এবার খালেদা-তারেকের কাছে যাচ্ছে ‘দৌড় সেলিম’দের আমলনামা !

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ অক্টোবর ২০১৫, ৯:১৩ পূর্বাহ্ণসিলেট মহানগর বিএনপি ২৭টি ওয়ার্ডে ‘পকেট’ কমিটি বাতিলের দাবি
সিলেট মহানগর বিএনপি ২৭টি ওয়ার্ডে ‘পকেট’ কমিটি গঠনের নেপথ্যের ‘নায়কদের’ বিরুদ্ধে এবার লন্ডনে অবস্থানরত দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে নালিশ যাচ্ছে। সিলেট মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গ, সহযোগি সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক কয়েকশ’ নেতা স্বাক্ষরিত এই নালিশান স্মারকলিপি দু’একদিনের মধ্যেই লন্ডনে প্রেরণ করা হবে। একইসঙ্গে একটি অনুলিপি বা ছায়া কপি দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বরাবরেও পাঠানো হবে। এমন তথ্য জানিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহাবায়ক কমিটির দুই সদস্য।
তাদের অভিযোগ-গুম হওয়ার আশঙ্কায় অসংখ্য মামলা মাথায় নিয়ে ফেরারি হওয়া দলের দুর্দিনের কাণ্ডারি, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের সম্মেলন ও কাউন্সিলে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার হীন উদ্দেশ্যে মহানগর বিএনপির দায়িত্বশীল গুটি কয়েক সুবিধাভোগি নেতা তাদের নিজ বলয়ের লোকজনদিয়ে ২৭টি ওয়ার্ডে পকেট কমিটি গঠন করেছেন। ওইসব পকেট কমিটির অধিকাংশ নেতাই বিএনপি পরিবারে সরকারের দালাল হিসেবে চিহিৃত এবং বিগত সরকার বিরোধী আন্দোলনে এদের কোনো ভূমিকা ছিল না। আগামীদিনের কর্মসূচিতেও রাজপথে তারা থাকবে না জেনেও শুধু নিজেদের বলয়ের লোক হওয়ায় এবং কাউন্সিল হলে এদের ভোটে সহজেই নেতা হওয়ার খায়েশে ‘দৌড় সেলিমরা’ তাদেরকে নেতৃত্বে রেখে ওয়ার্ড কমিটিগুলো করেছেন। কিন্তু দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা ‘দৌড় সেলিমদের’ এ খায়েশ পুরণ হতে দেবে না। এরই ধারাবাহিকতায় দলকে সরকারের দালাল মুক্ত এবং সুসংগঠিত করতে হওয়া দলের দুর্দিনের কাণ্ডারি, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের নিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পাল্টা কমিটি গঠন শুরু হয়েছে। এপর্যন্ত ২৩টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই অন্য কমিটি গঠন সম্পন্ন হবে।
সিলেট শহর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল মিয়া বলেন, ‘বিএনপিতে সরকারের অনেক দালাল রয়েছে। তাদেরকে চিহিৃত করা হয়েছে। অতীতে ওয়ান-ইলেভেনে বিএনপির দুঃসময়ে তারা যৌথবাহিনীর দালালি করে নিজেদের রক্ষার পাশাপাশি দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সরকারবিরোধী আন্দোলনেও ওই নেতাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। তাদের কেউ সরকার দলের সঙ্গে আতাত করে গ্রেফতার হয়েছে। কেউ দলের ত্যাগী নেতাদের ধরিয়ে দিতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে। আবার এদের কেউ কেউ পুলিশ দেখে মিছিলে দলীয় কর্মীদের রাজপথে ফেলে রেখে দৌড়ে ফাস্ট হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা এসব নেতার এমন কর্মে তাদের নামের আগে পেছনে অনেক বিশেষন জুড়িয়ে দিয়েছে। কেউ হয়েছে ‘দৌড় সেলিম’ আবার কেউবা ‘দালাল হোসাইন’। এই দালালরাই এবার সুযোগবুঝে দলকে ধংস করতে তাদের অনুসারীদের নিয়ে নগরীর ওয়ার্ডগুলোতে পকেট কমিটি করেছে। এর বিরুদ্ধে সবাই সোচ্চার হয়ে উঠেছে। এবার দালালদের দালালিসহ তাদের সংগঠন বিরোধী নানা অপকর্মের আমলনামা দলীয় চেয়ারপার্সন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পাঠানো হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে সুবিধাভোগী, স্বার্থান্বেষী মহল ওয়ান-ইলেভেনের দালালদের দিয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঘোষিত অবরোধ ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনবিরোধী আন্দোলনে যারা রাজপথে সক্রিয় ছিল, তাদের এ কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়। ওই সময়ে রাজপথে সক্রিয় থাকা সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ূমকে আহ্বায়ক কমিটিতে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি।’
এ প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহবায়ক কমিটির সদস্য আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকী বলেন, ‘বিএনপি দেশের সর্ববৃহৎ একটি দল। এইদলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দলের পরীক্ষিত ও ত্যাগীদের বাদ দিয়ে ওয়ান-ইলেভেন ও সরকারের দালালদের নেতৃত্বে বসানো বিএনপির কোনো নেতাকর্মীরাই মেনে নিতে পারে না, পারবেওনা। তাই বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা এর প্রতিকার চেয়ে একটি স্মারকলিপি কেন্দ্রের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর একটি কপি আমার কাছেও দিয়েছেন বিএনপিরা।’
. . . . . . . . .