তাভেল্লার তিন ‘খুনি’ আটক!
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ অক্টোবর ২০১৫, ২:৫১ অপরাহ্ণপাশের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে ইতালির নাগরিক তাভেল্লা সিজার হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন তিন খুনিকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকেই খুনিদের গ্রেফতারে নিরবচ্ছিন্ন অভিযান চালাচ্ছিলেন গোয়েন্দারা। কয়েকদিন আগে খুনিদের চিহ্নিত করতে পারলেও হাতের নাগালে পাচ্ছিলেন না তারা। অবশেষে তাদের জালে আটকাতে পেরেছেন বলে জানান দায়িত্বশীল একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, যেকোনও মুহূর্তে তাভেল্লার খুনিদের গ্রেফতারের আশায় ছিলেন গোয়েন্দারা। অবশেষে গোয়েন্দারা সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন তারা। তবে, এ ব্যাপারে এখনই মুখ খুলতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা। তারা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে, শতভাগ নিশ্চিত হয়েই বিষয়টি সামনে নিয়ে আসতে চান। সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে আটককৃতরা গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন।
তাভেল্লা সিজার হত্যাকাণ্ডের মূল তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে ন্যস্ত থাকলেও সিআইডি ও র্যাবসহ সরকারের সবগুলো গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ঘটনার খুনি ও নেপথ্য নায়কদের গ্রেফতারে চষে বেড়াচ্ছেন সর্বত্র।
সংশ্লিষ্ট একটি গোয়েন্দা সংস্থা গুলশানের ৯০ নম্বর রোডের পাশের একটি বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে সন্দেহভাজন খুনিদের চিহ্নিত করে। আটকের বিষয়টি কোনও সংস্থা স্বীকার না করলেও দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, তারা এরইমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন।
সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, মোটরসাইকেল করে দুজন এবং মোবাইল ফোনে কথা বলতে-বলতে একজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করছেন। গোয়েন্দাজালে তাদের বন্দি করতে পারায় তাভেল্লা হত্যার ঘটনার নেপথ্য কারণ ও মামলার তদন্তে আশানুরূপ অগ্রগতি হবে বলে মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
কয়েকদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, তাভেল্লা হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্য ও গুলশান এলাকার ১৫৫টি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তারা তিন খুনির বিষয়ে ধারণা পেয়েছেন। তাদের গ্রেফতার করতে পারলেই তদন্তে অনেকদূর এগিয়ে যাওয়া যাবে। খুনিরা চার স্তরে ভাগ হয়ে তাভেল্লাকে হত্যা করে বলেও জানান তিনি।
গত রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দেশে খুন হওয়া দুই বিদেশি নাগরিকের খুনি এবং এর নেপথ্য নায়কদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এ নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করেছে, তাদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। তদন্তে উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে বলেও তিনি জানান। শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে অচিরেই তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে গুলশান-২ নম্বরের ৯০ নম্বর সড়কের গভর্নর হাউজের দক্ষিণের দেওয়াল ঘেঁষা ফুটপাতে পরপর তিনটি গুলি করে তাভেল্লাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলে ৮৩ নম্বর সড়ক হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তাভেল্লা সিজার নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আইসিসিও কো-অপারেশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রফিটেবল অপারচুনিটিজ ফর ফুড সিকিউরিটি কর্মসূচির প্রকল্প ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গত মে মাসে বাংলাদেশে আসেন।
. . . . . . . . .