‘যানজটে না পড়লে আমার বাবা বেঁচে থাকতেন’
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ নভেম্বর ২০১৫, ৯:৫৭ অপরাহ্ণ‘কে নেবে আমার বাবার মৃত্যুর দায়ভার? যানজটে না পড়লে আমার বাবা বেঁচে থাকতেন। সময় গুনে গুনে দেড় ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়েছিলাম। তবুও কেউ আসার ব্যবস্থা করে দিল না। পুলিশকে অনেক অনুরোধ করা সত্ত্বেও ব্যবস্থা করে দেয়নি।’ সোমবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বাবার মৃত্যুর পর এভাবেই আহাজারি করছিলেন মেয়ে আয়শা হেলেন।
আয়শা হেলেন জানান, তার বাবা অ্যাডভোকেট এনামুল হক (৫০) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে আরকে মিশন রোডের নিজ বাসায় হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এ কথা শোনার পরপরই মা নীলুফা ইয়াসমীনসহ একটি সিএনজিতে করে বাবাকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে রওয়ানা হন। কিন্তু যানজট এতো প্রকট আকার ধারণ করে যে, ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও রাস্তা ফাঁকা হচ্ছিল না।
তিনি বলেন, ‘এ অবস্থা দেখে নিরুপায় হয়ে বাবাকে সিএনজি থেকে নামিয়ে মা এবং আমি হাতের ওপর নিয়ে গুলিস্তান পার হই। এরপর একটি রিকশা ডেকে কোনোরকমে দেড় ঘণ্টা পর হাসপাতালে পৌঁছাই। জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
আয়শা হেলেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রাস্তায় যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকত না হতো তবে আমার বাবাকে অবশ্যই বাঁচানো সম্ভব হতো। কারণ সিএনজিতে ওঠার এক ঘণ্টা পর পর্যন্ত বাবার জ্ঞান ছিল।’
এদিকে আব্দুল্লাহ (২৫) নামে এক পান ব্যবসায়ী যানজটের কারণে মারা গেছেন বলে অভিযোগে করেছেন তার চাচাত ভাই মাসুদ।
মাসুদ জানান, তিনি ও আব্দুল্লাহ বেলা ১টার দিকে রিকশাযোগে শ্যামলী থেকে আদাবর যাচ্ছিলেন। রিং রোডে একটি লেগুনা পেছন থেকে ধাক্কা দিলে আব্দুল্লাহ ছিটকে রাস্তায় পড়ে আহত হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য দেড়টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে রওয়ানা হন। কিন্তু তীব্র যানজটের কারণে হাসপাতালে পৌঁছাতে বিকেল সাড়ে ৪টা বেজে যায়। পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাসুদ অভিযোগ করেন, ‘জনসভার জন্য রাস্তায় তীব্র যানজট ছিল। যানজট না থাকলে হয়তো আমার ভাই বেঁচে থাকত।’
অন্যদিকে মনির হোসেন নামে ব্র্যাকের এক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, রামপুরা বউবাজার থেকে দেড়টার দিকে মোটরসাইকেলে করে রওয়ানা হই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগী দেখার জন্য। কিন্তু যানজটের কারণে হাসপাতালে পৌঁছাতে সাড়ে ৪টা বেজে যায়।
প্রসঙ্গত সোমবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভা ছিল। জনসভায় বিপুল সংখ্যক লোক যোগ দেওয়ায় রাজধানীতে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। এ সময় ভোগান্তিতে পড়েন লাখো মানুষ।
. . . . . . . . .