেতাকর্মী বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে ঘটনার পর ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে নগরীতে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ছাত্রলীগ ক্যাডার পূর্ণজিৎ দাস (২১) ও রুহুল কান্তি দে। তাদেরকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পূর্ণজিৎ দাস আবদুল আলী খুনের দায় স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে। সেই সঙ্গে কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড এবং এই হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত তাদের নামা ঠিকানাও জানিয়েছে পুলিশকে।
পুলিশের একাধিক সূত্র এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল আলীকে ছুরিকাতঘাত করার কথা স্বীকার করে পূর্ণজিৎ। এ ঘটনায় পূর্ণজিৎ অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। পুলিশ এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই-বাছাই করে দেখছে।
খুনিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে রাজনৈতিক মহলের কোনো ধরণের চাপ-তদাবির নেই বলেও দাবি করেন ওসি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে মদমমোন কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী প্রণজিতসহ কয়েক জনের সঙ্গে সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় আলীর। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বুধবার সকাল থেকে নিজ দল ও গ্র“পের কর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিল আবদুল আলী। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একাডেমিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় বসে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় সেখানে হাজির হয় প্রণজিতসহ অন্যরা। তারা আবদুল আলীর সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে প্রণজিতসহ চার/পাঁচজন তাকে বুক ও পেটে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। আবদুল আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আবদুল আলী। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন আবদুল আলীর পিতা আকলিস আলী ও মা কুলসুমা বেগম। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ছুরিকাঘাতের ফলে আবদুল আলীর হার্ট ছিদ্র হয়ে গেছে। ফলে তার শরীর দিয়ে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হয়। তাকে বাঁচাতে ১০ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল পৌনে ৩টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। তার মৃত্যুর পর হাসপাতালে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।
. . . . . . . . .