
একসময় ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে সমর্থকদের নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে গিয়ে দলবদল করার সংস্কৃতি ছিল ক্লাবগুলোর। সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে সেই রীতি মানা না হলেও বাফুফে ভবনে গিয়েই ক্লাব কর্মকর্তারা দলবদল সেরেছেন। তবে সেই সংস্কৃতিতে বদল এসেছে এবার। প্রথমবারের মতো ক্লাবগুলো অনলাইনে দলবদলের কাজ সেরেছে।
অনলাইনে দলবদল নিশ্চিতের প্রথম শর্ত, একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত করার পর ফিফার প্ল্যাটফর্ম ‘ফিফা কানেক্ট’-এ সেই খেলোয়াড়ের তথ্য জমা দিতে হবে ক্লাবকে। সেই প্রক্রিয়া শেষ করলেই কেবল কোনো খেলোয়াড়ের দলবদল বৈধতা পাবে। তথ্য জমার নিশ্চয়তাপত্র বাফুফেতে জমা দেওয়ারও নিয়ম আছে। এখানেই গড়বড় করে ফেলেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
বাফুফেতে ক্লাবটি ৩৫ খেলোয়াড়ের নাম জমা দিলেও ছয়জনের নাম ফিফা কানেক্টে রেজিস্ট্রেশন করাতে পারেনি। আইনের গ্যাঁড়াকলে পড়ে তাই নতুন মৌসুমের প্রথম পর্বে এই ছয় ফুটবলার বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে খেলতে পারবেন না। এরই মধ্যে ক্লাবটিকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটি।
সেই ছয় ফুটবলারের চারজন স্থানীয় এবং দুজন বিদেশি।
গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ, রক্ষণভাগের আবিদ আহমেদ ও নাবিল খন্দকার জয় এবং ফরোয়ার্ড এলিটা কিংসলের সঙ্গে দুই বিদেশি নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা ও প্যারাগুয়ের ফের্নান্দো জেসুস। প্যারাগুয়ের এই ডিফেন্ডার সর্বশেষ খেলেছেন সে দেশেরই একটি ক্লাবে। কিন্তু তাঁর অনাপত্তিপত্র চেয়ে ব্রাদার্স চিঠি দিয়েছে অন্য দেশের ফুটবল ফেডারেশনে। প্যারাগুয়েতে না পাঠিয়ে চিঠিটি উরুগুয়েতে পাঠানোয় সেই খেলোয়াড়ের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। খেলোয়াড়রা অবশ্য গতকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু জানতেন না।
এই প্রতিবেদকের কাছ থেকে জানতে পেরে গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ তো বিস্ময় নিয়ে বললেন, ‘এমন কিছু জানি না। ক্লাব থেকে আমাকে কিছু বলা হয়নি। এমনটা হলে তো খেলতে পারব না। চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল। ক্লাব থেকে এখনো কোনো টাকাও পাইনি।’ খেলোয়াড়দের দলবদল নিশ্চিত করার দায়িত্ব ক্লাবের। কিন্তু কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিতে এই ছয় ফুটবলার প্রথম পর্বে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। ব্রাদার্সের ম্যানেজার আমের খানের দাবি, ‘এটি একটি নতুন নিয়ম। প্রথমবার চালু করেছে। ফলে অনেক কিছুই গড়বড় হয়ে যেতে পারে। ভুল হতেই পারে।’ ব্রাদার্স এবার পাঁচ বিদেশিকে দলে নিয়েছে। কিন্তু প্রথম পর্বে পাচ্ছে না দুজনকে। তবে তাঁদের অভাব পূরণ করতে অবশ্য ‘স্থানীয়’ হিসেবে খেলবেন নেপালের চার ফুটবলার।