জনতার কামরান , জনতার হৃদয়ে

আব্বাস উদ্দিন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জুন ২০২৫, ৫:১৩ অপরাহ্ণ
- ১৫ই জুন ২০২০ সিলেট শহরের মানুষ শোকে স্তব্ধ,বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল- সিলেটের ঘরে ঘরে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া।
- সিলেট বাসী সেদিন হারিয়ে ছিল অসম্ভব জনপ্রিয় এক জননেতা কে। চিরতরে হারিয়ে ছিল তাদের প্রানের মানুষ,পরম আত্মার আত্মীয় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা মেয়র জননেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান কে।
জননেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ছিলেন দলমত নির্বিশেষে সিলেটের সকল মানুষের অভিভাবক। তিনি ছিলেন একজন আপাদমস্তক বিনয়ী, সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও গ্রহণযোগ্য রাজনীতিবিদ এবং জনদরদী জননেতা।
বদর উদ্দিন আহমদ কামরান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে মানব সেবা কে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহন করেছিলেন।
তিনি ছিলেন সিলেটের আওয়ামী রাজনীতির প্রান পুরুষ, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সহচর।
সিলেটে অনেক মন্ত্রী এমপি হয়েছেন ভবিষ্যতেও হবেন- সকলের প্রতি সম্মান রেখে বলছি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের মতো দলমত নির্বিশেষে সিলেট বাসীর সত্যিকারের অভিভাবক কিংবা বিশ্বস্ত ঠিকানা হতে পারবেন কিনা আমার সন্দেহ আছে।
সিলেটের মানুষ প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক সামাজিক সংকটে জননেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের অভাব অনুভব করে।
সিলেট পৌরসভার কাউন্সিলর থেকে শুরু করে পৌরসভার চেয়ারম্যান ও পর পর দুইবার সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে মানুষ তাকে নির্বাচিত করেছে পরম ভালোবাসায়।
আমৃত্যু তিনি সিলেট বাসীর পাশে থেকে মানুষের সেবা করে তাদের ভালোবাসার প্রতিদান দিয়ে গেছেন।
বদর উদ্দিন আহমদ কামরান সিলেটের একমাত্র নেতা যার বাসায় কোন গেইট ছিলনা।তাঁর বেডরুম পর্যন্ত ছিল সাধারণ মানুষ সহ নগরবাসীর অবাধ যাতায়াত।
তিনি ছিলেন আঞ্চলিক নেতা, কিন্ত পরিচিতি ছিল জাতীয় নেতার, বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকার রাজনৈতিক সচেতন মানুষ এক নামে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান কে চিনত এবং জানত।
যে কোন নির্বাচনে জননেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের বক্তৃতা আজো সিলেট বিভাগের মানুষ মিস করে। ইউনিয়ন পরিষদ , উপজেলা পরিষদ, পৌর নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন বলুন কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচন হোক প্রত্যেক নির্বাচনে প্রার্থীরা তাদের পথসভা কিংবা জনসভায় বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের বক্তব্যের মাধ্যমে তাদের নির্বাচনী বৈতরণী পার হতেন।
জননেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান আমাদের প্রিয় কামরান ভাইয়ের সাথে কতো স্মৃতি কতো কথা লিখে শেষ করা যাবেনা।সুসময়ে দু:সময়ে ডাকতেন পরামর্শ করতেন, তাঁর বয়সে আমরা অনেক ছোট হলে ও আমাদের মতামত কে সম্মান করতেন,গুরুত্ব দিতেন।
তাঁর সাথে অসংখ্য স্মৃতি মনের দরজায় কড়া নাড়ে।
কামরান ভাইয়ের সাথে আমার শেষ কথা হয় তাঁর মৃত্যুর কয়েকদিন আগে, তিনি তখন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাসায় চিকিৎসাধীন- আমি ফোন দিছি তিনি নিজে ফোন ধরলেন, শরীরের অবস্থা জানতে চাইলে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বললেন- আমি মনে হয় বাচতাম না রে ভাই- দোয়া করিও রে ভাই- আমি সেদিন শান্তনা দেবার ভাষা পাইনি।
শেষ কথা বললেন, “আমি মরি গেলে তোমরা আমার বাসা খানতাত সবসময় আইও- মাইনষে যাতে খয় ইটা আওয়ামী লীগের বাসা”।
কামরান ভাইর সাথে আমার শেষ কথা।
তারপর তিনি সিলেট সদর হাসপাতাল হয়ে ঢাকা সিএমএইচ।
তারপর লাশ হয়ে ফিরলেন তাঁর প্রিয় সিলেট নগরীতে।
সিলেটের মানুষ কে শোকের সাগরে ভাসিয়ে মানিকপীর (র:) কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন সিলেট বাসীর প্রিয় সন্তান বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
হে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের কামরান ভাইকে জান্নাতের উচ্চ আসনে আসিন কর- আমিন।
সিলেটসংবাদ/হা