৩২তম নিউইয়র্ক বইমেলার ইতি রেখ গেল কতনা স্মৃতি

শেখ শফিকুর রহমান,নিউইয়র্ক॥
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জুলাই ২০২৩, ৩:৫২ অপরাহ্ণযত বই তত প্রান শ্লোগানে চারদিনব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের জ্যামাইকা সেন্টারে শেষ হলো ৩২তম বইমেলা ২০২৩ বিশ্বের রাজধানী খ্যাত এই শহর বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য প্রতি বছর মিলনমেলার আয়োজন করে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন।বইমেলাকে উপলক্ষ করে কবি সাহিত্যিক শিল্পী ও পাঠকের সমাগম হয় জ্যামাইকা পারফরমিং সেন্টারে।এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের পঁচিশটি প্রকাশক তারা তাদের প্রকাশিত বই নিয়ে যোগদান করেন।আস্তে আস্তে নিউইয়র্ক বইমেলা যে আন্তর্জাতিক বইমেলা হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আমি তিন বছর হলো নিউইয়র্কে বসবাস করতে শুরু করেছি।আমার জন্য নিউইয়র্ক বইমেলা হলো দ্বিতীয় তম গত বছর আর এ বছর।আমি একজন সাংবাদিক নিউইয়র্কের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ লিখে যাচ্ছি নিয়মিত ভাবে যদিও সবার সাথে এখনো ভালভাবে পরিচয় হয়ে উঠেনি।নিউইয়র্ক বইমেলায় আমার সম্পৃক্ততা হলো একজন দর্শক হিসেবে।এবার বইমেলায় এসে অনেকের সাথে দেখা সাক্ষাত হলো যা ছিল আমার অন্যতম আনন্দের ব্যাপার।নিউইয়র্ক বই মেলা অনুষ্ঠিত না হলে হয়তো অনেক বিখ্যাত প্রতিভাবান ব্যক্তবর্গের সাথে দেখা হতনা প্রবাসের এই ব্যস্ত জীবনে।হয়তো অনেকেই জানেন আমাদের প্রবাসীদেরকে খুবই ব্যস্ত থাকতে হয় কাজ কর্ম নিয়ে।চেস্টা না করলে অবসর সময় পাওয়া যায়না।এবারের বই মেলা গিয়ে প্রথমবারের মতো সিলেটের বিখ্যাত শিল্পী সেলিম চৌধুরীকে দেখার সুযোগ হলো ও তার কন্ঠে সিলেটের লোকগীতি শুনার সম্ভব হলো।মেলায় দেখা হলো বীরপ্রতিক ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম,ডাঃ নুরুন্নবী, ছড়াকার লুৎফুর রহমান রিটন,ভয়েস অফ আমেরিকার রোকেয়া হায়দার,বাংলাদেশের বিশিষ্ট অভিনেতা আহমদ শরীফ,কলকাতার লেখক কাজল চক্রবর্তী,বিশিষ্ট কবি আলফ্রেড খোকন,অভিনেত্রী রেখা আহমদ সহ অসংখ্য গুনিজন।মেলায় আমার জন্মস্থান শ্রীমঙ্গলের সন্তান ইত্যাদি প্রকাশনীর অন্যতম কর্নধার স্নেহের জহিরুল আবেদীন জুয়েল এসেছিল তার প্রকাশনীর বই নিয়ে তার সঙ্গেও দেখা হলো। এবছর শুরুতেই প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় মেলায় লোকজনদের আসতে অনেক অসুবিধায় পরতে হয়েছে।আমাদের উত্তর আমেরিকার প্রথম আলোর অনেক সদস্যদের সাথে আমি যে তিনদিন গেছি প্রতিদিন দেখা হওয়ার সুযোগ হয়েছিল।প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন ভাইয়ের সাথে রবিবারে দেখা হলো আমরা বেশ কয়জন মিলে ছবি উঠালাম।সেদিন গাইবন্ধাবাসী নামক একটি সংগঠন মানববন্ধন করেছিল মেলা প্রাঙ্গনে গাইবান্ধা সদরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্তম্ভ নির্মান করার জন্য সেই মানববন্ধনে খোকন ভাই আর আমি অংশগ্রহন করি এবং খোকন একমত পোষন করে বক্তব্য করেন আমি প্রথম আলোতে একটি নিউজ করি।বইমেলায় নিউইয়র্কে বসবাসকারী নবীন লেখিকা আখতার শিমুর টুনাক সোনা বই বের হয়েছে তারও একটি নিউজ করি।সময়ের অভাবে ইচ্ছা থাকা সত্বেও বইমেলা নিয়ে নিয়মিত খবরাখবর পত্রিকায় নিউজ করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করছি।আশা করছি পরবর্তী বইমেলায় আমি নিজেকে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত করতে চেষ্টার প্রচেষ্টা চালাব।বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে এখনোযে বই প্রেমি পাঠক বইমেলায় এসে মুদ্রিত বই ক্রয় করছেন তা সত্যি প্রশংসার দাবীদার।যারা এখনো বই কিনে আমাদের মুদ্রিত গন্থকে বাচিয়ে রাখছেন তাদেরকে স্যালুট জানাচ্ছি।বই পাঠকদের জন্যই লেখকরা বই প্রকাশ করে থাকেন।নিউইয়র্ক বইমেলা স্বল্প পরিসরে হলেও ক্রমে একদিন প্রবাসী বাঙ্গালীদের ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে উঠবে কোন সন্দেহ নাই।আমি একজন নতুন প্রবাসী বাঙ্গালী হিসেবে বইমেলার আয়োজক মুক্তধারার সকল কর্তাব্যক্তি ও সংশিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।নিউইয়র্ক বইমেলা প্রতিবছর ফিরে আসবে মেলায় যাব কিছু স্মৃতি জীবনের অংশ হিসেবে রয়ে যাবে।
লেখক:
সাংবাদিক ও কলামিষ্ট
নিউইয়র্ক