সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জে সক্রিয় গাড়িচোর চক্রের সিন্ডিকেট
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ অক্টোবর ২০১৫, ১২:২৩ অপরাহ্ণবড়লেখায় গড়ে উঠেছে আন্তঃজেলা সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চোরের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। ২৪ সদস্যের সিন্ডিকেট মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলায় অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চুরি, ছিনতাই, মুক্তিপণ আদায় ও বিক্রয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে। চক্রের মূল হোতা বড়লেখার শাহবাজপুরের সবুজ। সে কয়েকবার র্যাব ও পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও পরে জামিনে বেরিয়ে আবার আগের পেশায় ফিরে যায়। তাদের শেল্টার দাতার তালিকায় রয়েছেন তিন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি। ফলে হাতে-নাতে ধরা পড়লেও তাদের বেশি দিন হাজতে থাকতে হয় না। চোর সিন্ডিকেট গাড়ি চুরির পর প্রথমেই মালিকের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে চোরাই গাড়ি উদ্ধারের প্রস্তাব দেয়। মালিককে গাড়ি উদ্ধারে অন্য জেলায় নিয়ে হামলা চালিয়ে সঙ্গীয় টাকা ছিনিয়ে নেয়। এমনকি চোরাই গাড়ি উদ্ধারে যদি মাইক্রোবাস কিংবা অটোরিকশা ব্যবহার করা হয় টাকা হাতিয়ে চোরচক্র সেটিও ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়।
জানা গেছে, ২২ সেপ্টেম্বর মাধবগুল গ্রামের হাবিব আলীর ছেলে আকবর আলীর গ্যারেজ ভেঙে চোরেরা অটোরিকশা চুরি করে। তিনি চিহ্নিত চোর একই গ্রামের আবদুল মুহিত ও দক্ষিণভাগের দোহালিয়া কুইয়ারী টিলার সমছু মিয়ার ছেলে আবদুস সহিদকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ১২ দিন পর মুছেগুল গ্রামের জুনেদ মোবাইলে আকবর আলীকে জানায়, সে চুরি যাওয়া অটোরিকশার সন্ধান দিতে পারবে। এক লাখ দশ হাজার টাকার চুক্তিতে ১০ হাজার টাকা অগ্রিম গ্রহণ করে। বাকি টাকা নিয়ে গাড়ি উদ্ধারে হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জে যেতে বলে।
আকবর আলী দুই আত্মীয়সহ জুনেদকে নিয়ে ১৪ অক্টোবর একটি নোহা গাড়ি ভাড়া করে শায়েস্তাগঞ্জ যান। নতুন ব্রিজের কাছে যাওয়ার পর জুনেদসহ ৪ ব্যক্তি তাদের মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা নোহা গাড়িটিও ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে উল্টো চোর সিন্ডিকেটের সদস্য জুনেদের স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও মা আমেনা বেগম এলাকায় আকবর আলীর বিরুদ্ধে স্বামী ও ছেলেকে হত্যা-গুমের অভিযোগ তুলে।
ঘটনাক্রমে ১৬ অক্টোবর বড়লেখা থানা পুলিশ অটোরিকশা চুরির মামলায় জুনেদকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। সূত্র মতে ৫ আগস্ট উপজেলার দরগা বাজারের খালেদ আহমদের অটোরিকশা চুরি যায়। এর আগে দক্ষিণভাগের সেলিম উদ্দিন আহমদের, কলাজুরার জুনাব আলীর হিনাইনগরের ইসলাম উদ্দিনের, ইয়াকুব নগরের রছমান আলীর, সুগানগরের আতিকুর রহমানের অটোরিকশা চুরি যায়।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, বড়লেখায় গড়ে উঠেছে মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চোরের শক্তিশালী ঘাঁটি।
২৪ সদস্যের চোর চক্রের মূল হোতা শাহবাজপুরের সবুজ। সহযোগীরা হচ্ছে- তেরাদরমের আবদুল হামিদ, আলিম উদ্দিন, বাবুল, দক্ষিণভাগের বাবুল আহমদ, কুইয়ারীটিলার জেবুল, আবদুস সহিদ, রুহুল, দাসেরবাজার খলাকান্দির জসিম, সুনাম, ছোটলেখার সফিক, মুড়াউলের আবদুল হান্নান, বিয়ানীবাজারের চন্দরপুরের জিলাল আহমদ, চান্দুরার আলমাস, ভৈরবের দেলোয়ার, শামীম প্রমুখ।
থানার ওসি (তদন্ত) আকবর হোসেন বড়লেখায় অহরহ মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চুরির সত্যতা স্বীকার করে জানান, পুলিশ প্রায়ই চোরদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।
. . . . . . . . .