সিলেটে সাদাপাথর লুটকারীদের ধরতে মাঠে নামছে দুদক

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ
সিলেটের সাদাপাথর লুটকারীদের ধরতে এবার মাঠে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক। লুটের অভিযোগ তারা প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করবে। আর কাজটি করবে দুদকের সিলেট জেলা সমন্বিত কার্যালয়।
সোমবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সাদাপাথর লুটের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য কমিশন অনুমোদন দিয়েছে। লিখিত আদেশ সিলেটে পৌঁছামাত্র জেলা সমন্বিত কার্যালয় কাজ শুরু করবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বিষয়টি দুদক খুবই গুরুত্বসহকারে দেখছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট বা লুটপাটকারীদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে জড়িত প্রত্যেকের আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ১৩ আগস্ট দুদক সিলেট কার্যালয় সাদাপাথরে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায়। এর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তারা প্রধান কার্যালয়ে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাঠায়।
প্রতিবেদনে লুটপাটে জড়িতদের চিহ্নিত করে অভিযোগটি অনুসন্ধানের অনুমোদন চাওয়া হয়েছিল। ওই দিন সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে বসে সিলেটের জেলা প্রশাসন। আর সেদিন মধ্যরাত থেকে পাথর উদ্ধারে শুরু হয় যৌথ বাহিনীর অভিযান। সম্প্রতি সিলেট জেলা প্রশাসন ২৮ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধারের দাবি করেছে।
এ ব্যাপারে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা, দুদকের প্রতিবেদনের বরাতে একটি জাতীয় গণমাধ্যমে গত ২১ আগস্ট ‘সিলেটের সাদাপাথর লুট, ৮০ কোটি টাকা কমিশন ডিসি-এসপির দপ্তরে’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদনে পাথর লুটপাটে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন স্থানীয় প্রশাসনের প্রায় সব স্তরের কর্মকর্তা। বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), সহকারী কমিশনার (ভূমি), পুলিশ সুপার (এসপি), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং কোম্পানীগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত চারজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও (ইউএনও) সরাসরি মদদ ছিল।
এছাড়া টাকার ভাগ পেয়েছেন জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও পুলিশের বিশেষ ইউনিট পুলিশ ইন্টার্নাল ওভারসাইটের (পিআইও) দুজন কর্মকর্তা। ট্রাকপ্রতি পুলিশ ১০ হাজার টাকা আদায় করতো। বিজিবির সংশ্লিষ্টতার তথ্যও মিলেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে। সব মিলিয়ে ৪ কোটি ঘনফুট পাথর লুটপাটে প্রায় ৮০ কোটি টাকা কমিশন ঢুকেছে স্থানীয় প্রশাসনের পকেটে। যদিও সিলেটের জেলা প্রশাসন ও এসপি তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
এছাড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আওয়ামী লীগের ৩১ নেতাকর্মীসহ ৪২ জন সরাসরি জড়িত থাকার তথ্যও পেয়েছে দুদক।