শত্রুতা ভুলে মমতা-মোদির সমঝোতা

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৩ অপরাহ্ণনেপালের সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের জেরে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকিতে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছেন মমতা।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পশ্চিমবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি জেলার ‘চিকেন’স নেক’ এলাকায় ভারতের সঙ্গে নেপালের প্রায় ১০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্ত ঘিরে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়তে থাকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খবর এনডিটিভির।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মমতা বলেন, এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইস্যু এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোর ব্যাপারে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুগুলোতে আমরা এক।
উল্লেখ্য, সরকারের দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ৯ সেপ্টেম্বর নেপালে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম (জেন জি) বিক্ষোভ শুরু করে। মাত্র দুদিনের মাথায়, ১১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে এবং সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরদিন সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
যদিও নতুন সরকার গঠিত হয়েছে, দেশটির সার্বিক পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এতে শিলিগুড়ি সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের ঝুঁকি বাড়ছে। পাশাপাশি ভারতে নকশালপন্থী মাওবাদী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হলেও নেপালে তাদের বেশ কয়েকটি শক্তিশালী সংগঠন রয়েছে, যেগুলো সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানেও প্রভাব বিস্তার করেছে। ফলে সীমান্তবর্তী এলাকায় নকশালপন্থি রাজনীতি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
মোদির সঙ্গে বৈঠকে দু’টি বড় সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথমত, এখন থেকে শিলিগুড়ির ভারত-নেপাল সীমান্ত পাহারায় ভারতের নিয়মিত সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর পাশাপাশি আধাসামরিক বাহিনী সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) মোতায়েন থাকবে। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্যের আদান-প্রদান আরো জোরদার করা হবে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস একে অপরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি নিজেদের শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলতে চাইছে, তবে তৃণমূলকে প্রধান বাধা হিসেবে দেখছে তারা। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের সম্পর্ক সবসময়ই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ থেকেছে। কিন্তু নেপালের অভ্যুত্থান-পরবর্তী নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে মমতা ও মোদি এবার একই অবস্থানে দাঁড়ালেন।