সিলেটে আহত-নিহতদের নাম ওঠাতে হয়রান পরিবার তালিকায় নাম আসেনি অনেকের
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেছে। আহত-শহীদদের পরিবারে কান্না থামেনি এখনও। কেউ কাঁদছে সন্তান হারিয়ে, কেউ স্বামী হারিয়ে, কেউ বাবার শোকে, কেউ আবার হাত পা চোখ হারিয়ে , অনেকে আবার ঢাকার নিটর (NITOR) হাসপাতালে আবার কেউ পা হারিয়ে পঙ্গুত বরন করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেডে নীরবে কাঁদছে, । স্বজন হারানোর বেদনার সঙ্গে কারও কারও মনে যুক্ত হয়েছে ‘আক্ষেপ’। এ আক্ষেপের কারণ– এতদিনেও আহত-শহীদের তালিকায় জায়গা না হওয়া এবং সরকারি সহায়তা না জোটা। ইতোমধ্যে অভ্যুত্থানে আহত-শহীদদের প্রথম ধাপের তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তালিকায় রয়েছে ৮২৬ শহীদের নাম ও আহতদের তালিকায় ১১ হাজার ৫৫১ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। । নিহত এর মধ্যে ১২ জন সিলেটের। এই জেলার নিহত ৪ জন ও আহত ৮ জনের নাম তালিকায় ওঠেনি। সহায়তা ও নাম তালিকাভুক্তির জন্য বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছে তাদের পরিবার; কোনো অগ্রগতি নেই। কেউ কোনো খোঁজও নেয় না তাদের। এতে হতাশ নিহত ও আহতদের পরিবার।
শহীদের তালিকায় না ওঠা একটি নাম নাহেদুল ইসলাম। গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের ইসলামাবাদের উছমান আলী ও শফিকুন নেছা দম্পতির সন্তান তিনি। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে নাহেদুল বড়। বাবা অসুস্থ হওয়ায় অল্প বয়সেই পরিবারের হাল ধরতে দিনমজুরি শুরু করেন। ২২ বছরের এই যুবক গত ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে গুলিতে প্রাণ হারান। এর পর কেটে গেছে পাঁচ মাস। স্থানীয় এক ইউপি সদস্য তাঁর পরিবারকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন। এ ছাড়া কোনো সহায়তা পায়নি দরিদ্র পরিবারটি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা শফিকুন নেছা বলেন, গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় নাহেদুলের বন্ধু সোহাগের মা ফোন করে জানান, সে সোনারহাট ক্যাম্পের সামনে গুলি খাইছে। পরে হাসপাতালে গিয়ে তার লাশ পাই। তিনি জানান, নাহেদুলের মৃত্যুর পর সহায়তা ও নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে আবেদন করেছিলেন অসুস্থ বাবা উছমান আলী। ইউএনও অফিসে ঘুরেছেন বেশ কয়েকবার। কিন্তু এখনও কিছু জানানো হয়নি।
শফিকুন নেছা যে ক্যাম্পের কথা বলছিলেন, সেটি গোয়াইনঘাটের সোনারহাট বিজিবি ক্যাম্প। এই ক্যাম্পের সামনে ৫ আগস্ট বিজিবির গুলিতে প্রাণ হারান নাহেদুলসহ তিনজন। অন্য দু’জন হলেন– অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সিয়াম আহমদ রাহিম (১৪) ও ব্যবসায়ী সুমন মিয়া (২৫)। তাদের নামও ওঠেনি শহীদের তালিকায়।
উপজেলার পান্তুমাই গ্রামের ফখর উদ্দিন ও শিরিনা বেগম দম্পতির ছেলে সিয়াম আহমদ রাহিম। শিরিনা জানান, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবরে তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে বিজয় মিছিল যাচ্ছিল। এতে রাহিমও যোগ দেয়। কিছুক্ষণ পর খবর আসে, সে বিজিবির গুলিতে মারা গেছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে ৭ অক্টোবর ঢাকায় একটি অনুষ্ঠান করে। সেখানে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ শিশুদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকার চেক ও ক্রেস্ট দেন উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশীদ। এর বাইরে কোনো সহায়তা মেলেনি।
রাহিমের চাচা আলীম উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মিছিলকারীদের সংঘর্ষে রাহিম গুলিবিদ্ধ হয়। নাহেদুল ও সুমনের লাশ ঘটনাস্থলেই পাওয়া যায়। তবে রাহিমের লাশ ৮ আগস্ট পার্শ্ববর্তী পিয়াইন নদীতে ভেসে ওঠে। তার নাম শহীদের তালিকায় তোলার জন্য জেলা প্রশাসক, ইউএনও, শিশু ও মহিলাবিষয়ক উপদেষ্টার দপ্তরে আবেদন করেছি। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন, বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেননি।
গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়নের ফেনাইকোনা গ্রামের আবদুন নূর বিলালের ছেলে সুমন মিয়া স মিলের ব্যবসার পাশাপাশি কৃষিকাজ করতেন। বিলাল জানান, সোনারহাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে বিজিবি সদস্যদের গুলিতে প্রাণ হারান সুমন। ছেলের মৃত্যুর পর প্রথমে ইউএনও, পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসক, মন্ত্রণালয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়কের কাছে তালিকাভুক্তির আবেদন করেন তিনি। কিন্তু তারা আজও কোনো ব্যবস্থা নেননি।
সুমন নিহতের ঘটনায় ২৭ আগস্ট আদালতে মামলা করেন বিলাল। মামলায় সিলেট-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইমরান আহমদসহ, উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ও ছাত্রলীগের ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করেন। এ ছাড়া ৫ আগস্ট সোনারহাট ক্যাম্পে কর্মরত সব বিজিবি সদস্যসহ অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে ক্যাম্পে লুটের অভিযোগে বিজিবির পক্ষ থেকে মামলা হয়। ২০ আগস্ট যৌথ স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্রে বিজিবি সদস্যের গুলিতে সুমনের নিহতের বিষয়টি উল্লেখ করেন সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী সুমন ও ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন। এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মতিউর রহমান ৩০ সেপ্টেম্বর ইউএনওর কাছে একটি প্রতিবেদন দেন। তাতে রাহিম, নাহেদুল ও সুমন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
আহত-শহীদের তালিকায় নাম ওঠাতে গড়িমসির কারণ জানতে চাইলে গোয়াইনঘাট উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, তালিকা করার সময় তাদের বিষয়ে আপত্তি আসে। তারপরও পরিবারের পক্ষ থেকে তালিকাভুক্তির আবেদন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। এখনও যাচাই-বাছাই চলছে।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার তোফায়েল আহমেদ বলেন, তিনজন নিহতের বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়েছে। আমাদের কাছে যখন মামলাটি ছিল, তখন তদন্ত কর্মকর্তা লাশ উত্তোলনের আবেদন করেছিলেন। লাশ তোলার নির্দেশও দিয়েছিলেন আদালত। মামলাটি সিআইডিতে চলে যাওয়ায় সেটি সম্ভব হয়নি। তবে আদালতের আদেশ বহাল আছে। আহতদের তালিকা তৈরি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তালিকা তৈরির কাজ সম্পন্ন হলে নাম প্রকাশ হবে।
সিলেট জেলায় জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে প্রাণ হারান ১৬ জন। গত ১ জানুয়ারি শহীদ ও আহতদের প্রথম ধাপের তালিকা প্রকাশ করে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল। এ তালিকায় থাকা ৮২৬ শহীদের মধ্যে সিলেট জেলার ১২ জন হলেন– সানি আহমেদ, নাজমুল ইসলাম, হাউশ উদ্দিন, মিনহাজ আহমদ, পাবেল আহমদ কামরুল, জয় আহমেদ, তারেক আহমদ, তাজ উদ্দিন, আবু তাহের মো. তুরাব, সুহেল আহমেদ, মোস্তাক আহমেদ ও ময়নুল ইসলাম।
তালিকায় নাহেদুল, রাহিম ও সুমন বাদেও আরেকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তিনি হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঝালোপাড়া আখড়া গলির বাসিন্দা অটোরিকশাচালক নিখিল চন্দ্র করের ছেলে পঙ্কজ কুমার কর।
স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৫ আগস্ট বিকেলে বিজয় মিছিল কোতোয়ালি মডেল থানা এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে। এ সময় মাদ্রাসাছাত্র হাফিজ পাবেল আহমদ কামরুল গুলিতে প্রাণ হারান। বিক্ষুব্ধ জনতা চড়াও হয় পুলিশের ওপর। এ সময় পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে অনেকের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হন পঙ্কজ। ৬ আগস্ট সকালে থানা কম্পাউন্ডের ভেতরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ২৮ আগস্ট কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
নিখিল চন্দ্র বলেন, ছেলের মৃত্যুর পর দুই রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মোট ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা পেয়েছি। কিন্তু পঙ্কজের নাম শহীদের তালিকায় ওঠেনি। নাম ওঠাতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদেরও জানানো হয়েছে। কিন্তু অগ্রগতি নেই। কেউ খোঁজও নেয় না।
আহতদের মধ্যে রয়েছেঃ বাহার উদ্দিন (২৩) মামুনুর রশীদ (১৯) উভয় পিতাঃ মৃত ইব্রাহিম আলী, গ্রামঃ উত্তর লাভু পোঃ সদর,ওয়ার্ড নং-০২, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর ইউনিয়ন।
ছালেহ আহমদ (২২) নোমান আহমদ (২৬) উভয় পিতাঃ ইসরাঈল আলী (গেদন), গ্রামঃ উত্তর লাভু পোঃ সদর,ওয়ার্ড নং-০২, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর ইউনিয়ন।
সেবুল আহমদ (২২) পিতাঃ মৃতঃ ইছাক মিয়া, গ্রামঃ উত্তর লাভু পোঃ সদর,ওয়ার্ড নং-০২, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর ইউনিয়ন।
সুলতান আহমদ (২০) পিতাঃ নজরুল ইসলাম নজত, গ্রামঃ পান্তুমাই, আহার কান্দি, পোঃ মাতুরতল বাজার, গোয়াইনঘাট সিলেট
ইদ্রিস আলী (২১) পিতাঃ আনছার আলী, গ্রামঃ দক্ষিণ পান্তুমাই, আহার কান্দি, পোঃ মাতুরতল বাজার, গোয়াইনঘাট সিলেট
আনোয়ার হোসেন (২২) পিতাঃ আব্দুর রহমান, গ্রামঃ ভাদেশ্বর মুরামুরি খাল, পোঃ মাতুরতল বাজার, গোয়াইনঘাট সিলেট। সহ আরো অনেকে যাদের নাম তালিকায় আসেনি।
এব্যাপারে জুলাই আগষ্টে আহত বাহার উদ্দিন জানান, আমি যখন আহত হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে যাই তখন জেলা প্রশাসক থেকে আর্থিক সাহায্য পাই, পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন সহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের অনেকে নানান ভাবে সহায়তা করেন। আমি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি । আমি আমার স্ত্রী সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন যাপন করতেছি।
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর যখন সারাদেশের মতো সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় আহত-নিহতদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হলে আমি আবেদন করি। পরে অনলাইনে আমার নাম আহতদের তালিকায় ছিল। কিন্তু এখন আমার নাম তালিকায় নাই।
এব্যাপারে জুলাই আগষ্টে আহত মামুনুর রশীদ জানান, আমি আহত হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজে দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসা নেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ওসমানী মেডিকেল থেকে সরকারি এম্বুলেন্স দিয়ে ঢাকা নিটর (NITOR) হাসপাতালে পাটানো হয় বর্তমানে আমি টাকা নিটর(NITOR) হাসপাতালের চিকিৎসাধীন আছি । সিলেটে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সিলেটের জেলা প্রশাসক থেকে আর্থিক সাহায্য পাই, পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন সহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের অনেকে নানান ভাবে সহায়তা করেন। পরবর্তীতে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর যখন সারাদেশের মতো সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় আহত-নিহতদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হলে আমি আবেদন করি। পরে অনলাইনে আমার নাম আহতদের তালিকায় ছিল। কিন্তু এখন আমার নাম তালিকায় নাই।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলার মুখ্য সংগঠক নাইম শেহজাদ বলেন, আমাদের যাচাই-বাছাই কমিটি এখনও কাজ করছে। গোয়াইনঘাটে আহত-নিহতদের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত বলেন, জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিয়ে তালিকা করা হয়। গোয়াইনঘাটে আহত-নিহত তালিকভুক্তির জন্য পরিবার থেকে আবেদন করা হয়েছিল। আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে বলেছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, কারা নিহত ও আহত হয়েছেন, সেটি নিয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। তারা যাচাই-বাছাই করে তালিকা দেয়। তালিকা থেকে কেউ বাদ পড়লে আবেদন করার সুযোগ আছে।
এদিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে আহত ও শহীদের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা থেকে বাদ পড়াদের পরিবার আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করতে পারবে।