আগুনে দগ্ধ সিলেটের ৬ পরিবারের ঈদের আনন্দ

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১:৩৯ অপরাহ্ণঈদের আগেই আগুনে দগ্ধ হলো সিলেটের ছয় পরিবারের আনন্দ। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরীর টাম্পাকো কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে নিহতদের ছয়জন সিলেটের বাসিন্দা।
নিহতদের মধ্যে গোলাপগঞ্জের পাঁচজন ও সিলেট নগরীর বাসিন্দা রয়েছেন একজন। তারা ওই কারখানায় কাজ করতেন।
নিহতরা হলেন- সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার আমুড়া ইউনিয়নের সুন্দিশাইল গ্রামের মৃত তমদির আলীর ছেলে ওয়ালি আহমদ কুটি (৩২), একই গ্রামের মৃত মজর আলীর ছেলে হাসান সিদ্দিকী রহিম (৪৮), সোনা মিয়ার ছেলে এনামুল হক (৩৮), মৃত তমজিদ আলীর ছেলে সাইদুর রহমান (৪৮) ও উপজেলার কানিশাইল গ্রামের মৃত আবদুল করিমের ছেলে রেদওয়ান আহমদ (৩০) এবং নগরীর সুনারপাড়ার মাহতাবুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান মিজান (২৭)।
প্রিয়জনদের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আর একই এলাকার চারজন নিহত হওয়ায় গোলাপগঞ্জের সুন্দিশাইল গ্রাম এখন শোকে স্তব্ধ।
সিলেট-৬ আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়া টঙ্গীতে অবস্থিত টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেড নামক প্যাকেজিং কারখানা স্বত্বাধিকারী। গোলাপগঞ্জের আমুড়া ইউনিয়নের সুন্দিশাইল গ্রামের বাসিন্দা লেচু মিয়া গ্রামের অনেককেই এই কারখানায় চাকরি দেন।
নিহত রেদওয়ানের সহোদর মো. শানু মিয়া বলেন, তার ভাই ওই ফ্যাক্টরিতে চাকরি করতেন। এখনও তার মরদেহ পাওয়া যাচ্ছে না। ৭ ভাইয়ের মধ্যে রেদওয়ান ৫ নম্বর। তবে ঘটনাটি এখনও তাদের বাবা-মাকে জানানো হয়নি। তাদের একটাই দাবি অন্তত ভাইয়ের মরদেহটা যেন পাওয়া যায়।
নিহত সাইদুর রহমানের চাচাতো ভাই ইমরুল হাসান বলেন, নিহতরা দীর্ঘদিন ধরে টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেড কারখানায় কাজ করছিলেন। আকস্মিকভাবে দুর্ঘটনায় প্রিয়জনদের এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না কেউই।
গোলাপগঞ্জের আমুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহেল আহমদবলেন, নিহত পাঁচজনের মধ্যে চারজন তার ইউনিয়নের। ঘটনার পর তিনি সকালেই ঢাকায় পৌঁছেন। রাত ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিহতদের মরদেহের ময়নাতদন্ত চলছিল বলেন জানিয়েছেন তিনি।
নিহতদের মরদেহ নিয়ে রাতেই সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন চেয়াম্যান রুহেল আহমদ।
এদিকে নিহতদের মধ্যে একজন মিজানুর রহমান মিজান সিলেট নগরীর বাসিন্দা। নিহতের সহপাঠি আতিকুর রহমান নগরী বলেন, মিজানের মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে শনাক্ত করেছেন তার বাবা ও চাচা। তবে একমাত্র ছেলেকে হারানোর খবর তার মা ও বোনকে জানানো হয়নি।
তিনি বলেন, এ মাসের বেতন পেয়ে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বাড়িতে আসার কথা ছিলো। কিন্তু সে আশা আর পূরণ হলো না। মিজানের পরিবারের ঈদের খুশি দগ্ধ হলো আগুনে।
মিজানের বাসা সিলেট সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রকিব তুহিন বলেন, মিজান ওই কারখানার মেশিনম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলো।
. . . . . . . . .