খালেদার বাসার সামনে সরকার সমর্থকদের দুই ঘণ্টা অবস্থান
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫, ৬:২৬ অপরাহ্ণমুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ বক্তব্যের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন সরকার সমর্থকরা।
মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার বাসভবন অভিমুখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের মিছিল থেকে এই দাবি জানানো হয়।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্যের জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ক্ষমা চাওয়া এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বক্তব্য বন্ধে সংসদের আগামী অধিবেশনেই আইন করার দাবি জানানো হয়।
বেলা ১০টার দিকে খালেদা জিয়ার বাসভবনের দিকে মিছিলটি রওনা হলে গুলশান-২ গোলচত্বরে সেটি পুলিশ আটকে দেয়। এরপর নেতাকর্মীরা সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থানের পর সেখান থেকে আন্দোলনকারীরা চলে যান। এ সময় তারা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতেই হবে।’
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যেন কটূক্তি করা না যায়, এজন্য মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন করার কথাও বলেন শাহরিয়ার কবির।
এ সময় বীরাঙ্গনা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী বলেন, ‘খালেদা জিয়া যা, তা একটি কথায় প্রমাণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুদিনে তিনি কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন। তাকে আর নতুন করে কী চিনব? তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা উচিত।’
অবস্থান কর্মসূচিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার ও মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ প্রমুখ অংশ নেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সময় ৭১, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তান ও স্বজনের ব্যানারে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এই কর্মসূচি পালন করে।অবস্থান কর্মসূচি থেকে দু-একদিনের মধ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান বক্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার বাড়িতে যাওয়ার আগেই আন্দোলনকারীদের গুলশান-২ গোলচত্বরে আটকে দেওয়া হয়। এরপর সেখানে অবস্থান করে তারা চলে যান।
পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি ঘিরে মঙ্গলবার সকাল থেকে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন, কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ বিষয়ে গুলশান থানার ওসি সিরাজুল হক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের মন্তব্যের প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘেরাও কর্মসূচির কারণেই ওই এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।’
উল্লেখ্য, গুলশান-২ গোলচত্বরের পাশে ৭৯ নম্বরে খালেদা জিয়ার বাসভবন এবং ৮৬ নম্বরে তার রাজনৈতিক কার্যালয়।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেন অভিযোগে ক্ষমতাসীনরা তার বাড়ির সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
খালেদা জিয়া ওই সমাবেশে বলেন, ‘আজকে বলা হয় এত লাখ শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হত না।’
এরপর নিজের ফেসবুকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং তার একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
. . . . . . . . .