যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, ৮ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে
সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুলাই ২০২৪, ৬:২৩ অপরাহ্ণউজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বাড়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। ইতিমধ্যে জেলার সদর, কাজীপুর ও শাহজাদপুর উপজেলার প্রায় ৮ হাজার ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বুধবার (৩ জুলাই) সরেজমিনে তিন উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ঘুরে দেখেন এ প্রতিবেদক। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, চলতি বছর যমুনায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে বন্যা আতঙ্ক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভাঙনের মুখে থাকা সদর উপজেলার কাওয়াকোল ইউনিয়নের একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নিলামে বিক্রির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া, দুটি মুজিবকেল্লা, সাড়ে চার কিলোমিটার পাকা সড়ক ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে রয়েছে। গতকাল বিকেলে শাহজাদপুর উপজেলার পাচিল গ্রামের কোবাদ মাস্টারের দোতলা ভবন নদীগর্ভে ধসে পড়েছে। এছাড়া বহু ঘরবাড়ি নদীতে ভেঙে পড়ছে।
কাওয়াকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, নদীভাঙনে জেলার মানচিত্র থেকে মুছে যেতে চলেছে কাওয়াকোলা ইউনিয়ন। ভাঙনরোধে পাউবো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ভাঙনের কারণে কমিউনিটি ক্লিনিক নিলামে বিক্রি করা হচ্ছে।
শাহজাদপুরের জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বলেন, প্রতিবছরই নদীভাঙনে এই ইউনিয়নের শত শত পরিবার নিঃস্ব হয়। এবারও হচ্ছে। কিন্তু ভাঙনরোধে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ তিন বছরেও শেষ হলো না।
পাউবো সূত্র জানায়, যমুনার ভাঙনরোধে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, জালালপুর ও খুকনী ইউনিয়নের এনায়েতপুর থেকে পাচিল পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের জুনে। চলতি বছরের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজ হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ। নির্দিষ্ট সময়ে বাঁধ নির্মাণ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের গেজ রিডার হাসান মামুন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদী শহর রক্ষা বাধ পয়েন্টে পানি ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, নদীর পূর্বপাড়ে চর জেগে উঠায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য খনন কাজ চলছে। সেই সঙ্গে ভাঙনরোধে কাজ করা হচ্ছে। ভাঙনকবলিত এলাকা চিহ্নিত করে জিও ব্যাগ ভর্তি বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে।
সারাদেশ/আবির