আলোর মুখ দেখছে সিলেটবাসীর ‘স্বপ্নের’ তিন মেগা প্রকল্প
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ অক্টোবর ২০১৫, ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণভিডিও কনফারেন্সে বৃহস্পতিবার কাজীরবাজার ও বলভদ্র সেতুর উদ্বোধন, ভোলাগঞ্জ জাতীয় মহাসড়কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী
সৈয়দ বাপ্পী ::
অবশেষে আলোরমুখ দেখছে সিলেটবাসীর ‘স্বপ্নের’ তিন মেগা প্রকল্প। দীর্ঘ প্রতিক্ষিত এই প্রকল্পগুলোর দু’টি আজ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। অপরটিও ভিত্তিপ্রস্তও স্থান করা হবে একই সময়ে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই তিনটি মেগা প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পগুলো হচ্ছে সিলেটনগরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষিত কাজীরবাজার সেতু ও হবিগঞ্জবাসীর স্বপ্নের বলভদ্র সেতু এবং সিলেটএকাম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ জাতীয় মহাসড়ক।
সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেটের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সিলেটের এই তিনটি মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন সড়ক বিভাগ সিলেট জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইফতেখার কবির।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স উপলক্ষে এক প্রস্তুতিসভা বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট নগরীর সুরমা নদীরওপর নির্মিত হয়েছে কাজীরবাজার সেতুটি। প্রায় ৪শ’ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৮৯ কোটি টাকা।
এই সেতুটি যানচলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিক উন্মুক্ত করার মধ্য দিয়ে সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের একটি প্রত্যাশা পূরণ হতে যাচ্ছে।
পাশাপাশি সকাল ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই সড়কে প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত বলভদ্র সেতুটিরও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এই সেতুটি চালুর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে হবিগঞ্জ তথা বৃহত্তর সিলেটের দূরত্ব কমবে ৪৫ কিলোমিটার। আর সময় সাশ্রয় হবে প্রায় ১ ঘণ্টা। তার সাথে কমবে যাত্রী ভোগান্তি ও যানজট। পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ, সরাইল, নাছিরনগর এলাকার লোকজনও এ সড়কটি ব্যবহার করতে পারবে।
এছাড়া ওইদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের আরেকটি সড়কের সংস্কার কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাইপাস ইন্টারসেকশন-লালবাগ সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ জাতীয় মহাসড়কের উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৪শ’ ৪১ কোটি টাকা।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, সালুটিকর-ভোলাগঞ্জ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার মালবাহী ট্রাক চলাচল করে। দেশের অবকাঠামোর প্রায় ৭০ ভাগ পাথর ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারী থেকে সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও ভোলাগঞ্জ শুল্কস্টেশন দিয়েও মালামাল আনা নেয়া হয়। সড়কে এক্সেল লোড না থাকায় প্রতি ট্রাকে ৩০ টনের অধিক পাথর বহন করায় এই সড়কটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। সড়কটির স্থায়িত্ব বৃদ্ধির লক্ষে সড়ককে জেলা সড়ক থেকে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিমানবন্দর বাইপাস ইন্টারসেকশন-লালবাগ-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ লক্ষ্যে ৪শ’৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার প্রকল্পটি চলতি বছরের ৭ এপ্রিল অনুমোদন দেয় একনেক। এরপর নানা প্রক্রিয়া শেষে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সড়ক বিভাগ।
ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বিদেশী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
আগামী ৩ বছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি অর্থ বছরে বরাদ্দ এসেছে ৬০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩১ দশমিক ৭শ’৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের ১৬ দশমিক ৭২ কিলোমিটার সড়ক ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট (বিটুমিন) দিয়ে নির্মাণ করা হবে। বাকী ১৩ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার নির্মাণ করা হবে রিজিড পেভমেন্ট বা কংক্রিট দিয়ে। নির্মাণ করা হবে ২ স্পেনের ৭৫ দশমিক ২৪ মিটার দৈর্ঘের একটি সেতু। নতুন করে নির্মাণ করা হবে দুটি কালভার্ট। নির্মাণ করা হবে ২৯ দশমিক ৩৫২ বর্গমিটার সারফেস ড্রেন। এছাড়াও ১ লাখ ২২ হাজার ২শ বর্গ মিটার কংক্রিট স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ করা হবে। থাকবে একটি ইন্টারসেকশন ও ৬টি বাস-বে। এছাড়াও নির্মাণ করা হবে একটি টোল প্লাজা। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিতব্য প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে সম্পন্ন হবে। . . . . . . . . .