হাসিনার ‘বড় জ্বালা’ খালেদা : শাহ মোয়াজ্জেম
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ জানুয়ারি ২০১৬, ৭:১৯ অপরাহ্ণখালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য সবচেয়ে বড় জ্বালা বলে মনে করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ভাসানী মিলনায়তনে জাসাস ঢাকা মহানগর (উত্তর-দক্ষিণ) আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও সমন জারির প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘সরকারের চুরি-রাহাজানি-লুটপাটের প্রতিবাদ করায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা (রাষ্ট্রদ্রোহ) দেয়া হয়েছে। বেগম জিয়া তার (শেখ হাসিনা) জন্য সবচেয়ে বড় জ্বালা।’
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দেশেই ছিলেন, পাকিস্তানিদের হাতে তিনি বন্দি ছিলেন। সুতরাং তিনি মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তার কনট্রিবিউশন আছে।
তিনি আরও বলেন, খালেদার স্বামী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, যুদ্ধ করেছেন, সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আজকের প্রধানমন্ত্রীর বাবা (শেখ মুজিবুর রহমান) তাকে ‘বীরউত্তম’ খেতাব দিয়েছেন। আর আজকে আপনি (শেখ হাসিনা) তাকে বলেন ‘রাজাকার’।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ না হলেই আজকে রাজাকার। যুদ্ধের সময় আপনি কোথায় ছিলেন, কী করেছিলেন-আমি সব বলতে পারি, আমার কাছে খবর আছে। কিন্তু বলব না। চুরি-ডাকাতি-খুন-রাহাজানি-মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার আশার বারটা বাজিয়ে দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে শাহ মোয়াজ্জেম আরও বলেন, সারা দেশে সরকারের চুরি-রাহাজানি-লুটপাটের প্রতিবাদ করেন খালেদা জিয়া। তাই আপনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা (রাষ্ট্রদ্রোহ) দিয়েছেন। এটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। বেগম জিয়া তার বক্তব্যে রাষ্ট্রেরদ্রোহ কোন কথাটা বলেছেন?
মোয়াজ্জেম বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে উনি একটি কথা বলেছেন। এটি নিয়ে প্রশ্ন আছে, আছে তো। এবার আমার বিরুদ্ধে মামলা করবেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করবেন? রাষ্ট্রদ্রোহী বানান জানেন? রাষ্ট্রদ্রোহী কাকে বলে জানেন? আইন পড়েছেন?
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রাজনীতি স্বচ্ছভাবে চলবে। আজ হোক, কাল হোক মানুষের জয় হবেই। মানুষের জয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না। গুলি করে করে আপনি কতদিন ঠেকিয়ে রাখবেন। মানুষ মেরে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না। আপনিই বা কতদিন থাকবেন? মেঘে মেঘে বেলা কম হয় নাই।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি ও জনগণের বিরুদ্ধে পুলিশ ও প্রশাসন যন্ত্রকে আপনি যেভাবে লাগিয়ে দিয়েছেন, তা ঠিক নয়। প্রত্যেকটা অপরাধের জন্য আপনাকে একদিন জবাবদিহি করতে হবে। আপনার বিচার যে কত দিক দিয়ে হবে, তা আল্লাহই জানেন। তবে আপনার ওপর ন্যায়বিচার হোক, এটিই আমি চাই।
খালেদার বাসার গেটে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার সমন টাঙিয়ে দেয়া প্রসঙ্গে শাহ মোয়াজ্জেম বলেন, খালেদা জিয়া কি বাংলাদেশের অপরিচিত লোক? তাকে পাওয়া যায় না? তার বাসায় কোনো লোক নাই? একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গিয়ে তো তার আইনজীবীকেও এটি (সমন) দিয়ে আসতে পারতেন। কিন্তু সেটা না করে বেগম জিয়ার বাসার দেয়ালে সমন টাঙিয়ে দিয়ে আসা হলো।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে হাস্য-পরিহাস করার জন্য আপনারা কিছু বেয়াদবকে পাঠিয়েছেন, তারা গিয়ে ওটা বাড়ির দরজার মধ্যে লাগিয়ে দিয়ে এসেছে। এগুলো ঠিক নয়। এক মাঘে শীত যায় না। এভাবে দেশ চলবে না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে শেখ সাহেব নিজে কবর দিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগকে কবর দিয়ে একদলীয় বাকশাল করেছেন তিনি। আপনি বলেন, আমি বাবার স্বপ্ন সফল করব। আপনার বাবার স্বপ্ন তো ছিল বাকশাল। আপনার বাবার লাস্ট (শেষ) কথা তো বাকশাল। আপনি তো বাকশাল করছেন না। বাকশাল বাদ দিয়ে কবর থেকে আওয়ামী লীগ তুলে এনে আওয়ামী লীগ করছেন। আপনার বাবার লাস্ট উইল (শেষ ইচ্ছা) আপনি কামিয়াব করছেন না, সফল করছেন না।’
জাসাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন-বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ। . . . . . . . . .