গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে ইসরায়েলের অভিযান

সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৩২ অপরাহ্ণঅবরুদ্ধ গাজায় সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা ইসরায়েলের বর্বর হামলায় এখন প্রায় ‘একটি কবরস্থান’। হাসপাতালটির ভেতরে এবং বাইরে মরদেহ জড়ো করে রাখা হয়েছে। গামলার পর থেকে গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আল-শিফা হাসপাতালটি ঘিরে গত কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ‘হামাসের খোঁজে’ অভিযান চালাচ্ছে। খবর: বিবিসির।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ দাবি করেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আল-শিফা হাসপাতালটির নিচে সুড়ঙ্গে একটি কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল কেন্দ্র পরিচালনা করছে হামাস। তবে এ দাবি অস্বীকার করেছে হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান চলতে থাকায় হাসপাতালের চারপাশে মরদেহ পড়ে আছে, যাদের দাফন করা যাচ্ছে না বা সরিয়ে অন্য কোথাও মর্গে নেয়াও যাচ্ছে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডমিয়ার বলেন, হাসপাতালটি রোগীদের সেবায় কোনো কাজই করতে পারছে না। এটা এখন প্রায় একটি কবরস্থান। চিকিৎসকরাও জানিয়েছেন, হাসপাতালে মরদেহ জড়ো করে রাখা হয়েছে এবং সেগুলো পঁচতে শুরু করেছে।
আল-শিফার চিকিৎসক ডা. মোহামেদ আবু সেলমিয়া গণমাধ্যমকে বলেছেন বলেছেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখনো পঁচতে থাকা মরদেহগুলো হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে দাফন করার অনুমতি দেয়নি। এরমধ্যে কুকুরগুলো হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ঢুকে মরদেহগুলো খেতে শুরু করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডমিয়ার আরো বলেছেন, এই মূহুর্তে হাসপাতালটিতে প্রায় ছয় শতাধিক মানুষ আটকা পড়েছেন। হলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন আরো অনেক মানুষ। এছাড়া আরো কয়েক ডজন অপরিণত নবজাতকের জীবন নিয়েও শঙ্কা তৈরি হচ্ছে কারণ বিদ্যুৎ না থাকার কারণে তাদেরকে আর ইনকিউবেটরে রাখা যাচ্ছে না। ওই শিশুদের মধ্যে সাতটি শিশু অক্সিজেনের অভাবে এরইমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে।
এদিকে গাজা উপত্যকার বৃহত্তম হাসপাতাল আল শিফায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হামাস। আল-শিফা হাসপাতালকে হামাস রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহার করে আসছিল বলে যে তথ্য দিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ), তা ও পুরোপুরি ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছে গাজার নিয়ন্ত্রণকারী এই সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী।
বুধবার এক বিবৃতিতে হামাস হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, আল-শিফা হাসপাতলে সামরিক অভিযানের জন্য দখলদার ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্পূর্ণভাবে দায়ী। আল-শিফা হাসপাতালকে হামাস সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহার করছে— ইসরায়েলের এমন মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই হাসপাতালে অভিযান চালানোর জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে পেন্টাগন, আর তার ফলাফল চলমান এই অভিযান।
আন্তর্জাতিক/হান্নান