পুরোহিত হত্যা : মূল অভিযুক্তসহ ৩ জেএমবি সদস্য গ্রেপ্তার
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ৮:৩৭ অপরাহ্ণপঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে সন্তগৌড়ীয় মঠের প্রধান পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায় হত্যার ঘটনায় মুলহোতাসহ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর ৩ সক্রিয় সদস্যকে পুলিশ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দেবীগঞ্জ থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি হুমায়ুন কবির এ তথ্য জানান।
তিনি দাবি করেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে পুরোহিতকে জবাইকারী মুল অপরাধী, অপারেশনের আগে ও পরে যার বাসায় অস্ত্র রাখা হয়েছিল তাকে এবং হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরে ঘটনাস্থলসহ আশপাশে নজরদারি করা ব্যক্তিও গ্রেপ্তারের তালিকায় আছে। যে বাইসাইকেল দ্বারা নজরদারি করা হয়েছে সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
এ সময় দুইটি বিদেশি পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলি, ৩টি ম্যাগাজিন, ৩টি ককটেল ও ৩টি ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উদ্ধার করা অস্ত্র প্রদর্শন করা হলেও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়নি। তদন্তের স্বার্থে তাদেও নাম-ঠিকানাও বিস্তারিত জানা যায়নি।
হুমায়ুন কবির জানান, মঠের পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায় হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের করা হয়েছে। এই কিলিং মিশনের পরিকল্পনা এবং সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জেলা এবং জেলার বাইরের আট জেমএমবি সদস্য জড়িত। এদের মধ্যে সরাসরি অংশ নেওয়া তিনজনকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। চাপাতি দিয়ে যিনি পুরোহিতের গলা কেটেছেন তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। কিলিং মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্রের সাথে একটি বাইসাইকেল উদ্ধার করা হয়। দুস্কৃতিকারীদের ব্যবহৃত মটরসাইকেলটি সনাক্ত করা হয়েছে। আশা করি শিগগির সেটাও উদ্ধার করা হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি নষ্ট করাই দুষ্কৃতিকারীদের আসল উদ্দেশ্য ছিল।’
ঘটনার দিন রোববার রাতে খলিলুর রহমান ওরফে খলিল মুন্সি, জাহাঙ্গীর আলম ও বাবুল হোসেন নামে তিন জেমএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা বর্তমানে ১৫ দিনের পুলিশি রিমান্ডে রয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিশেষ অভিযান চালানো হয়। বৃহষ্পতিবার গ্রেফতারকৃত তিন জেএমবি সদস্যের মধ্যে একজনকে পাশের জেলা গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা সকলেই জেএমবির সক্রিয় সদস্য।
কিলিং মিশনের পরিকল্পনা এবং নানাভাবে সহযোগিতায় অংশ নেওয়া বাকি দুই জনকেও শিগগির গ্রেফতার করা হবে বলে দাবি করেন ডিআইজি হুমায়ুন কবির।
তিনি বলেন, এরা শুধু দেবীগঞ্জের ঘটনা নয়, উত্তরাঞ্চেলের বিভিন্ন নাশকতামুলক হামলাতেও এই জেএমবি সদস্যরা জড়িত। গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে এখনি সব তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার গিয়াসউদ্দিন আহমেদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীন মোহাম্মদ ও সহকারী পুলিশ সুপার মো. কফিলউদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দিন রবিবার দেবীগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে জড়িত সন্দেহে জেএমবির দুই সদস্য খলিলুর রহমান (৫৫) ও বাবুল হোসেন (২৮) এবং শিবিরের স্থানীয় নেতা জাহাঙ্গীর হোসেনকে পুলিশ আটক করে। এদের মধ্যে খলিল ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা মামলার খালাসপ্রাপ্ত আসামি। এরা তিনজনই বর্তমানে ১৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডে আছে।
. . . . . . . . .