ডিজিটাল ক্যাম্পাস বলে বিজ্ঞাপন করা হয়,এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে কি ক্লাস করানো যায় না?
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ এপ্রিল ২০২০, ৭:৪৯ অপরাহ্ণমবরুর আহমদ সাজু :
নির্বাচন আসলে যেভাবে নেতাকর্মীরা অমুক ভাই তমুক ভাই বলে মিছিল দেয়। ঠিক তেমনি সিলেটের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেগুলোতেও ভর্তির সময় মিছিল মিটিং করতে দেখা যায় ? রাজনীতি আর স্কুলের ভর্তির সংস্কৃতির একাকার হয়ে যাচ্ছে ।
বিশেষ করে নির্বাচনের সময় ভোটারদের আকৃষ্ট করতে এসব করা হয়। অপরদিকে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় এটা বেশ পরিলক্ষিত ।
তাঁর কারণ একটাই অভিভাবক,শিক্ষার্থীদের কে চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভর্তি করার পায়তারা! ভর্তি শেষ কাজ শেষ!
এ সংস্কৃতি শুধু আমাদের সিলেট জেলাতেই নয়, এ ধরনের অসংখ্য বাণিজ্যিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিন্তু সারা দেশেই গড়ে উঠেছে।
সুতরাং এই যখন আজকের বাস্তবতা তখন। একটি কথা না বললেই নয়। আজ শুক্রবার পবিত্র জুম্মা মোবারকের দিন। মসজিদের যাবার আগে আমার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ভয়াবহতায় সিলেট নগরীতে যেসকল স্কুল কলেজে ডিজিটাল ক্যাম্পাস ডিজিটাল ক্যাম্পাস বলে বিজ্ঞাপন করেন।
আজ সেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কি ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্কুল কলেজ পরিচালনা করা যায় না?
স্টাটাস টি দেয়ার পরপর যারা বা প্রথমে যিনি তাঁর মনের ক্ষোভ বহি:প্রকাশ করলেন তিনি হলেন সিলেটের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ গবেষক প্রণবকান্তিদেব। পরবর্তীতে ব্যাপক কমেন্ট ও সরাসরি ফোন আসে বিভিন্নমহলের কাছ থেকে কিছু লেখার জন্য ?
আসলে একটি প্রবাদ আছে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। অর্থ্যাৎ ব্যক্তি জীবন থেকে জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। মেরুদণ্ড ছাড়া মানুষকে যেমন মানুষ হিসেবে কল্পনা করা যায় না, তেমনি শিক্ষা ছাড়া কোনাে জাতিকে জাতি হিসেবে কল্পনা করা যায় না।
মূদ্দকথায় আসা যাক। করোনাভাইরাসের পরিস্থিতে বিশ্বের সাথে বাংলাদেশ ও কাঁপছে। জনসচেতনতা বাড়ানোর সরকার ইতোমধ্যে সাধারণ ছুঠি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
আমরা নিজে বাঁচার জন্য? সরকারের এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহ প্রশংসার দাবি হলেও শিক্ষার অপূরনীয় ক্ষতি রয়ে যাবে এটা মানতে হবে?
সুতারাং এমন পরিস্থিতে শিক্ষার অপূরনীয় ক্ষতি থেকে শিক্ষার্থীদের কে শিক্ষামূখী রাখতে হলে ডিজিটাল পদ্ধতির বিকল্প নেই।
সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসের মহামারিতে বারবার একটি প্রশ্ন প্রতীয়মান হয়ে উঠেছে? যারা সিলেটে শিক্ষা বাণিজ্য করছেন এবং ভর্তির সময় ডিজিটাল ক্যাম্পাস বলে আপনাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের আকৃষ্ট করছেন?
আজ এই মহামারিতে অনলাইনে কি ক্লাস করাতে পারেন না? অভিযোগ উঠলেও দেখার যেনো কেউ নেই। হায়রে সেলুকাস কি বিচিত্র এই প্রতারনা ?
ডিজিটাল ক্যাম্পাস ডিজিটাল ক্যাম্পাস বলে
ভর্তি সময় যারা নির্বাচনের মতো মিছিল মিটিং করেন। আজ আপনারা কোথায়? শিক্ষার সার্থে অনলাইনে ক্লাস বিশ্বজোড়ে চলছে। আপনারাই চালু করেন। বড় বড় পত্রিকায় ডিজিটাল ক্যাস্পাসের এড দিতে পারেন করোনা পরিস্তিতি করতে পারবেন না কেন?
আমি সেই সকল ডিজিটাল ক্যম্পাস দাবি কারি কর্তৃপক্ষ কে অনুরোধ করবো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিবিধসহ বেতন নিবেন? এটা কি হয়?
আবার ডিজিটাল ক্যাম্পাস দাবী করবেন!!!
করোনাভাইরাসের পরিস্থিতে শিক্ষার্থীদের কে অনলাইনে ক্লাস শুরু করেন। সচেতন এ জাতী আপনাদের কে মনে রাখবে। নতুনবা জাতী আপনাদের শিক্ষার ভেলকিবাজিতে আগামিতে হিসেব করে জবাব দিবে ?
আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা দীর্ঘদিনের। প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতি ও ধরন নিয়ে আপত্তি রয়েছে অনেক আগে থেকেই। অবশ্য এর পক্ষে থাকা মানুষও নেহাত কম নয়।
সব মিলিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই, তা বলা চলে। অনেক বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পরিবর্তনের কারণে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা অনেক হয়েছে, এখনও চলছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি যেমন বাড়ছে, শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলারও পথ তৈরি হয়েছে
দেশের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করি। আজকের শিশুই আগামী দিনে দেশের কর্ণধার।
তাদের ছোটবেলা থেকেই যথাযথভাবে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্বটাও আমাদেরই; কিন্তু এতে কোনো কারণে ব্যর্থ হলে তা বিপর্যয় নামিয়ে আনতে পারে। দায়িত্বটাও তাই সবাইকে যথাযথভাবেই কাঁধে তুলে নিতে হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা নয়, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে দেশের সব মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, যেন কঠিন, দুর্বোধ্য ও বিমূর্ত বিষয়সমূহকে শিক্ষকগণ ছবি, এ্যানিমেশন ও ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সামনে সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করার মাধ্যমে শ্রেণী কার্যক্রমকে আনন্দময় করে তুলতে।
বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে । বিগত সাত বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অভিযাত্রায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অভূতপূর্ব সম্প্রসারণ ঘটেছে। প্রযুক্তিভিত্তিক তথ্য ও সেবা পৌঁছে গেছে সাধারণ মানুষের দ্বারগোড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক এই অবিস্মরণীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আখ্যায়িত করছেন ডিজিটাল রেনেসাঁ বা ডিজিটাল নবজাগরণ হিসেবে।
ইউরোপের রেনেসাঁ বিপ্লবের কথা আমরা জানি। সেই বিপ্লব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক নবদিগন্তের সূচনা করেছিল। বাঙালী হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিপ্লবের বিষয়টি এক সময় আমাদের কাছে সোনার হরিণ বলে মনে হতো। কিন্তু সময়ের পালা বদলের ধারায় বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বিপ্লবের নবদিগন্তের সূচনা করেছে।
২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা সদরে একটি করে মোট ৬৫টি ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাবসহ সারা দেশের দুই হাজার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’। এটি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব ল্যাবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী . . . . . . . . .