‘মুজাহিদের মাথা ফাটিয়েছিলাম’
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ নভেম্বর ২০১৫, ৯:৪২ অপরাহ্ণজামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল এবং আলবদর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মাথায় চেয়ার দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
দশম সংসদের অষ্টম অধিবেশনে রোববার অনির্ধারিত আলোচনায় সংসদে এ তথ্য জানান তিনি। শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে আলবদর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘এই মুজাহিদ কে ছিলেন, আপনার নলেজে রাখার জন্য বলছি। ১৯৮৫ সালে আমি যখন তোলারাম কলেজের ভিপি, নারায়ণগঞ্জে একটি স্কুল হলো। স্কুলটির নাম হলো আদর্শ স্কুল। সেই স্কুলের হেডমাস্টার ছিল আলী আহসান মুজাহিদ। আমার কাছে খবর আসল- তারা শহীদ মিনার করেছে। স্কুলে একটি শহীদ মিনার করেছে। কিন্তু শহীদ মিনারটি এমন জায়গায় ছোট করে করেছে, আবার তার উপর বাথরুম করেছে। যাতে ছাত্ররা যখন ওয়াশরুমে যাবে, সেই প্রশ্রাব যাতে শহীদ মিনারে পড়ে।
‘শুধু তাই নয়, গোলাম আযমের বই পড়াচ্ছিল- কিশোর মনে ভাবনা জাগে। ওই বইয়ের উপর ২০০ নম্বরের পরীক্ষা নিত তারা। ওই বইয়ের ৪৮ নম্বর পৃষ্ঠায় লেখা ছিল- আল্লাহর পথে চলতে গেলে, আল্লাহ এবং রসুলকে পাইতে হলে, বাংলাদেশে এমন কিছু দল আছে, সেই দলগুলো করতে হয়। বড়দের জামায়াতে ইসলাম, যুবদের জন্য যুবশিবির, ছাত্রদের জন্য ছাত্রশিবির।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি তখন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা হিসেবে ওই স্কুলে গেলাম। একটি মোটরসাইকেলে করে আমার ছোট ভাই ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে গেলাম। যাওয়ার পরই আমি কিছু বুঝতে পারি নাই। এরপর বুঝতে পারলাম, দেখি সবগুলি অপরিচিত লোক। এরপর হঠাৎ করে দেখলাম, আমাকে ওই হেডমাস্টারের (মুজাহিদ) রুমে ঘিরে ফেলা হলো।
‘মুজাহিদ হেডমাস্টার। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম- এই বইটা পড়াচ্ছেন কেন? তিনি আমাকে উত্তর দিয়েছিলেন- আপনাকে কৈফিয়ত দেব কেন? আমি বলেছিলাম- কৈফিয়ত দিতে হবে। এক কথায়, দুই কথায় দেখলাম, ২৫-৩০ জন লোক আমাকে ঘিরে ফেলল। আমার কলেজটা পাশেই ছিল। একটা পর্যায়ে নিজের আত্মরক্ষার্থে ওর (মুজাজিদ) চেয়ার দিয়েই ওর মাথায় একটি বাড়ি মারলাম। দেখি উনি পড়ে গেলেন।’
এই মুজাহিদের মাথায় সেলাই দেওয়া আছে’- এমন দাবি করে তিনি আরো বলেন, ‘ইতিমধ্যে কলেজে খবর গেছে। হাজার হাজার ছেলে চলে এসেছে। খুব মজার ব্যাপার, সাথে সাথে পরদিন একটি মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূত স্কুলে চলে এল এবং তৎকালীন এসডিও আমাদের পক্ষে অবস্থান নিলেন বলে ৪ ঘণ্টার নোটিশে তাকে ওএসডি করে পাঠিয়ে দেওয়া হলো- এই হলো মুজাহিদের ব্যাকগ্রাউন্ড।’
যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকরে নারায়ণগঞ্জের এই সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এই ক্রেডিট একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার। আজকে বাংলাদেশের মানুষকে নতুন করে স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং স্বপ্ন পূরণ করেছেন। আমি তাকে স্যালুট জানাই। মৃত ব্যক্তিতে নিয়ে আলোচনার কিছু নাই। ওরা পচা জিনিস।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘বিএনপির মুখ বন্ধ ছিল। কিন্তু ওরা সাকা চৌধুরীকে নিয়ে মুখ খুলেছে। আজকের পর থেকে বিএনপির পক্ষে বলা সম্ভব না- ওরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। বাংলাদেশের মানুষও এটা বিশ্বাস করবে না।’
. . . . . . . . .