পূজার বাজারে করোনার প্রভাব : হতাশায় সিলেটের ব্যবসায়ীরা

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ অক্টোবর ২০২০, ৬:২৬ অপরাহ্ণস্টাফ রিপোর্ট
আগামী ২২ অক্টোবর ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। অথচ সিলেট নগরে এখনও নিরবতা। আমেজ নেই পূজার। করোনা মহামারির এই সময়ে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মতো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছেও পূজা ‘নিরানন্দের’ উৎসব। তাই তো বিপণিবিতানগুলোতেও বিকিকিনি নেই তেমন। এর আগে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা সংকটময় সময়ে ‘নিরানন্দে’ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাটলেও দুর্গাপূজায় সে লোকসান কিছুটা পুষিয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পূজায়ও মিলছে হতাশা।
তবে এক্ষেত্রে অনেকটা ভালো কেনাবেচা চলছে অনলাইনে। নানা নামে ফেসবুক পেজ খুলে পোশাক ও বিভিন্ন পণ্যের ছবি দিয়েই চলছে কেনাবেচা। এ ক্ষেত্রে নারীরাই বেশি এগিয়ে। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে সিলেটের নারীদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার স্বপ্ন বাস্তবায়ন যেন সহজ হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে সিলেট নগরীর শুকরিয়া মার্কেট, মিতালি ম্যানশন, মধুবন সুপার মার্কেট, ব্লু ওয়ার্টার শপিং সিটি ও ছেলেদের পোশাকের জন্য পরিচিত মার্কেট কাজী ম্যানশন ঘুরে দেখা যায় নিরবতার দৃশ্য। দোকানের কর্মচারীরা কেউ কেউ মোবাইলে গেমস খেলে না হয় ফেসবুক ব্রাউজ করে অলস সময় পার করছেন। অন্যান্য বছর এমন সময় বিপণিবিতানগুলোতে ভিড় লক্ষণীয় থাকলেও এবার উল্টো চিত্র।
এদিকে ঈদে সিলেটের লামাবাজারস্থ মণিপুরি কাপড়ের দোকানগুলোতে বিকিকিনি খুব একটা না হলেও পূজায় থাকে উপচেপড়া ভিড়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থাকে ক্রেতাদের সমাগম। সকল বয়সী নারীদের পোশাকে আকর্ষণীয় সব সংগ্রহ নিয়ে সাজানো হয় দোকান। তাই পূজা উপলক্ষে মণিপুরি কাপড়ের দোকানগুলোতে লোকবলও বাড়াতে হয় অন্যান্য বছর। কিন্তু এবার যেন ক্রেতাদের অপেক্ষা। পূজা উপলক্ষে বেশ ভালো সংগ্রহ থাকলেও নেই ক্রেতা। সাধারণ সময়ের তুলনায় মাত্র ৫ শতাংশ বিক্রি বাড়লেও শেষের দিকে কিছুটা আশানুরূপ বিক্রি হবে কি না তা নিয়েও অনিশ্চয়তায় ব্যবসায়ীরা। কথা হয় লামাবাজার এলাকার জালালাবাদ মণিপুরি আড়ং এর ম্যানেজার সাঈদ আহমদের সাথে। তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘সময় ঘনিয়ে আসছে, কিন্তু বিক্রি মোটেও নেই। নিয়মিত পূজায় ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ বিক্রি বাড়লেও এবার মাত্র ৫ শতাংশ বেড়েছে। উৎসবগুলোর মাঝে আমাদের মূল ব্যবসা হয় দুর্গাপূজা আর বৈশাখে। একমাস আগ থেকেই ব্যবসা জমতে শুরু করে। কিন্তু এবার কিছু বুঝতে পারছি না। করোনার কারণে মানুষ অভাবে আছে। তাই হয়তো মানুষের মাঝে আমেজটাও নেই।’
মন্দা ভাব জিন্দাবাজারেও। লামাবাজার এলাকার মণিপুরি দোকানগুলোতে ৫ শতাংশ বাড়লেও বিক্রি নেই জিন্দাবাজারে। ব্লু ওয়ার্টার শপিং সিটির ‘নিউ কসমেটিক্স’ নামক দোকানের মালিক কাওসার হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘মোটেও বিক্রি নেই। এবার পূজা আসছে বলে মনে হচ্ছে না। দুই ঈদ গেল, এখন পূজাও যাবে। কি আর করার?’ সিলেট নগরীর নয়াসড়ক এলাকার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাকের শোরুমগুলোর অবস্থাও একই। কোথাও পূজা উপলক্ষে নেই তেমন বিকিকিনি।
. . . . . . . . .